শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ২১ জুন, ২০১৮, ১১:১৪ দুপুর
আপডেট : ২১ জুন, ২০১৮, ১১:১৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নীতিমালা না মেনেই ব্যবসা করছে পাঠাও!

নিজস্ব প্রতিবেদক : ম্যাপ সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। ঢাকার রাস্তাঘাট অচেনা-এমন লোকদের হাতে পাঠাও অ্যাপস আর মোটরসাইকেল! রিকোয়েস্ট পেলেই যাত্রী টানতে দৌঁড়ে যাচ্ছে, আবারও যাত্রী নামিয়ে ব্যস্ত হয়ে ছুটতে গিয়ে মাঝপথেই ঘটাচ্ছে দুর্ঘটনা।

লাভজনক হওয়ায় ঢাকার বাইরে থেকে শত শত মোটরসাইকেল রাজধানীতে ঢুকে ব্যবসায় নেমেছে। ঢাকার বাইরে থেকে আসা এসব মোটরসাইকেলের নাম্বার প্লেটে দেশে বিভিন্ন অঞ্চলের নাম লেখা দেখা যায়।

এমন পরিস্থিতিতে ‘রাইড শেয়ারিং-কে হিতে বিপরীত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং শুরু থেকে পর্যবেক্ষণ করছেন মেগাসিটি গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মুরাদ শুভ।

তিনি জানান, কোন দেশে রাইড শেয়ারিংয়ের শুরুতে রাইডার এবং বাইকার বা চালক এই দুই শ্রেণীর প্রয়োজন হয়। এটা যখন বহুমাত্রায় হয়ে যায় তখন রাইড শেয়ারিং দাঁড়িয়ে যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে এটা দাঁড়িয়ে গেছে-বলাই যায়। কিন্তু এখন নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। কিন্তু যে নীতিমালা করা হয়েছে তাতে এর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। খবর বার্তা ২৪’র।

পরিবহন-বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল হক বলেন, ‘সরকার এখনও গণপরিবহনের ভালো কোন বিকল্প দিতে পারেনি। তবে দেশে রাইড শেয়ারিংয়ের ভালো সম্ভাবনা আছে। গাড়ি না কিনে চারজন যাত্রী একসাথে যাওয়ার ভালো সুযোগ আছে। কিন্তু বাংলাদেশে এরকম রাইড শেয়ারিং হচ্ছে না। ঝুঁকিপূর্ণ মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং বেড়ে যাচ্ছে। রাইড শেয়ারের পূর্ব শর্ত হল মানুষের মধ্যে এর প্রচলন শুরু হওয়া। ব্যবহারকারীর সংখ্যা যখন বাড়বে তখন এটা হবে। ব্যবহারকারীরা একত্রিত হয়ে তাদের গন্তব্য মিলে যাওয়ার পর কোথাও যাবে।’

বিশ্লেষকদের ধারণা মতে, মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিংয়ের ৯০ ভাগ পাঠাও-অ্যাপসের। কিন্তু এসব পাঠাও অ্যাপস ব্যবহাকারীদের অধিকাংশ ঢাকার নিয়মিত মোটরসাইকেল চালক নন। তারা রাজধানীর বাইরে থেকে এসে পেশাদার হিসেবে যোগ দিয়েছেন।

মুরাদ শুভ বলেন, ‘রাইড শেয়ারিং মানে হলো যখন আপনি কোথাও যাবেন একই যাত্রাপথের অন্য আরেকজন যাত্রীকে সাথে নিয়ে যাবেন। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে আমরা তা-ই দেখছি। কিন্তু ঢাকার মোটরসাইকেল অ্যাপসগুলো বেশি ভাড়া ধার্য করায় ‘বাইকার’পেশা হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে। যা এখন ঝুঁকির কারণ।

