ডেস্ক রিপোর্ট : অগ্নিকাণ্ড, দুর্ঘটনা কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে জরুরি উদ্ধার সেবায় নিয়োজিত থাকেন তাঁরা। অন্যের প্রাণ বাঁচালেও নিজেরাই কি না ঝুঁকিতে আছেন! পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও সেই ভবনেই কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন জামালপুর সদর এবং সরিষাবাড়ী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মীরা। অথচ যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৪ সালে সদর ও সরিষাবাড়ী ফায়ার স্টেশনের ভবন এবং ব্যারাক স্থাপিত হয়। ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ জেলা প্রশাসনের কনডেমনেশন কমিটির সভায় এই ভবন ও ব্যারাক পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে নিলাম ডাকার মাধ্যমে এগুলো ভেঙে নতুন অবকাঠামো স্থাপনের প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু জামালপুর গণপূর্ত অধিদপ্তর একই বছর শুধু সদর ফায়ার স্টেশনের অবকাঠামো উন্নয়নের নকশাসহ খসড়া প্রকল্প গ্রহণ করে ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে পাঠায়। নিয়ম অনুসারে এই নকশা অনুমোদনের জন্য ঢাকায় স্থাপত্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। দীর্ঘদিন ফাইল চাপা পড়ে থাকায় গত বছরের ২৭ এপ্রিল স্থাপত্য অধিদপ্তর নকশা দেখে পুকুর ভরাটে অনাপত্তি জানিয়ে নতুন করে নকশা প্রণয়নের তাগিদ দেয় সংশ্লিষ্টদের। এ বছরের ১২ মার্চ নকশার ভেতরে কোথাও পুকুর ভরাটের বিষয় উল্লেখ নেই মর্মে স্থাপত্য অধিদপ্তরকে জানায় জামালপুর গণপূর্ত অধিদপ্তর। অন্যদিকে পরিত্যক্ত ঘোষিত সরিষাবাড়ী ফায়ার স্টেশনের বিষয়ে আজও কোনো প্রকল্প গৃহীত হয়নি।
সরেজমিনে গেলে সদর ফায়ার স্টেশনের ফায়ারম্যানদের দলনেতা আব্দুর রাজ্জাক এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘দেখেন ভবনের ছাদের কী অবস্থা। আমরা এখানে শুয়ে থাকি। ছাদের পলেস্তারা খসে আমাদের শরীরে পড়ে। বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছে। ফ্যানটা যেকোনো মুহূর্তে খুলে পড়তে পারে। আমরা শুধু শুনেই আসছি নতুন ভবন হবে।’ সরিষাবাড়ী ফায়ার স্টেশনের গাড়িচালক ফায়ারম্যান আলাউল কবীর তালুকদার বলেন, ‘আমরা হইলাম জনগণের সেবক। আমরাই যদি রিস্কে (ঝুঁকিতে) থাকি তো মানুষের সেবা করব কিভাবে?’
জামালপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক প্রাণনাথ সাহা বলেন, ‘এখানে আমরাই ঝুঁকির মধ্যে আছি। এই ভবনগুলো যেকোনো মুহূর্তে ধসে যেতে পারে। খুব কমমাত্রার ভূমিকম্পেও এখানে ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।’
জামালপুর গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. কায়সার কবীর বলেন, ‘স্থাপত্য অধিদপ্তরের আপত্তির জবাব দেওয়ার পর চার মাস হয়ে গেলেও তাদের নকশার অনুমোদন পাওয়া যায়নি। এ কারণে সদর ফায়ার স্টেশনের প্রস্তাবিত প্রকল্পটিও আমাদের প্রধান কার্যালয়ে আটকা পড়ে আছে।’ তবে সরিষাবাড়ী ফায়ার স্টেশন ভবন ও অন্য অবকাঠামো নির্মাণের বিষয়ে আপাতত কোনো নির্দেশনা নেই বলে জানান তিনি।
সূত্র : কালের কন্ঠ
আপনার মতামত লিখুন :