আশিক রহমান : মানবিক, কোমল, অনেক বড় হৃদয় হওয়ার কারণেই লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে একরকম বিনা প্রশ্নে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ এমনটিই মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক মোহাম্মদ জমির। আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বাংলাদেশের হৃদয় অনেক বড়। অনেক সময় আমরা কিছুটা বোকাও। সেজন্যই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আমরা গ্রহণ করি, আশ্রয় দিই। এ দুটি কারণেই আমরা মানবেতর জীবনযাপনকারী শরণার্থীদের সব ধরনের সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দিই।
তিনি আরও বলেন, দুনিয়া শরণার্থীদের জন্য দুয়ার বন্ধ করে দিচ্ছে। তথাপি আমাদের উপরই চাপ বাড়ছে তাদের গ্রহণে। যেখানে উন্নত দেশগুলো শরণার্থী গ্রহণে অপরাগতা প্রকাশ করছে, সেখানে আমরা গ্রহণ করছি। তবে প্রত্যাশা এ সংকট নিরসন হবে। যারা মানবেতর জীবনযাপন করছে তার জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ জমির বলেন, আমরা যেহেতু একাত্তরে অনেক ভুগেছি, কোটিরও বেশি মানুষ শরণার্থী হয়েছিলাম, পরে আস্তে আস্তে দেশে ফিরেছে। কেন ফিরেছে? কারণ তারা জানত যে, দেশে ফেরত গেলে তাদের নিরাপত্তার কোনো অসুবিধা হবে না। নিরাপদেই থাকবে। সেজন্যই বাংলাদেশের শরণার্থীরা দেশে ফিরেছিল। বঙ্গবন্ধু সে ব্যাপারে শক্তিশালী প্রক্রিয়া চালু করেছিলেন। রোহিঙ্গাদেরও যদি ফেরত যেতে হয় মিয়ানমারে তাহলে তো একটা স্থিতিশীল নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের আশ্বস্থ করতে হবে, আস্থার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা অনেক আগে থেকেই এসেছে। তাদেরও আমরা দেখাশোনা করেছি। এবারও আমরা কোনো ভুল করিনি। কিন্তু কথা হচ্ছে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে মিয়ানমার। এ ব্যাপারে তাদেরকে যথেষ্ট সাজা দেওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে ইতোমধ্যেই। কিন্তু গণমাধ্যম মারফত জানতে পারলাম জাতিসংঘ নিজেই বলছে, মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এবং মিয়ানমারের সব জায়গায় ইউএনএইচসিআরকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে। যে কারণে জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট আসছেন বাংলাদেশে। সরেজমিনে তারা দেখবেন, এখানে কী হচ্ছে, না হচ্ছে। যতটুকু সম্ভব সাহায্য-সহযোগিতা করছে বাংলাদেশকে। জাতিসংঘ মহাসচিব আসবেন, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টও আসছেন। সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের অধিবেশন বসবে। জি-সেভেন, তথা জাস্টিন ট্রুডোও একটা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কমবেশি সবাই এগিয়ে আসছেন সংকট নিসরনে। দেখা যাক কী হয়।
আপনার মতামত লিখুন :