শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ২৬ জুন, ২০১৮, ০১:১২ রাত
আপডেট : ২৬ জুন, ২০১৮, ০১:১২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জয়-পরাজয়ের বড় ফ্যাক্টর চা শ্রমিকরা

ডেস্ক রিপোর্ট: বছরের শেষপ্রান্তে জাতীয় নির্বাচন। এরই মধ্যে সারা দেশে বইছে ভোটের হাওয়া। দলগুলোতে প্রস্তুতির তোড়জোড়। সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ তুঙ্গে। নির্বাচনী এলাকায় ঘন ঘন ছুটছেন বিভিন্ন দলের হেভিওয়েট নেতারাও। কেমন তাদের প্রস্তুতি, মাঠের অবস্থাইবা কি? এ নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনে আওয়ামী লীগের ৯, বিএনপির ৪ ও জাতীয় পার্টির (এরশাদ) ৩ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে এলাকায় সভা-সমাবেশ, মতবিনিময়, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ, এলাকাবাসীর সঙ্গে কুশল বিনিময়সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ অক্ষুন্ন রেখে চলেছেন। এ আসনে ১১টি চা বাগান রয়েছে। চা শ্রমিকদের বিশ্বাস জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের ভোটাধিকার দিয়েছেন। তাই জাতীয় নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নৌকা মার্কা ছাড়া তাদের কখনোই ভোট দেয়ার নজির নেই। এ জন্য জাতীয় নির্বাচনে এখানে জয়-পরাজয়ের বড় ফ্যাক্টর চা শ্রমিকরা।

এ আসনে ৪ লাখ ২২ হাজার ৬২৩ জন ভোটারের মধ্যে মাধবপুর উপজেলায় ২ লাখ ১৯ হাজার ২৯২ এবং চুনারুঘাট উপজেলায় ২ লাখ ৩ হাজার ৩২১ জন। এর মধ্যে গত জানুয়ারিতে নতুন ভোটার হয়েছেন ৯ হাজার ৮২৩ জন। নির্বাচনী বৈতরণী পেরোনোর ক্ষেত্রে মাধবপুর-চুনারুঘাট আসনে ব্যক্তি ইমেজের চেয়ে নৌকা প্রতীক অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছে। এ জন্য ভোটযুদ্ধের আগেই দলীয় মনোনয়ন যুদ্ধে নেমে পড়েন অনেকেই।

স্বাধীনতা-উত্তর ১৯৭৯ ও ১৯৮৬ সালের নির্বাচন ছাড়া সব নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রবীণ রাজনীতিবিদ এডভোকেট এনামুল হক মোস্তফা শহীদ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা প্রয়াত এমপি মোস্তফা আলীর ছেলে হাইকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মাহবুব আলী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি পেশাগত কারণে ঢাকায় অবস্থান করলেও এলাকার নেতাকর্মীসহ জনগণের পাশে থেকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বাবার সুনামকে অক্ষুন্ন রেখে দলীয় কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত রয়েছেন। তিনি প্রতিনিয়ত এলাকায় সভা-সমাবেশসহ গণসংযোগ করে যাচ্ছেন।

তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি হওয়ায় দলটির মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে আছেন। তাই আওয়ামী লীগ থেকে এ আসনে কে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন তা বলা মুশকিল। তবে সংসদ সদস্য এডভোকেট মাহবুব আলী আসন্ন সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদী। তার সততা নিয়ে একটি মহল থেকে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। তিনি এর জোর প্রতিবাদ করেছেন। তিনি জানান, এ ষড়যন্ত্র তার বিরুদ্ধে নয়। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার জন্য একটি কুচক্রী মহল এ ষড়যন্ত্র করছে, যা নেত্রী অবগত রয়েছেন। তিনি আরো জানান, দলীয় মনোনয়ন দেয়ার পর দলের স্থানীয় সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে বলে তার বিশ্বাস।

এদিকে ওই আসনে বিএনপির দলীয় কার্যক্রম চোখে পড়ার মতো নয়। মনোনয়ন পেতে নেতারা কেন্দ্রে যে যার মতো করে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি থেকে এ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে বিশিষ্ট শিল্পপতি জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি সৈয়দ মো. ফয়সল এগিয়ে রয়েছেন বলে এলাকাবাসী ধারণা করছেন। দলীয় সূত্রে প্রকাশ, বয়সজনিত কারণে তাকে বাদ দিয়ে ছোট ভাই বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা সৈয়দ মো. শাহজাহানকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা যেতে পারে। সৈয়দ মো. শাহজাহানের এলাকায় যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন- এডভোকেট মাহবুব আলী এমপি, তরুণ রাজনৈতিক নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন অসীম, মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মুক্তিযোদ্ধা শাহ মো. মুসলিম, হবিগঞ্জের সাবেক পিপি ও চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এড. আকবর হোসেন জিতু, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও সাবেক এমপি প্রয়াত এনামুল হক মোস্তফা শহীদের ছেলে নিজামুল হক রানা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আরিফুল হাই রাজিব, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইদুল হক সুমন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মো. মিছির ও আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য এবং হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র শহীদ উদ্দিন চৌধুরী।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা বিএনপি সভাপতি সাবেক এমপি শিল্পপতি সৈয়দ মো. ফয়সল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী সাবেক নারী এমপি শাম্মী আক্তার শিফা, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি হাইকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আমিনুল ইসলাম। তারা নির্বাচনকে সামনে রেখে সভা-সমাবেশ, গণসংযোগসহ বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ফেসবুকের মাধ্যমে নিজ নিজ নেতার পক্ষে জনগণের সমর্থন ও দোয়া কামনা করে যাচ্ছেন। আর নেতারা নিয়মিত যোগাযোগ করছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে। এর মধ্যে সৈয়দ মো. ফয়সল ও সৈয়দ মো. শাহজাহান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ মো. কায়সারের সহোদর হওয়ায় এ নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে।

এ ছাড়া জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শিল্পপতি আতিকুর রহমান ওই আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মো. এরশাদের কাছে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বলে এলাকায় শোনা যাচ্ছে।

দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ আসনের এমপি ছিলেন কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরী। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এমপি হন সৈয়দ মো. ফয়সল। পরে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে ছোট ভাই ফয়সলকে পরাজিত করে জাতীয় পার্টির সৈয়দ মো. কায়সার এ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে এরশাদ তাকে কৃষি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে ৫ বার এমপি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত এডভোকেট এনামুল হক মোস্তফা শহীদ মাস্টার। সূত্র: ভোরের কাগজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়