আসিফুজ্জামান পৃথিল : ঝাড়খন্ডের গভীর অরণ্যে একটি প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে ভারত। এজন্য দেশটির ব্যাংকগুলোকে গুনতে হচ্ছে ৩৮ বিলিয়ন ডলারের খেলাপি ঋণের বোঝা।
ঝাড়খন্ড রাজ্যের এই প্রকল্পের জন্য ২০০৭ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতৃত্বাধীন একটি ব্যাংক গ্রুপ ৭০ কোটি ডলার ঋণ দেবার সিদ্ধান্ত নেয়। এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে কয়লা এবং পানির সরবারহ থাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে আগ্রহ দেখায় ব্যাংকগুলো। কেন্দ্র পর্যন্ত একটি রেল লাইন স্থাপনের পরিকল্পনাও করা হয়েছিলো। প্রথম পর্যায়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ১০৮০ মেগাওয়াট। তবে উৎপাদন শুরুতে ব্যার্থ হয়েছে কোম্পানিটি। পরবর্তীতে বিশেষ খেলাপি ঋণের কারণে বিক্র হয়ে যায় কোম্পানিটি। ব্যাংক অফ আমেরিকা মেরিল লেঞ্চ এর মতে এর ফলে স্থানীয় ব্যাংকগুলো ৩৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হবে। এটি ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় দেনা। এর আগে দেশটির ইস্পাত খাতে ব্যাংকগুলোকে ৯ বিলিয়ন ডলারের লোকসান গুনতে হয়েছিলো।
২০১৫ মালে নির্মান বন্ধের ২ বছর পর ঝাড়খন্ডের কেন্দ্রটি কিনে নেয় অ্যাসেট রিকন্সট্রাকশন কোম্পানি অফ ইন্ডিয়া। কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী ভিনায়ক বাহুগুনা বলেন, ‘এটি দেশের বৃহত্তম খেলাপি ঋণের ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো এখনও ইস্পাত খাতের ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি। আর এখন তাদের জন্য শক্তিখাত নতুন মাথাব্যাথা হিসেবে দেখা দিয়েছে।’
খেলাপি ঋণ থেকে মুক্ত হবার জন্য বেশ কিছুদিন থেকেই বড় রকমের চাপের মুখে রয়েছে ভারতের ব্যাংকগুলো। তাই স্বাভাবিকভাবেই তারা আর এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেনা। এরফলে আগে থেকেই ঋণ সমস্যায় জর্জরিত দেশটির বিদ্যুৎ খাত পড়েছে নতুন শঙ্কায়। শতাধিক কোটি জনসংখ্যার এই দেশটিতে বিদ্যুতের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। লোডশেডিং দেশটিতে নিয়মিত ঘটনা। এরকম বড় প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই খাতে শঙ্কা আরো বেড়ে গেছে। - ইকোনমিক টাইমস
আপনার মতামত লিখুন :