ডেস্ক রিপোর্ট: সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় ফাহিদা খাতুন (২৫) নামে এক কলেজ ছাত্রীকে মারধর করে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে স্বামী-শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে। বুধবার ভোররাতে সলঙ্গা থানার সলঙ্গা ইউনিয়নের শাহরিয়াপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফাহিদা খাতুন সিরাজগঞ্জ শহরের রেলওয়ে কলোনীর ফজলুল হকের মেয়ে। ফাহিদা শহরের রাশিদ্দোহা সরকারী মহিলা কলেজের এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। ঘাতক স্বামী সলঙ্গার শাহরিয়ারপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রিয়াজ।
মা বুলবুলি খাতুন মেয়ের লাশের পাশে আহাজারি করে বলেন, প্রায় চার বছর আগে মেয়ে ফাহিদার সাথে রিয়াজের বিয়ে হয়। বিয়ের পর দোকান দেয়ার জন্য দুটি ল্যাপটপ কিনে দেয়া হয়। এছাড়াও ছেলের পড়াশোনার খরচের জন্য মাঝে-মধ্যেই টাকা দেয়া হতো। সম্প্রতি ছেলে বিএসসি পাশ করলে দশ লাখ টাকা যৌতুক চায়। যৌতুক দিতে না পারায় মাঝে-মধ্যেই মেয়েকে মারপিট করে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতো। এ অবস্থায় বুধবারের মধ্যে টাকা না দিলে কিছু একটা দেখতে পাবেন বলে হুমকি দেয়। কিন্তু বুধবারের আগেই মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মেয়ে আমাকে ফোন দেয়। তার কথাবার্তা সন্দেহ হয়।
এরপরই মেয়ে জামাই রিয়াজ ফোন দিয়ে বলেন, আপনাদের বুধবার পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু টাকা দিলেন না। এখন মেয়েকে মেরে ফেললে কিছু করতে পারবেন? উত্তরে আমি বলি আমি কিছু করতে পারবো না কিন্তু তুমিতো সুখে থাকবে। কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি মেয়েকে মেরে ফেলবে। সকাল সাতটায় জানতে পারি ফাহিদাকে মারধর করে বিষ খাওয়ানো হয়েছে। পরে বগুড়া হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মাঝে-মধ্যে মেয়েকে দেখতে গেলেও মেয়ের শাশুড়ি যৌতুকের টাকার জন্য আমাকেও ঝাটা দিয়ে পিটিয়েছে। এদিকে লাশ বগুড়া থেকে গ্রামের বাড়ি রেলওয়ে কলোনীতে আসলে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সহপাঠীরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন। এইচএসসি পরীক্ষা দিলেও যৌতুক লোভী স্বামীর কারণে ফলাফলও দেখার ভাগ্য হলো না ফাহিদার। অবিলম্বে ঘাতক স্বামী রিয়াজ ও তার বাবা-মা-বোনের ফাঁসি দাবি করেছেন তারা।
সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওহেদুজ্জমান জানান, লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
আপনার মতামত লিখুন :