শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ২১ জুন, ২০১৮, ০৫:৫৮ সকাল
আপডেট : ২১ জুন, ২০১৮, ০৫:৫৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জনতা ব্যাংককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা

জাফর আহমদ: পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খোলার (ঋণপত্র) ১২০ দিনের মধ্যে পণ্য দেশে আনতে হয়। কোন প্রতিষ্ঠান এলসি খোলার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য দেশে আনকে ব্যর্থ হলে পুনরায় এলসি খোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হয়। রাষ্ট্রায়ত্ব জনতা ব্যাংক এ ধরনের অনুমতি না নেওয়ায় সাড়ে ৪ বছরে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার আমদানি পণ্যের হিসাবে মেলাতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ব্যাপারে শান্তি হিসাবে জনতা ব্যাংককে ১০ লাখ টাকা জরিমানাসহ সংশ্লিস্ট এডি (অথরাইজ ডিলার) শাখার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এলসি খোলার সাথে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য অনুযায়ী ২০১৪ সাল থেকে জনতা ব্যাংক ৭ দশমিক ৮৯৭ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলে। এর মধ্যে ব্যাংকটি ২০১৪ সালে ২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলে, ২০১৫ সালে ১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলারের, ২০১৬ সালে ১ দশমিক ৬৬১ বিলিয়ন ডলার, ২০১৭ সালে ১ দশমিক ৫৫০ বিলিয়ন ডলার এবং চলতি ২০১৮ সালের মে পর্যন্ত ৫ মাসে এলসি খোলে ৬৬৬ মিলিয়ন ডলারের। এর মধ্যে এলসির বিপরীতে সম্পুর্ণভাবে ৮৭০ মিলিয়ন ডলার এবং অংশিক ৯৫০ মিলিয়ন ডলারের পণ্যের হদিশ পাচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। টাকার অংকে যা প্রায় ১৫ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। এ বিষয়ে জনতা ব্যাংককে ১০ লাখ টাকার জরিমানা করার পাশাপাপাশি ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট একটি শাখার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সুত্র জানায়, কোন পণ্য আমদানির জন্য এলসি খোলার সঙ্গে সঙ্গে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন সিসটেমে প্রতিবেদন দিতে হয়। পণ্যটি দেশে আসার সাথে সাথে আর একবার প্রতিবেদন দিতে হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন সিসটেমে। কেন্দ্রিয় ব্যাংকের নির্দেশনা মোবাবেক এলসি খোলার পর থেকে ১২০দিন অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বাংলাদেশে ব্যাংকের ড্যাস বোর্ডে প্রদর্শিত হয়। ১২০ দিনের মধ্যে কোন প্রতিষ্ঠান পণ্য আনতে ব্যর্থ হলে পুনরায় ওই প্রতিষ্ঠানকে পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে দেওয়া হয়না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, বার বার এ নির্দেশনা অমান্য করেছে জনতা ব্যাংক।

এলসি খোলার ক্ষেত্রে এ অনিয়মের বিষয়টি স্বীকার করেন জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম আজাদ। জানতে চাইলে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের যে এডি শাখায় (অথোরাইজড ডিলার-এলসি খোলার জন্য নির্দিষ্ট শাখা) এ অনিয়ম হয়েছে বিস্তারিত অনিয়ম অনুসন্ধান করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন দিলে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পরিপালনের ক্ষেত্রে যে ঘাটতি ছিল তাও পরিপালন করা হচ্ছে। পাশাপাশি যে সব প্রতিষ্ঠান এলসি খোলার পর ১২০দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও পণ্য বা সেবা দেশে আনেনি পুনরায় তাদের এলসি খোলা বন্ধ আছে।
জনতা ব্যাংকের অন্য একটি সুত্র জানায়, আশুগঞ্জ পাওয়ার প্লান্টসহ বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি, এমডি ড্রিম, মাল্ট্রি ফাইবার্সসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ১২০ দিনের মধ্যে পণ্য দেশে না আনার পরও দ্বিতীয় পর্যায়ে এলসি খুলেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তা জানান, আমদানির ক্ষেত্রে জনতা ব্যাংক ব্যাংক কোম্পিনি আইন ও জিএফটি এর সংম্লিষ্ট ধারা লংঘন করে একই ঘটনার বার বার পুনরাবৃত্তি করেছে। এ কারণে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকার জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা মওকুফ করার জন্য জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সামাদ আজাদ বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের কাছে আবেদন করেছে। কিন্তু জরিমানা মওকুফের অধিকার এককভাবে গর্ভনরের হাতে না থাকার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের আগামী বোর্ড সভা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি বিভাগের একটি দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পরিপালন না করায় রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট শাখার ঋণপত্র খোলার ক্ষমতা প্রত্যাহারের কাজ চলছে।

নির্দেশনা না মানা এ সব ব্যাংকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর অবস্থান যাওযা উচিত বলে মনে করেন সাবেক গর্ভনর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, নির্দেশনা না মানার বিষয়টি শুধু নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে কেন্দ্রিয় ব্যাংকের নির্দেশনার বিষয় নয়। একই সাথে এটা ওই বাণিজ্যিক ব্যাংকের জন্য অভ্যান্তরিন শৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনার পরিচায়ক। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত হবে নির্দেশনা না মানলে ওই ব্যাংকের একাউন্ট থেকে জরিমানার টাকা কেটে রাখা। এক ব্যাংককে কোনভাবে ছাড় দিলে অন্য ব্যাংকও সুয্গো পাবে। ফলে ব্যাংকিং খাতে একটা নেতিবাচক বার্তা যাবে। যা ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়