চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ জট ও কন্টেইনার জট চলছে। চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে আসার জন্য মঙ্গলবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৪টি কন্টেইনারবাহী জাহাজ বহির্নোঙরে অপেক্ষা করছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে ২৬ হাজারের অধিক সংখ্যক কন্টেইনার রয়েছে। যা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে অনেক বেশি। চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল ম্যানেজার গোলাম মো. সরওয়ার জানান, বাজেট ও রমজানের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, এ অবস্থা বেশ কয়েকদিন ধরে চলছে। আস্তে আস্তে তার উন্নতি হবে।
জানা যায়, রোজাকে সামনে রেখে অনেক ক্ষেত্রে যেমন আমদানি বেড়েছে, আবার বাজেটকে টার্গেট করেও কোন কোন পণ্যের আমদানি বেড়েছে। রোজার পণ্য ছাড় করলেও বাজেটকে লক্ষ্য করে যে সকল পণ্য আমদানি করা হয়েছিল তার বেশির ভাগ ছাড় করা হয়নি। কারণ বাজেটে অনেক পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক সুবিধা পাবে এ ধারণা থেকে অনেক পণ্যই নিয়ে আসা হয়। বাজেটের পর তা খালাসের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
অন্যদিকে আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ মালিকদের অনেকের অভিযোগ প্রাইভেট আইসিডিসমূহ তাদের পণ্য যথাসময়ে আইসিডিতে না নেয়ায় তারা খালাস করতে পারছে না। আবার একই চালানের ১/২টি কন্টেইনার নেয়ার পর অন্য কন্টেইনারগুলো বন্দরে পড়ে থাকায় কন্টেইনারসমূহ খালাস করা যাচ্ছে না। প্রাইভেট আইসিডিসমূহে ৩৭টি আমদানি পণ্য খালাস হয়ে থাকে। সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বাচ্চু জানান, প্রাইভেট আইসিডিসমূহের পর্যাপ্ত লোকবল, ইকুইপমেন্টসহ অবকাঠামো সুবিধা না থাকায় আমদানিকারকগণ হয়রানির শিকার হচ্ছে। তিনি জানান, অধিকাংশ আইসিডি নীতিমালা ছাড়াই চলছে।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যে আইসিডিসমূহের মধ্যে যে সকল আইসিডি’র বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে তা দ্রুত নিরসনে তাগাদা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া নতুন আইসিডি এর অনুমতি দেয়ার প্রক্রিয়াও চলছে। প্রতি বছর রমজান ও বাজেটের সময় বন্দরে জাহাজ ও কন্টেইনার জটের সমস্যা দেখা দেয়। বন্দরের পর্যাপ্ত জেটি ও ইয়ার্ড সমস্যা রয়েছে। একই সাথে আমদানিকারকগণও যথাসময়ে পণ্য খালাস না করায় এ জটের সৃষ্টি হয় বলে বন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ জানান।
গত ২/৩ দিনের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ে যেখানে গড়ে ২ হাজার কন্টেইনার খালাস হতো এ সময়ে তা মাত্র ২/৩ শতে নেমে এসেছে। আবার রমজান উপলক্ষে সড়ক যোগে কন্টেইনার পরিবহনের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করায় চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কন্টেইনারবাহী ট্রাক, লরি, ট্রেইলার চলাচল কমে যায়। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি ও রপ্তানি পণ্যের শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ পণ্য সড়ক পথেই পরিবহন করা হয়ে থাকে। এখনও রেল ও নদী পথে অন্য পরিবহন খুবই নগণ্য। চট্টগ্রাম বন্দরের ট্রাফিক বিভাগ থেকে বলা হয়, জাহাজ থেকে আমরা কন্টেইনার বা পণ্য নামালে কি হবে। এ সকল পণ্য দ্রুত খালাস করা না হলে জট নিরসন কোনভাবেই সম্ভব নয়। সূত্র: ইত্তেফাক
আপনার মতামত লিখুন :