শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২০ জুন, ২০১৮, ০৫:৫৯ সকাল
আপডেট : ২০ জুন, ২০১৮, ০৫:৫৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘যেখানে রাষ্ট্র নাই আইন নাই বিচার ব্যবস্থা নাই আছে শুধু লাঠিয়াল’

রবিন আকরাম : লেখক ও ব্লগার পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন, সুযোগ পেলেই আমরা সেই ফিউডাল সমাজে ফিরে যেতে চাই, যেখানে রাষ্ট্র নাই আইন নাই বিচার ব্যবস্থা নাই আছে শুধু লাঠিয়াল। এই লাঠি ঘুরায়ে আমরা আদালতকেও ভয় দেখাই।

তিনি তার ফেসবুকে লিখেছেন- চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে পাওয়া নতুন জমিদারির টাকায় যেহেতু বাঙালি ইন্টেলেকচুয়াল তৈরি হয়েছিল কলকাতায় এবং তাদের মাধ্যমেই আমরা আধুনিকতা শিখেছি, প্রগতিশীল রাজনীতি শিখেছি সে কারনেই আমাদের আধুনিকতা ফিউডালগন্ধী। আমাদের প্রগতিশীলতাও ফিউডালগন্ধী। যারা নিজেদের আধুনিকতার চ্যাম্পিয়ন মনে করে সেও আসলে ফিউডাল ভ্যালুজ চর্চা করে। আমাদের প্রগতিশীলেরাও ফিউডাল ভ্যালুই চর্চা করে। তারা ফিউডাল আউটলুক থেকে ক্যাপিটালিজমের ক্রিটিক করে।

ইকোনোমিক সিস্টেম হিসেবে ক্যাপিটালিজম যে অগ্রসর ব্যবস্থা, এইটাও তারা মানতে চায় না। তাদের কাছে ব্যবসাই একটা অশ্লীল শব্দ হয়ে দাঁড়ায়। ব্যবসা যে ক্যাপিটালিজমের উদ্ভবের অনেক আগে থেকেই আছে, ক্যাপিটালিজমের পরেও থাকবে ব্যবসা মানেই যে ক্যাপিটালিজম নয়, এটাও মাথায় আনতে চায় না।

বাঙালি বামপন্থীরা মনে করে দরিদ্র না হলে কেউ কমিউনিস্ট হতে পারে না। তাদের কাছে কমিউনিস্ট জীবনাচার বলে একটা অলীক কল্পনা আছে। যেখানে সে তার দারিদ্রকে উদযাপন করে। তাদের গুরু ফ্রিডারিখ এঙ্গেলস যে নিজেই একজন পুঁজিপতি ছিলেন, তার নিজের যে ম্যাঞ্চেস্টারে বিশাল টেক্সটাইল মিল ছিল, তিনিও যে নিজে শ্রম শোষণ করতেন অন্যান্য পুঁজিপতির মতোই, আর সেই টাকায় যে কার্ল মার্ক্সকে পালতেন সেটাও সম্ভবত এদেশের বামপন্থীরা জানে না।

জমিদারি প্রথা আমাদের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করে গেছে। আমাদের অনেক সমস্যার মুলে আছে জমিদারি প্রথার হ্যাং ওভার।

আমরা যখন নিজেকে জাহির করতে চাই, তখনো বলি চিনিস আমি কে? তার মানে তিনি এক জমিদারসুলভ কেউ, তাকে চিনতেই হবে। কেউ যখন প্রতিপক্ষ হয় তখন তার সবকিছুই খারাপ বলে মনে হয়। এখান থেকেই এসেছে যারে দেখতে নারি তার চলন বাকা কথাটা। আদার সাইড আমরা দেখতেই চাই না, অপরের যুক্তি বা কথা শোনার ধৈর্য নাই আমাদের। তালগাছটা সবসময় আমার। আলাপ আলোচনায় সমস্যা সমাধানে আমাদের ধৈর্য নাই। লাঠি আর লগি বৈঠা হাতে নিয়ে প্রতিপক্ষের মাথায় বাড়ি দিয়ে আমরা সমস্যার সমাধান করতে চাই।

সুযোগ পেলেই সেই ফিউডাল সমাজে ফিরে যেতে চাই, যেখানে রাষ্ট্র নাই আইন নাই বিচার ব্যবস্থা নাই আছে শুধু লাঠিয়াল। এই লাঠি ঘুরায়ে আমরা আদালতকেও ভয় দেখাই। মাদক ব্যবসায়ীরে ক্রসফায়ারে দিলে খুশী হই, ধর্ষককে প্রকাশ্যে পিটাইলে আনন্দ পাই। মানুষের ফাসি হইলে বিরানি খাইয়া সেইটারে উদযাপন করি। রাস্তায় ট্রাফিক আইন মানি না। ফুটপাতেও মোটর সাইকেল তুলে দেই। এক মিনিট দাঁড়াইলে যে জ্যাম বাধে না সেই এক মিনিট না দাঁড়াইয়া নিজেই আধাঘন্টার জ্যাম লাগায়ে দেই। খাইতে বসলেও স্তুপ কইর‍্যা খাবার নষ্ট না করলে তৃপ্তি পাইনা। ক্রেতারে সন্মান দেই না, মনে করি ঠেকায় পরে সে আমার পন্য কিনতে আসছে।

আমাদের কথায়, আচরণে আমরা মফস্বলিপনাকে উদযাপন করি। এইসব কিছুই আমরা শিখছি জমিদারি প্রথা থাইকা। আমরা সকলেই অবচেতন মনে একজন ফিউডাল লর্ড হইতে চাই। রাস্ট্ররে জমিদারি বানায়ে ফেলতে চাই অথবা নিজে প্রজা হইয়া সুখে কাল কাটাইতে চাই। একটা আধুনিক রিপাবলিক চাই না, একটা শক্তিশালী ক্যাপিটালিজম চাই না, একজন নাগরিক হইয়া উঠতে চাই না। আফসোস!!

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়