শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ২৪ জুন, ২০১৮, ০৭:১৯ সকাল
আপডেট : ২৪ জুন, ২০১৮, ০৭:১৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গণমাধ্যম যা একদিনে পারে, পুলিশ তা চার দিনে পারে না?

সজিব খান: গত মঙ্গলবার ১৯ জুন রাতে ফাঁকা রাস্তায় সেলিম বেপারি নামে এক ব্যাক্তিকে চাপা পালিয়ে গিয়েছিল নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর স্ত্রীর মালিকানাধীন গাড়িটি। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অন্তত দুজন বলেছেন, সাংসদের ছেলে শাবাব চৌধুরীই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন।  তবে গাড়িটির মালিক কে, পুলিশ এখনও তা নিশ্চিত হতে পেরেছে কি না, তা পরিষ্কার করে বলেনি। তারা কিছুটা অস্বচ্ছভাবে বলেছে, তথ্য পেয়েছে, অনুসন্ধান চলছে।

অভিযোগ থাকার পরেও সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে শাবাবকে এখনো গ্রেফতার করেনি পুলিশ। ধরা- ছোয়ার বাইরেই রয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে নিহতের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা দিয়ে ঝামেলা মেটানোর চেষ্টায় রয়েছে এমপির পরিবার। এছাড়া এমপির পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে গাড়ি শাবাব চালাচ্ছিলেন না। তাদের গাড়ি চালক আলম গাড়িটি চালিয়েছিলেন।

এদিকে ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক মতামতধর্মী সংবাদে ঘটনাটির তদন্তে পুলিশের দায়িত্ব পালন নিয়ে বেশিকিছু প্রশ্ন তুলেছেন সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক গোলাম মোর্তোজা।

তিবি বলেছেন, চার দিনেও ঘাতক গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৩-৭৬৫৫ নম্বর) জব্দ করেনি পুলিশ। বিআরটিএ গণমাধ্যমকে যা নিশ্চিত করেছে ২০ জুন। আর নিশ্চিত হতে না পারায়, পুলিশ এখনও গাড়িটি জব্দ করেনি। চার দিনেও পুলিশ বিআরটিএ থেকে গাড়ির মালিকের নাম বের করেছে বা সেই অনুযায়ী তদন্ত করছে, তা পরিষ্কার করে বলেনি। কারণ কী? গণমাধ্যম যা একদিনে পারে, পুলিশ তা চার দিনে পারে না?

পুলিশ বলছে গাড়ি নয়, চালককে খুঁজছে তারা। সাধারণভাবে জানি, মামলা বা তদন্তের ক্ষেত্রে চালক যেমন গুরুত্বপূর্ণ, আলামত হিসেবে দুর্ঘটনা ঘটানো গাড়িও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। গাড়িটি এর মধ্যে মেরামত করে ফেলা হলে, আলামত নষ্ট হবে। প্রমাণ করা দুরূহ হয়ে যাবে।

ন্যাম ভবনের গেটে সিসিটিভি সব সময় সক্রিয় থাকে। নিরাপত্তার ব্যবস্থা বেশ কঠোর। দুর্ঘটনা ঘটানো গাড়িটি যখন ন্যাম ভবনের গেট দিয়ে প্রবেশ করে, তখন চালকের আসনে কে ছিলেন তা স্পষ্ট দেখা যাওয়ার কথা সিসিটিভি ফুটেজে। সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউ ও তার আশেপাশের এলাকাতেও সিসিটিভি আছে।

গাড়িটি সেলিম ব্যাপারীকে চাপা দিয়ে দ্রুত গতিতে চলে যাওয়ার সময় তার পেছনে পেছনে একজন মোটরসাইকেল চালক ও অপর আরেকজন গাড়ি নিয়েও অনুসরণ করে। মোটরসাইকেল চালক এবং গাড়ি চালকের ভাষ্য অনুযায়ী, গাড়ি থেকে যিনি নেমেছেন তাকে অন্যরা ‘শাবাব’ বলে ডেকেছেন। শাবাব গাড়ি থেকে নেমে বলেছেন, ‘এটা আমার এলাকা। কে কে আসবি, আয়।’

মোটরসাইকেল চালক জানিয়েছেন, এই দৃশ্য তিনি মোবাইলে ধারণ করেছিলেন। শাবাব সেখানে থাকা অন্যদের সঙ্গে নিয়ে, জোর করে ভয় দেখিয়ে মুছে দিয়েছেন। চর-ঘুষিও মেরেছেন তাকে। মুখ বন্ধ রাখার শর্তে, অর্থও দিতে চেয়েছেন।

পেছনে যাওয়া মোটরসাইকেল চালক ও গাড়ি চালক সত্য বলছেন কিনা, তা যাচাইয়ের জন্যে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ সিসিটিভি ফুটেজ। কিল-ঘুষি, মোবাইলের দৃশ্য মুছে ফেলা, শাবাবসহ অন্যদের দৃশ্য, সবই সিসিটিভি ফুটেজে থাকার কথা।

এদিকে দুর্ঘটনার চার দিন পরও পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে কি না,তা নিয়ে বিভ্রান্তি দূর হচ্ছে না। একটি সূত্র বলছে, পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। সংগ্রহ করেনি, এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিষয়ক সময়ক্ষেপণ বা নীরবতার কারণ কী?

অডি গাড়ি ঢাকা শহরে খুব বেশি নেই। প্রচলিত গাড়ির চেয়ে অডি বেশ দামি গাড়ি। তদন্তের গতি- প্রকৃতি অনুযায়ী ধারণা করা যায়, গাড়ির মালিকানাও নিশ্চিত হওয়া যেত না, যদি না নাম্বার প্লেট পাওয়া যেত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই আশঙ্কাও সামনে আসছে, সিসিটিভি ফুটেজ আদৌ পাওয়া যাবে কি না! পাওয়া যাওয়া ফুটেজে ওই কয়েক মিনিটের দৃশ্য থাকবে কি না। আদৌ ওই কয়েক মিনিট রেকর্ড হয়েছে কি না!

‘চালক দুর্ঘটনার পর কিছু দূর গিয়ে, গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে গেছেন। তারপর শাবাব গাড়ি চালিয়ে এসেছেন’- এমন একটি গল্পের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ‘শাবাব বাড়িতেই ছিল’- মা কামরুন্নাহার শিউলির এমন বক্তব্যের পর, গল্পটি ভিত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা কম।

তবে অর্থ- ক্ষমতার প্রভাব থাকলে তো সবই সম্ভব। বিচার- তদন্ত কী বা কেমন হবে, সেলিম ব্যাপারীর পরিবার সেই ধারণা পেয়ে গেছে। একমাত্র উপার্জনক্ষম অভিভাবককে হারিয়ে, পরিবারটি তদন্ত- বিচারের পেছনে ছুটবে, না আপোষ প্রস্তাবে রাজি হবে? ধারণা করা খুব বেশি কষ্টকর নয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়