রাশিদ রিয়াজ : ফ্রান্সের বিশেষ বাহিনী ‘ক্রাক ট্রুপস’ ইয়েমেনে বিতর্কিত সৌদি জোটের আগ্রাসনে আমিরাতকে সাহায্য করছে। ফ্রান্সের দৈনিক লা ফিগারো শনিবার এ খবর দিয়ে বলছে, ইয়েমেন, ফ্রান্স, সৌদি আরবের বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা হুদায়াদা বন্দর হুথি যোদ্ধাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার জন্যে সামরিক অভিযান শুরু করেছে। ফ্রান্সের সঙ্গে সৌদি আরবের এক চুক্তি অনুসারেই ইয়েমেনে এধরনের সামরিক সহায়তা করছে দেশটি।
তবে আমিরাতের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ফ্রান্সের বিশেষ বাহিনী সামরিক অভিযানে কতটা অগ্রসর হতে পেরেছে তার কোনো বিস্তারিত খবর দেয়টি পত্রিকাটি। কারণ সৌদি জোটের হুদায়দা বিমানবন্দর দখলের দাবি নাকচ করে দিয়েছে আনসারুল্লাহ আন্দোলন। হুথিদের এ সংগঠনটির প্রভাবশালী নেতা ইব্রাহিম আল ওবায়দি আল-আলম টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আগ্রাসী বাহিনীকে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়েছে। তারা এখন সাগর পথে সহযোগিতা পাচ্ছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি দিকনির্দেশনায় হুদায়দায় হামলা চালাচ্ছে আগ্রাসীরা। হুদায়দায় এখন মূলত ইয়েমেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের যুদ্ধ চলছে। এই লড়াই দীর্ঘ দিন ধরে চলবে বলে তিনি জানান। এর আগে আনসারুল্লাহর মুখপাত্র মোহাম্মাদ আব্দুস সালামও বলেছেন, ইয়েমেনে হুদায়দায় শত্রু বাহিনীকে ঘিরে ফেলা হয়েছে।
হুদায়দা বন্দরটি হচ্ছে ইয়েমেনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পৌঁছানোর একমাত্র পথ। এবং এ বন্দর সৌদি জোট দখলে নিলে ইয়েমেনে খাদ্য ও ত্রাণ সাহায্য বন্ধ করে দেয়া সম্ভব হবে। ২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনে আগ্রসন চালিয়ে আসছে সৌদি আরব ও তার কয়েকটি মিত্র দেশ। কয়েক মাস আগে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ইউরোপ সফরের অংশ হিসেবে ফ্রান্স সফরের সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর সঙ্গে কৌশলগত আলোচনায় বসেন। এবং কৌশলগত বলেই এব্যাপারে কোনো বিস্তারিত তথ্য ম্যাক্রো তার দেশবাসির দাবি সত্ত্বেও পরে জানাতে অস্বীকার করেন।
দিকে রয়টার্সকে ফ্রান্সের একজন সংসদ সদস্য বলেছেন, তার দেশের সেনারা এখন ইয়েমেনে আমিরাতের পক্ষে লড়ছে। আমিরাতের সেনারা ইয়েমেনের উপকূল বরাবর অবস্থান নিয়েছে। ওই স্থানটি এডেন বন্দর ও সোকোত্রা দ্বীপের কাছে। ফ্রান্স সৌদি আরব ও আমিরাতের কাছে প্রধান অস্ত্র বিক্রেতা দেশ। ইয়েমেনের পলাতক প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বো মানসুর হাদি’কে পুনরায় দেশটির ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টায় এধরনের সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে সৌদি জোট। এজন্যে জাতিসংঘের কোনো অনুমোদন নেয়া হয়নি। তবে জাতিসংঘ বলছে রাজনৈতিক সমাধানের জন্যে ইয়েমেনের সকল পক্ষকে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া উচিত। ইয়েমেনে ইতিমধ্যে সৌদি জোটের এ আগ্রাসনে ১০ সহ¯্রাধিক মানুষ মারা গেছে যাদের অধিকাংশই বেসামরিক ব্যক্তি।
আপনার মতামত লিখুন :