মতিনুজ্জামান মিটু : কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ অনুবিভাগ) সৈয়দ আহম্মদ বলেছেন, মৃত্তিকা তথ্যভান্ডারকে যুগোপযোগী এবং সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতে একটি কমন প্লাটফরম দরকার। মঙ্গলবার(২৬জুন) রাজধানীর মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউট (এসআরডিআই) এর প্রশিক্ষণ হলে এসআরডিআই বিভাগীয় কারিগরি কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই প্লাটফরমে বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, এআইএস, সম্প্রসারণসহ সকল সেক্টরকে একত্রিত করতে হবে। পুরানোদিনের সেই লাঙ্গলকে ফিরিয়ে এনে এবং রাসায়নিক সারের যত্রতত্র ব্যবহার রোধ করে এবং ক্রপ ডাইভারসিফিকেশন করে মাটি ও পরিবেশ দূষণ রোধ করতে হবে। এজন্য এসআরডিআইকে আরো জোর পদক্ষেপ নিয়ে সরকারের কৃষি বান্ধব নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। যাতে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠন করতে পারি।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সদস্য পরিচালক( প্রশাসন ও অর্থ) ড. মো. আব্দুস সাত্তার ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিকল্পণা, প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং আইসিটি উইং এর পরিচালক মীর নূরুল আলম। সভাপতিত্ব করেন এসআরডিআই এর পরিচালক বিধান কুমার ভান্ডার। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তৈয়বুর রহমান।
এদিকে গতপরশু কৃষি মন্ত্রণালয়ের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের ‘মৃত্তিকা গবেষণা এবং গবেষণা সুবিধা জোরদারকরণ (এসআরএসআরএফ)’ শীর্ষক প্রকল্পের দিনব্যাপী ইনসেপশন ওয়ার্কশপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আহম্মদ বলেন, কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানীদের ব্যাপক অর্জন বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনা সরকারের আমলেই হয়েছে। মৃত্তিকা বিজ্ঞানীদের প্রাপ্ত তথ্য দেশের মানুষের দোর গোড়ায় পৌছে দিতে হবে। ফলের ফসলে এদেশ ভরে দিতে হবে। বাড়ির আঙ্গিনায় লাগাতে হবে ফলের গাছ। গোলাপসহ ফুল চাষেও নজর দিতে হবে এবং সয়েল প্রোফাইলকে আপগ্রেড করতে হবে। মাটির ওপরে চাপ কমাতে প্রাকৃতিক লাঙ্গলে ফিরে আসা যায় কিনা তা ভাবতে হবে।
রাজধানীর আ. ক. মু গিয়াসউদ্দিন মিলকী অডিটরিয়ামের এ্ ওয়ার্কশপে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ ও কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক কৃষিবিদ অমিতাভ দাস। সভাপতির বক্তব্য দেন, এসআরডিআই এর পরিচালক বিধান কুমার ভান্ডার। স্বাগত বক্তব্য দেন ‘মৃত্তিকা গবেষণা এবং গবেষণা সুবিধা জোরদারকরণ (এসআরএসআরএফ)’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. আবদুল বারী। কারিগরি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন, অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাসেম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসআরডিআই এর সাবেক পিএসও মো. নাজমুল হাসান। এ প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন, এসআরডিআই এর সাবেক পরিচালক মাইনুল আহসান এবং সিএসও জালাল উদ্দিন মো. শোয়েব, ড. সিরাজুল হক, ড. মো. সিরাজুল করিম প্রমুখ।
আবুল কালাম আযাদ বলেন, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট মৃত্তিকা গবেষণায় নিয়োজিত একটি ডেডিকেটেড প্রতিষ্ঠান হিসেবে কৃষি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। কৃষি ক্ষেত্রে ৩০টি এইজেড-এ ভাগ করে কৃষি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে যার মূল ভিত্তি মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট এর মৃত্তিকা সংক্রান্ত জরিপ কার্যক্রম। বিভিন্ন অঞ্চলের মাটির পরীক্ষা করে পুষ্টি উপদানের ঘাটতি সংক্রান্ত তথ্য জেনে সে অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া এবং বায়ু মন্ডলের নাইট্রোজেন ফিক্স করে গাছের ব্যবহার উপযোগী করার বিষয়ে গবেষণা পদ্ধতি বের করা দরকার বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিশেষ অতিথি কৃষিবিদ অমিতাভ দাস বলেন, এসআরডিআই এর তৈরী উপজেলা নির্দেশিকা কৃষি ক্ষেত্রে একটি প্লাটফরম তৈরী করেছে। মাটির পুষ্টি উপদানের ঘাটতি সংক্রান্ত গবেষণা আরও জোরদার করা এবং উদ্ভাবিত প্রযুক্তি কৃষকের দোরগোড়ায় পৌছে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার জোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :