ডেস্ক রিপোর্ট : রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারে বেপরোয়া গতিতে আসা এক ব্যক্তিগত গাড়ির ধাক্কায় সেলিম ব্যাপারী নামে একজন নিহত হন। অভিযোগ উঠেছে, ১৯ জুন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ধাক্কা দেওয়া গাড়িটি শাবাব চৌধুরীর। নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী এবং তার স্ত্রী নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুন নাহার শিউলীর সন্তান শাবাব চৌধুরী।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা মেট্রো ঘ ১৩-৭৬৫৫ নম্বরের গাড়ির ধাক্কায় সেলিম ব্যাপারী নিহত হন। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, গাড়িটির মালিক কামরুন নাহার শিউলী। চলতি বছরের ১৮ মার্চ গাড়িটি কেনেন তিনি।
আরো পড়ুন : ‘এমপি পুত্রদের বিনা শাস্তিতে মানুষ মেরে ফেলার লাইসেন্স দেয়া হয়'(ভিডিও)
একরামুল করিম চৌধুরী ও কামরুন নাহার শিউলী দুজনেই ২০১৪ সালে নির্বাচিত হন। স্বামী হলফনামা জমা দেওয়ার দুই মাস পর হলফনামা জমা দেন কামরুন নাহার শিউলী। হলফনামা দুটি ঘেঁটে দেখা যায়, দুই মাসের ব্যবধানে শূন্য থেকে কামরুন নাহার শিউলী ৫৬ লাখ ৫৮ হাজার ৫১৫ টাকা অর্জন করেছেন।
একরামুল চৌধুরী আর কামরুন নাহারের একমাত্র সন্তান শাবাব চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নোয়াখালী-৪ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান মো. একরামুল করিম চৌধুরী। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
আরো পড়ুন : ‘ধাক্কা দেওয়ার পর ব্যাক গিয়ারে সেলিমকে গাড়িচাপা দেন এমপিপুত্র’(ভিডিও)
একরামুল হলফনামা জমা দেন ২০১৩ সালের ৩০ নভেম্বর। হলফনামায় তিনি নিজের ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গের এবং স্ত্রীর পরিসম্পদের বিবরণ তুলে ধরেন। সেখানে স্ত্রী কামরুন নাহার শিউলীর নামে স্থাবর ও অস্থাবর কোনো সম্পত্তি নেই বলে উল্লেখ করেন একরামুল চৌধুরী।
একরামুল করিম চৌধুরী সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার ২৫ দিনের মাথায় এবং তার হলফনামা জমা দেওয়ার ২ মাসের মাথায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করতে কামরুন নাহার শিউলী হলফনামা জমা দেন। ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে কামরুন নাহার শিউলী মোট ৫৬ লাখ ৫৮ হাজার ৫১৫ টাকার মালিক।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, কামরুন নাহার শিউলীর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ অর্থ ৫০ লাখ ৬১ হাজার ৩১৫ টাকা, স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান অলঙ্কার ৪০ ভরি। এগুলোর অর্জনকালীন আর্থিক মূল্য ৮৩ হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়া তার ৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ৫ লাখ ৯ হাজার টাকার বিমা ও ডিপিএসের কথা বলা হয়।
আরো পড়ুন : ইউরোপ যাওয়ার পথে মৃত্যুর মিছিলে বাংলাদেশিরা
হলফনামায় শিউলীর বাৎসরিক আয় ব্যবসা থেকে ২৭ লাখ ৭৪ হাজার ১১৪ টাকা দেখানো হয়। আর শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে আয় দুটি সংখ্যায় দেখানো হয় ৪ লাখ ১০ হাজার ও ৪২ লাখ টাকা।
একরামুল করিম চৌধুরীর হলফনামায় দেখা যায়, তার বছরে আয় ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৯৮৭ টাকা। ব্যয় ১৮ লাখ ৬৮ হাজার ৭১২ টাকা। আর ব্যাংক ঋণ ১ কোটি ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৯৪১ টাকা।
একরামুল করিম চৌধুরী হলফনামায় তার বাৎসরিক আয়ের উৎস হিসেবে উল্লেখ করেন, কৃষিখাত থেকে ১ লাখ ২৮ হাজার ৩৫২ টাকা, শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে ৩১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৭৯ টাকা এবং চাকরি থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
আরো পড়ুন : ক্ষমতা আদায় করে নিতে হবে : ফখরুল
চাকরি থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা উল্লেখ করলেও একরামুল করিম চৌধুরী কোথায় বা কোন পদে চাকরি করতেন সেসবের উল্লেখ নেই। তবে সেখানে তার সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি উল্লেখ করা হয়েছে।
একরামুল করিম চৌধুরীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৮৪ হাজার ৯৩৬ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৩৪ লাখ ৩৮ হাজার ২৮ টাকা, বন্ড/ঋণপত্র/স্টক একচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার ১ কোটি ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা, পোস্টাল/সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা, বাস/ট্রাক/মটরগাড়ি/লঞ্চ/স্টিমার/বিমান ও মটরসাইকেলে ১ কোটি ৬০ লাখ ৯০ হাজার টাকা, স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথর নির্মিত অলঙ্কারাদি ৯৩ হাজার ৬০০ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৩ লাখ টাকার এবং ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে একরামুল করিম চৌধুরী উল্লেখ করেন তার কৃষি জমি রয়েছে ১২.৩৭ একর। অর্জনকালীন সময়ের মধ্যে যার আর্থিক মূল্য ১১ লাখ ২৯ হাজার টাকা। অকৃষি জমি ও অর্জনকালীন সময়ে আর্থিক মূল্য এক কোটি টাকা।
আরো পড়ুন : গাজীপুরে ধরপাকড় শুরু, নির্বাচন কমিশনের সমালোচনায় বিএনপি
একরামুল উল্লেখ করেন, তার তিনটি দালান রয়েছে। এর অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ৫ কোটি ৬৫ লাখ ২৩ হাজার ৩১০ টাকা। এ ছাড়াও বিমা, ডিপিএসে ১ কোটি ৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা জমা রয়েছে তার।
এ বিষয়ে কথা বলতে ২০ জুন রাতে ফোন করা হলে একরামুল করিম চৌধুরী তা কেটে দেন। প্রিয়
আপনার মতামত লিখুন :