উম্মুল ওয়ারা সুইটি : খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর গাজীপুর সিটি নির্বাচনকে আরো চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী গাজীপুরের শীর্ষ নেতাদের ঐকবদ্ধ থেকে দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রচরণা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, ঈদের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্যাহ এবং মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিসহ গাজীপুরের সিনিয়র নেতাদের বলেছেন, সব ধরনের কোন্দল ভুলে গিয়ে দলীয় প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে দলের করণীয় ঠিক করতে ঈদের পরদিন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠক থেকে গাজীপুরের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্যাহ খানসহ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ঈদের ছুটির কারণে নির্বাচনী প্রচরাণায় কোনো ভাটা পড়েছে কি না এবং সিনিয়র নেতারা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছে কিনা তা জানতে চাওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রচারণায় যেনো কোনোভাবেই গা-ছাড়া ভাব না থাকে। এই নির্বাচনে জয়ী হওয়া আওয়ামী লীগের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।
এরপর গত সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ।
প্রথমে আজমত উল্যাহ খানের সঙ্গে কথা বলে ভোটের মাঠের পরিস্থিতি ও প্রচারণার খোঁজখবর নেন ওবায়দুল কাদের। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আখতারুজ্জামান ও ইকবাল হোসেন সবুজের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাদের সবাইকে বলেন, সব ভেদাভেদ ভুলে নৌকার প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে নেমে পড়তে হবে। কারণ, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জিততেই হবে।
স্থানীয় নেতারা ওবায়দুল কাদেরকে জানান, ভোটের মাঠে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। ভোটের মাঠ তাদের পক্ষে আছে। তারাই জিতবেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গাজীপুর নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দলীয় সভাপতির কার্যালয়ে বসে আমরা কথা বলেছি। বৈঠক থেকে প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ও আজমত উল্লাহর সঙ্গে কথা বলে সর্বশেষ পরিস্থিতি জেনেছি আমরা। সবাইকে ঈদের আনন্দের মুড ছেড়ে নির্বাচনি মুডে আসার অনুরোধ করেছি।
ওবায়দুল কাদেরর নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিম-লীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ। বৈঠকে গাজীপুরে কেন্দ্রীয় নেতারা কীভাবে প্রচারণায় অংশ নেবেন এবং কীভাবে নির্বাচন মনিটরিং করবেন তা ঠিক করা হয়েছে। বিকালে গাজীপুরের স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেলের বাসায় কেন্দ্রীয় নেতারা আরেক দফা বৈঠক করে চূড়ান্ত করেন কর্মপরিকল্পনা। আজ সকালে দলের সম্পাদকম-লীর সভা আহ্বান করা হয়েছে। সেখানে আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ৭ জুলাই শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করার শিডিউল থাকলেও গাজীপুর নির্বাচন নিয়ে আলোচনা প্রাধান্য পাবে। আগামী ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :