নূর মাজিদ: শুরুটা তার জন্যে খুব ব্যতিক্রম ছিলোনা। আর দশজন সংগ্রামী, উদ্যমী মানুষের মতোই ছিলো সেই গল্প। তবে কেউ হয়তো ভাবতেও পারেননি মাত্র কয়েক বছর আগেই উড়িষ্যার রাস্তায় মোবাইলের সিমকার্ড বিক্রেতা রিতেশ আগারয়াল আজ ভারতের অন্যতম শীর্ষ তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে স্থান করে নেবেন। মাত্র ২২ বছর বয়সেই হয়ে উঠবেন এক মিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী।
তবে শুধু অর্থের অঙ্কেই নয়, রিতেশ প্রমাণ করেছেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চাইতেও বাস্তব বুদ্ধি এবং সময়োচিত ব্যবসায়িক উদ্যোগই হতে পারে সাফল্যের চাবিকাঠি। তার প্রতিষ্ঠিত ‘ওয়ো’ রুমস সার্ভিস’ নামক অনলাইনে সস্তায় বা বাজেটের ভেতর হোটেল অনুসন্ধানকারী সেবা আজ ভারতের অন্যতম প্রধান জনপ্রিয় সাইট। অথচ স্কুলের পাঠ চুকে যাবার পর তার সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষারও সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। বিশ্বখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিন জানায়, এই মুহূর্তে ভারতজুড়ে ‘ওয়ো রুমস’ ১৫২টি শহরে ২ হাজার ২০০ হোটেলের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক স্থাপন করেছে। সংস্থাটিতে বর্তমানে কর্মরত আছেন ১ হাজার ৫০০ এর অধিক কর্মী। এর মাসিক মুনাফা প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কোম্পানিটির আরো ব্যবসায়িক সাফল্যের সম্ভাবনায় বর্তমানে ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা সেখানে ১২৫ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করেছেন।
তবে শুধু ভারতেই তার সাফল্য এখন আর সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্বের সবচাইতে বড় প্রযুক্তি খাতের বিনিয়োগকারী বলে পরিচিত জাপানের সফট ব্যাংকের চেয়ারম্যান মায়াবিশি সন এপ্রিল মাসে ভারত সফরে এসে জানান, ভারতে তাদের ১০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনা রয়েছে। এই বিনিয়োগের মধ্যে সিংহভাগ পাবে ভারতের সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্যোক্তাগোষ্ঠী। যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন রিতেশ আগারওয়াল। এসময় তিনি উদ্ভাবনী শক্তি এবং উদ্যোমের জন্য ‘ওয়ো রুমস’ এবং রিতেশ আগারওয়ালের ভূয়সী প্রশংসাও করেন।
সফটব্যাংকের এই বিনিয়োগ ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংবাদপত্রে জায়গা করে নিয়েছে। এর ফলে যে আরো বিদেশী উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসবেন তা বলাই বাহুল্য। নিজের সেবার মান ও ব্যবসায়িক সততাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেন রিতেশ। আর এভাবেই উড়িষ্যার নকশাল উপদ্রুত এলাকায় জন্ম নেয়া এক তরুণ আজ ভারতের অন্যতম বৃহৎ এক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইকনোমিক টাইমস
আপনার মতামত লিখুন :