ড. মীজানুর রহমান : মাওলানা ভাসানী এবং প্রগতিশীল ধারার যারা ছিলেন আওয়ামী মুসলিম লীগের মধ্যে, পাকিস্তান হওয়ার সাথে সাথে তারা যখন বুঝতে পারলো এই পাকিস্তান দিয়ে এই এলাকার মানুষের স্বার্থ রক্ষা হবে না, তার জন্যই তারা আওয়ামী লীগ গঠন করলেন। মাওলানা আকরাম খাঁ অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশ তৈরি করার জন্যই আওয়ামী লীগ করেছেন। পাকিস্তান হওয়ার পরপরই ‘মুসলিম’টা বাদ দিলে যে ধরণের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখিন হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো, তা তারা আঁচ করতে পেরেছিলেন।
তখন পাকিস্তান এবং ইসলাম ছিলো। সেই জন্য এটি প্রথমে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। আর আওয়ামী লীগ ১৯৫৫ সালে এসে মুসলিম শব্দটা বাদ দিয়ে দেয়। কারণ, এটি অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে পরিপূর্ণতা পায় ১৯৫৫ সালে। পরবর্তীতে পাকিস্তানের শোষণমুক্ত এবং নির্যাতনমুক্ত একটা জাতি গঠনের লক্ষে আন্দোলন সংগ্রাম গুলোর নেতৃত্বে ছিলো আওয়ামীলীগ। এ আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে ৬ দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং ’৭০ এর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলের মানুষের একটি স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে, আন্দোলন সংগ্রাম করে স্বাধীনতা অর্জন করে, যা আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই অর্জিত হয়।
আমাদের যা কিছু অর্জন, প্রগতিশীল চিন্তা চেতনা থেকে শুরু করে, আমাদের জাতি গঠনের যে ইতিবাচক সকল ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের ভূমিকা রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহি দল। আবার কখনো কখনো তাদের নীতি আদর্শের সাথে সাময়িকভাবে আপস করা হয় এটি কিন্তু আমি বলবো না। হেফাযতে ইসলাম বা ইসলামী আন্দোলনের সাথে সাময়িকভাবে কৌশলগত কারণে সাময়িক আপোস করেছে। কিন্তু নীতির দিক থেকে আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়ীক চেতনাকে ধারণ করে, যা বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র রাজনৈতিক দল।
পরিচিতি : ভিসি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়/মতামত গ্রহণ : তাওসিফ মাইমুন/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :