শিরোনাম
◈ সাভারে শো-রুমের স্টোররুমে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ২ ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ২৯ জুন, ২০১৮, ০৫:৫১ সকাল
আপডেট : ২৯ জুন, ২০১৮, ০৫:৫১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিএনপির সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠকে বসতে আগ্রহী ছোট দলগুলো

ডেস্ক রিপোর্ট : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে বিএনপির সঙ্গে আলাদা-আলাদা বৈঠকে বসার পক্ষে ছোট দলগুলো। প্রবীণ ও অভিজ্ঞ রাজনীতিকদের নেতৃত্বাধীন ৮ থেকে ১০টি দল ‘বৃহত্তর ঐক্য’ গড়ার পক্ষে। এক্ষেত্রে বরাবরের মতো জামায়াতে ইসলামকেই বাধা মনে করছেন কেউ কেউ। যদিও বিএনপি নেতারা মনে করছেন, জাতীয় ঐক্য বাস্তবায়িত হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সফল হওয়া সময়ের ব্যাপার।

ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিকল্প ধারা, নাগরিক ঐক্য, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জেএসডি, গণফোরামসহ কয়েকটি দল নির্বাচনি ঐক্য গড়ে তুলতে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। গত ২২ জুন চারদলীয় ঐক্য জোট যুক্তফ্রন্টের ঘরোয়া সভায় বিএনপির সঙ্গে আলাদা আলাদা আলোচনা শুরুর বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে কয়েকটি দল। তবে এই নিয়ে ঘরোয়াভাবে ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিএনপির সিনিয়র একাধিক নেতার সঙ্গে যুক্তফ্রন্টের অনেক নেতার আলোচনা হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে হয়নি।
যুক্তফ্রন্টের সমন্বয়ক ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বিএনপি যদি আমাদের সঙ্গে দলগতভাবে কথা বলতে চায়, তাহলে আমরা বলবো। এখন পর্যন্ত যেভাবে চলছে, তাতে দলীয়ভাবে বসা যেতে পারে। দলগতভাবে বসতে আমরা প্রস্তুত আছি।’

এরই মধ্যে ছোট দলগুলোর সিনিয়র নেতাদের বিশেষ কয়েকটি ঘটনা এই ঐক্যে নতুন সদ্ভাব সৃষ্টি তৈরি করেছে। খালেদার জিয়ার জামিনের ঘটনায় ড. কামাল হোসেনের বিবৃতি দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন সংযোজন বলে মনে করছেন রাজনীতিবিদরা। তিনি গত ১২ মার্চ তিনি গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন। সেখানে তার মন্তব্য ছিল—‘আজ হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর হলো। এই ধরনের কেসে নিয়মিত জামিন হওয়া দরকার। যদিও এই কেসের অর্ডার পেতে দুই একদিন বিলম্ব হয়েছে। আইনের শাসন ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ করে বিচার বিভাগ। স্বাধীন বিচার বিভাগের গুরুত্ব সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে। দেশ ও জনগণ উপকৃত হবে।’

১২ মার্চ খালেদা জিয়ার জামিনে স্বস্তি প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। এরইমধ্যে টাঙ্গাইলের বাসাইলে কাদের সিদ্দিকীর দলের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি। দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী  বলেন, ‘বিএনপি তাদের প্রার্থী প্রত্যাহার করেছে। তারা ডিক্লেয়ার করেছে আমাদের সমর্থনের ব্যাপারে। আমাদের প্রার্থীর পথসভায় স্থানীয় বিএনপির নেতারা যোগও দিয়েছেন।’

গত রমজানে মাহমুদুর রহমান মান্নার ইফতারে যোগ দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই ইফতারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি যাননি। বিএনপির কোনও-কোনও দায়িত্বশীল মনে করছেন, মূলত ওবায়দুল কাদের নাগরিক ঐক্যের ইফতারে না যাওয়ায় রাজনৈতিকভাবে মাহমুদুর রহমান মান্নার নতুন রাজনীতি শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মান্নার ইফতারে অংশ নিলে পরবর্তী রাজনীতি ভিন্ন হতো বলে মনে করেন তারা। এছাড়া রমজানে একাধিক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছেন বিকল্প ধারার সভাপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। দাবি করেছেন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারেরও।

বিএনপির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে, ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও কথা বলেছেন অনেকের সঙ্গে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার দুপুরেই কথা বলেছেন গণমাধ্যমে। তিনি বলেন, ‘আজকে এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে সবার একটা ঐক্য দরকার। সেই জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির কাজ চলছে। আমরা আশা করি, এতে সফল হওয়া যাবে। আর এতে যদি সফল হওয়া যায়, তাহলে ইনশাআল্লাহ আওয়ামী লীগ ৩ দিনও ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির কারণ আন্দোলন করার জন্যই। এটাই আন্দোলনের পথে নিয়ে যাবে।’

যদিও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেন, ‘ঐক্য সৃষ্টির আগে প্রথম শর্ত হচ্ছে, বিএনপিকে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। তাদের সঙ্গে আমাদের খোলাখুলি কথা হতে হবে। কারণ, আমরা আরেকটা আওয়ামী লীগ চাই না।’

আবদুল মালেক রতন আরও বলেন, ‘আর আওয়ামী লীগের পরিবর্তে বিএনপি ক্ষমতায় গেলেই গণতন্ত্র হবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। ফলে, দেশে যেন গণতন্ত্র আসে, লুটপাট বন্ধ হয়, রাজনৈতিক সহিংসতা না হয়, সেজন্য তারা কী প্রোগ্রাম নেবেন, এ নিয়ে কথাবার্তায় আসতে হবে। এক্ষেত্রে তারা আলাদাভাবে বসে সবাইকে নিয়ে বসতে পারে। আল্টিমেটলি যুক্তফ্রন্টের সঙ্গেই বসতে হবে।’
বিএনপির সঙ্গে ঐক্য প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে জামায়াতের বাঁধাটি সবচেয়ে বড় বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে ছোট দলগুলোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী এ দলটিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আপত্তি আছে। দুই বছর আগে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কাদের সিদ্দিকী বলেছিলেন, তিনি জামায়াতের সঙ্গে জান্নাতে যেতেও রাজি নন।

গত রমজানে বিএনপির ইফতারে জামায়াতের নেতা মঞ্চে থাকায় আ স ম আবদুর রব ও মাহমুদুর রহমান মান্না মঞ্চে ওঠেননি। ফলে, আগামী দিনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া সাফল্যের মাঝখানে বড় প্রশ্নটি জামায়াতকে নিয়ে। এ বিষয়ে এখনও আলোচনা না হলেও ইস্যুটি নিয়েই বিএনপিকে সবচেয়ে বড় বাধায় পড়তে হতে পারে, এমন মন্তব্য স্বয়ং বিএনপি ও ছোট দলগুলোর নেতাদের।
তবে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘ঐক্য প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হতে জামায়াত কোনও বাধা নয়। তারা যদি ২০ দলীয় জোটে আসতে চায়, তাহলে কোনও সমস্যা নেই। আমরা মনে করি না, আমরা বাধা।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন প্রবীণ সদস্য বলেন, ‘ঐক্য প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে টেবিলে গড়ালে এ বিষয়টি বোঝা যাবে। জামায়াত বাদ পড়বে, নাকি অন্য কোনও কৌশল প্রণীত হবে, এটা এখনই বলা যাবে না। সবাই ইতিবাচক, এটাই বড় কথা।’ সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়