শিরোনাম
◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ২৮ জুন, ২০১৮, ০৭:৪৭ সকাল
আপডেট : ২৮ জুন, ২০১৮, ০৭:৪৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যেসব কারণে জয়ী হলেন জাহাঙ্গীর

নিউজ ডেস্ক: ঢাকার পাশেই গাজীপুর সিটি করপোরেশন। ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি টঙ্গী ও গাজীপুর পৌর এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় গাজীপুর সিটি করপোরেশন। এর ঠিক পাঁচ মাস পর ২০১৩ সালের ৬ জুলাই এই সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ— নির্বাচনের পর গত পাঁচ বছরে গাজীপুরের কোনও উন্নয়ন হয়নি। এ সময়ে আটকে ছিল এখানকার বিভিন্ন উন্নয়মূলক কাজ। এবারের নির্বাচনে গাজীপুরের আগামী দিনের উন্নয়নকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন ভোটাররা। আর সে কারণেই সরকার দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে বেছে নিয়েছেন তারা।

গাজীপুর সিটির স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, জেলা থেকে  সিটি ঘোষণার পর তারা গাজীপুরের উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু গত পাঁচ বছরে গাজীপুরের কোনও উন্নয়ন হয়নি। বর্তমান সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উন্নয়ন করছে ঠিকই, কিন্তু গাজীপুরবাসী এই সিটির এখনও উন্নয়নের মুখ দেখেনি।

ভোটাররা বলছেন, মেয়র এম এ মান্নান গাজীপুর সিটির উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি বিএনপি করেন। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থী ছিলেন হাসান উদ্দিন সরকার। তাকে ভোট দিলে মান্নানের মতোই তিনিও গাজীপুরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারতেন বলে মনে হয় না। অন্যদিকে,অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম বয়সে তরুণ, উদ্যমী, জনপ্রিয় এবং সরকার দলের প্রার্থী। তার ওপরে ভরসা রাখা যায়। মূলত এসব কারণেই ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে তিনি জয়ী হয়েছেন বলে মনে করেন  স্থানীয়রা।

গাজীপুরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কলমেশ্বর এলাকার বাসিন্দা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ব্যক্তি হিসেবে জাহাঙ্গীর আলম একজন ভালো মানুষ। এছাড়া, তিনি সরকার দলীয় লোক। তিনি মেয়র হওয়া মানে গাজীপুরে কিছু উন্নয়নমূলক কাজ হবে বলে আমি মনে করি। এবারের সিটি নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলমের জেতার পছেনে এটি একটি বড় কারণ।’

জাহাঙ্গীর আলম  নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনেক আগে থেকেই গাজীপুরে ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে আসছিলেন। স্থানীয়রা জানান, টঙ্গী থেকে মিরের বাজার, গাজীপুর রেল গেট, চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া বাইপাস, বোর্ড বাজার, গাজীপুরা, চেরাগ আলী, কোমাবাড়ি, কাশিমপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কে ব্যাপক যানজট হয়ে থাকে। এই যানজট দূর করতে জাহাঙ্গীর আলম নিজের উদ্যোগে ৩০০ কমিউনিটি পুলিশ নিয়োগ দেন। তারা প্রশাসন ও বর্তমান কমিউনিটি পুলিশিং এর সঙ্গে থেকে গাজীপুরে যানজট মুক্ত করতে কাজ করছেন। এদের বেতনের টাকাও দিতেন জাহাঙ্গীর আলম নিজেই।

ভাসমান ও বিভিন্ন পেশাজীবী ভোটাররা বলছেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম বয়সে তরুণ। উন্নয়নের জন্য তরুণরা ক্ষমতায় থাকলে দেশ দ্রুত ত্বরান্বিত হয়।

টঙ্গীর বাসিন্দা রিমন মোড়ল বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুরের একজন প্রিয় মুখ। তাই মানুষ তার জনপ্রিয়তার কারণেই তাকে ভোট দিয়েছে। গত  নির্বাচনে বিপুল ভোটে পাস করে মেয়র হয়েছিলেন এম এ মান্নান। তবে সেই নির্বাচনে বেশির ভাগ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। কিন্তু এম এ মান্নান কোনও উন্নয়ন করতে পারেননি। সে কারণে গাজীপুরের মানুষ এবার নতুন মেয়র হিসেবে জাহাঙ্গীর আলমকে ভোট দিয়েছে।’

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের প্রচারণায় দেখা গেছে, ৫৭টি ওয়ার্ডের সবগুলোতেই জাহাঙ্গীর আলমের প্রচারণা ছিল রমরমা। সর্বস্তরের ভোটাররা যে জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন দিচ্ছেন, প্রচার-প্রচারণায়ই সেটি বোঝা যাচ্ছিল।

অন্যদিকে, নির্বাচনের দিন বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, অনেক কেন্দ্রেই ধানের শীষ প্রতীকের পোলিং এজেন্ট ছিল না। কোনও কোনও কেন্দ্রে তাদের দেখা মিললেও তারা সংখ্যায় ছিল কম। বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন পরিচালনায় অব্যবস্থাপনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। এই ধরনের দুর্বলতা জাহাঙ্গীরের পক্ষে ছিল না। ছোটখাটো এ বিষয়গুলোও জাহাঙ্গীরের জয়কে নিশ্চিত করেছে।

প্রসঙ্গত,গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম  (নৌকা প্রতীক) স্থগিত হওয়া ৯টি কেন্দ্র বাদে বাকি ৪১৬ কেন্দ্রে চার লাখ ১০ ভোট পেয়েছেন জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার (ধানের শীষ) পেয়েছেন এক লাখ ৯৭ হাজার ৬১১ ভোট। বেসরকারিভাবে জাহাঙ্গীর আলমকে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৬ জুন) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। বিকাল চারটার পর শুরু হয় ভোট গণনা। বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ ও অনিয়মের কারণে ৯টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন রিটার্নিং অফিসার।

গাজীপুরে এবার মোট ভোটার ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন ও নারী ভোটার ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। এ সিটিতে এবার নতুন ভোটার এক লাখ ১১ হাজার। এছাড়া, শ্রমিক ভোটার দুই লাখের বেশি। সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডের ৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৩৭টিকে ঝুঁকিপূর্ণ ও ৮৮টিকে সাধারণ চিহ্নিত করা হয়। সূত্র: বাংলা  ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়