হ্যাপী আক্তার : মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্যসহ পরিবার ভিত্তিক তালিকা চাওয়ায় চলতি মাসেই রোহিঙ্গাদের পরিবারভিত্তিক তালিকা তৈরির কাজ শুরু হতে হচ্ছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সহযোগিতায় নিবন্ধনের মাধ্যমে এ তালিকা তৈরি করা হবে। এর আগে বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের মাধ্যমে করা ব্যক্তিভিত্তিক তালিকা প্রত্যাবাসনে কাজে না আসায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন তালিকা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে থাকতে পারে মিয়ানমারও।
গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন শুরু হয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এই তালিকা কাজ দেবে এমনটাই আশা ছিল কর্মকর্তাদের। কিন্তু সেই আশা উবে যায় দুই দেশের বৈঠকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্যসহ পরিবার ভিত্তিক তালিকা চাওয়ায়। কারণ বিদ্যমান বায়োমেট্রিক তালিকায় রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন করা হয়েছে একক ব্যক্তি হিসেবে, সেখানে পরিবারভিত্তিক তথ্য নেই।
এরইমধ্যে নতুন নিবন্ধন কীভাবে হবে তার একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে কক্সবাজার প্রশাসন। যেখানে তথ্য যাচাই প্রক্রিয়ায় মিয়ানমারের প্রতিনিধিরাও থাকতে পারে। নিবন্ধনে পারিবারিক ছবি, ব্যক্তির ছবি ছাড়াও সংরক্ষণ করা হবে রোহিঙ্গাদের ১৮ ধরণের তথ্য। পাশাপাশি নতুন করে সংরক্ষণ করা হবে চোখের মনি ও আঙুলের ছাপ।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইউএনএইচসিআরের সহযোগিতায় নতুন করে পরিবারভিত্তিক তালিকা তৈরি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
কর্মকর্তারা জানান, গত ৪ অক্টোবর থেকে ইউএনএইচসিআর আলাদাভাবে রোহিঙ্গাদের পরিবার গণণা শুরু করে। ইউএনএইচসিআরের তথ্যের সঙ্গে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের নিবন্ধন সমন্বয় করেই নতুন তালিকা করা হবে।
শরণার্থী প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার আবুল কামাল আজাদ বলেছেন, রোহিঙ্গাদের পারিবারভিত্তিক যে তালিকা করা হবে, সেখানে তার পিতার নাম, যেখানে সে বসবাস করতো সে এলাকার নাম এবং তার লেখা-পড়ার কোনো তথ্য নেওয়া যায় সেগুলো তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
ইউএনএইচসিআর মুখপাত্র ক্যারোলাইন গ্লাক বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সাথে একত্রিত হয়েই আমরা কাজ করব। এখান পরিবারভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে। কারণ এর আগে সরকার প্রত্যেকের ব্যক্তিকেন্দ্রিক তথ্য সংগ্রহ করেছিল। এরপর এই দুটি তথ্য একত্রিত করে রোহিঙ্গা শরানার্থীদের সঠিক পরিসংখ্যান তৈরি করতে হবে, যা খুবই জরুরী।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কামাল হোসেন বলেছেন, মন্ত্রণালয় থেকে সম্মতি পাওয়া গেছে রোহিঙ্গাদরে পারিবারিক তালিকা তৈরির কাজ শুরু করার। এই সপ্তাহের শুরু অথবা শেষের দিকে পারিবারিকভাবে তালিকা তৈরির কাজটি শুরু করা হবে।
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তালিকা আর পরিবার গণনার তথ্যের ভিত্তিতে সমন্বিত তালিকা করতে কত দিন লাগতে পারে তা অবশ্য নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সূত্র : ইন্ডিপেন্ডেট টিভি
আপনার মতামত লিখুন :