দেখা গেছে, অদক্ষ ও ঢাকার পথঘাট না চেনা গ্রাম থেকে আসা চালকশ্রেণীও যুক্ত হয়েছে তাতে। এরা প্রাইভেটকার-জিপ মাইক্রোবাসের গায়ে ঘষা লাগিয়ে আচড় ফেলছে। নিয়মিত ‘লুকিং গ্লাস’ভাঙ্গছে প্রাইভেট কারের।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান বলেন, ‘পাঠাও-এর ওপর মনিটরিং তারা বৃদ্ধি করেছে। এখন মোবাইল কোট বসিয়ে মোটরসাইকেল আটকানো হচ্ছে। ঢাকার বাইরের মোটরসাইকেল ভেতরে এসে ট্রিপ দেওয়ার বিষয়টি তারা কঠোরভাবে দেখবেন।’

মোটরসাইকেল কোম্পানিগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে দেশে যত মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে তা অতীতে কোন সময় হয়নি। ১৫টি ব্র্যান্ডের ৩ লাখ ৮৭ হাজার মোটরসাইকেল বিক্রি করেছে, যা আগেরবছরের চেয়ে ৪৪ শতাংশ বেশি।

এই খাতের কোম্পানিসহ সংশ্লিষ্টদের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, এত বেশি মোটরসাইকেল বিক্রির কারণ রাইড শেয়ারিং অ্যাপস। নগদ আয়ের পথ দেখে ঢাকার রাস্তায় কয়েক হাজার ‘ফুলটাইম বাইকার ড্রাইভার’ নেমে গেছে। এদের অধিকাংশের মোটরসাইকেল চালনায় দক্ষতা নেই।

এক্ষেত্রে রাইড শেয়ারিং নীতিমালা ভঙ্গ করছে পাঠাও। নতুন মোটরসাইকেল দিয়ে রাইড দেওয়া নীতিমালায় নিষিদ্ধ। কমপক্ষে এক বছরের পুরনো হতে হবে। কিন্তু পাঠাও নতুন মোটরসাইকেল কিনে রাইড দিতে বিভিন্ন অফার চালু রেখেছে।

আশরাফ নামে একজন ব্যাংকার অভিযোগ করে বলেন, কিছুদিন আগে বিজয়স্মরণি সিগন্যালের ২০০গজ আগে একটি মোটরসাইকেল বা পাশের চিপা জায়গা দিয়ে ঢুকে পড়ে। বাইকটির হ্যান্ডেল প্রথমে তার নতুন প্রাইভেট কারের পেছনে ঘঁষা দিয়ে স্ক্রেচ ফেলে দেয়।

রহমতুন্নেসা নামে আরেকজনের অভিযোগ একই ধরণের। তার প্রাইভেট কারের লুকিং গ্লাস ভেঙ্গে দিয়েছে পাঠাও অ্যাপসের একটি বাইকার। উল্টো ওই বাইকার প্রাইভেট কারের দোষ দিয়ে দ্রুত সিগন্যাল পার হয়ে যায়।

কিন্তু তিনি মোটরসাইকেলের মোবাইল রাখার হ্যান্ডল এবং স্ক্রিনে ‘পাঠাও’লগো দেখতে পেয়ে বুঝেতে পেরেছেন বাইকার লোকটি রাইড শেয়ারিংয়ের যাত্রী টানছে। আর নাম্বার প্লেট যশোর মেট্রো সার্কেলের।

পাঠাও-অ্যাপস ব্যবহার করে মোটরসাইকেলে একজন যাত্রী উত্তরা থেকে বনানী যান। যাওয়ার পথে দুই জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটনার ঘটে বলে জানান তিনি।একটি প্রাইভেট কারের সামনে বাম্পারে যাত্রীর পা লেগে অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছেন তিনি।

এজাজ নামের ওই যাত্রীর অভিযোগ, ‘‘বাইকারের সঙ্গে ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে। কিন্তু তার হাত কাপানো চালানো দেখে বোঝাই যাচ্ছে নতুন চালানো শিখেছে মাত্র। অথচ উল্টো দাবি করছে ২০১২ সাল থেকে বাইক চালায়।’’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়