শিরোনাম
◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে ◈ সেনা গোয়েন্দাসংস্থার বিরুদ্ধে ৬ পাক বিচারপতির ভয় দেখানোর অভিযোগ ◈ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিরা সাদা পতাকা উড়াচ্ছিল, তাদের বূলডোজার দিয়ে মাটি চাপা দিল ইসরায়েলী সেনারা ◈ ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দ্রুত আরোপ করুন: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ ◈ যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত ◈ বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ ও মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র: ম্যাথিউ মিলার ◈ ঈদের পর কমপক্ষে ২৩ ডিসি’র রদবদল হতে পারে ◈ ৫ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে কর্মদিবস একদিন ◈ চাঁদপুরে পিকআপ ভ্যান ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত

প্রকাশিত : ১৬ জুন, ২০১৮, ১০:৫৯ দুপুর
আপডেট : ১৬ জুন, ২০১৮, ১০:৫৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কিভাবে মোসাফাহা করলে গুনাহ মাফ হয়?

মাহফুয আহমদ: মোসাফাহা একটি ফজিলতপূর্ণ আমল; যা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর যুগ থেকেই চলে আসছে। তাবেয়ি কাতাদাহ (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমি সাহাবি হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূল (সা.) এর সাহাবিদের মধ্যে কি মোসাফাহার প্রচলন ছিল? হজরত আনাস (রা.) বললেন- হ্যাঁ, ছিল। (বোখারি: ৬২৬৩)

স্মর্তব্য, মোসাফাহার আমলটি ছোট হলেও এর ফজিলত অনেক বেশি। আমরা অনেকেই অবহেলা করে এই ফজিলত থেকে মাহরূম (বঞ্চিত) থাকি। মোসাফাহার ফজিলত সম্পর্কে একাধিক বর্ণনা পাওয়া যায়। হজরত বারা ইবনে আযিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন- কোনো মুসলমানের সাথে অপর কোনো মুসলমানের সাক্ষাৎ হলে তারা যদি মোসাফাহা করে তাহলে তাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়- তারা সেই স্থান ত্যাগ করার পূর্বেই। (সুনানে আবু দাউদ: ৫২১২)

দু’হাত দ্বারা মোসাফাহা করার নিয়মটি সর্বজনবিদিত হলেও আজকাল আমাদের কোনো কোনো বন্ধু জানতে চান যে, মোসাফাহা কীভাবে করবো? মানে দুহাত দিয়ে নাকি উভয়পক্ষ থেকে এক একহাত দিয়ে? কিছু কিছু বক্তা নাকি একহাত দিয়ে মোসাফাহা করাকেই সুন্নত আখ্যায়িত করে থাকেন!

আসল কথা হলো, মোসাফাহা শব্দের অর্থই হচ্ছে একজনের হাত আরেকজনের হাতের সঙ্গে মিলানো, জড়ানো। তবে যেসব বক্তা শুধু একহাত দিয়ে মোসাফাহা করাকেই সুন্নত বলে দাবি করছেন, তাদের উচিত এমন কোনো হাদিস দলিল হিসেবে উপস্থাপন করা; যাতে একহাত দ্বারা মোসাফাহার কথা ব্যক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এতটুকুই যথেষ্ট নয়। তাদের উচিত এমন কোনো হাদিসও পেশ করা; যাতে দুহাত দ্বারা মোসাফাহা করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই দুটি বিষয় প্রমাণ করতে না পারলে তাদের দাবিটা প্রতিপাদিত হবে না।

সহিহ বোখারিতে বিশিষ্ট সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এর সূত্রে বর্ণিত একটি হাদিস। তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ (সা.) তাশাহহুদ শিক্ষা দিয়েছেন যেমন কোনো সূরা কাউকে শিক্ষা দেওয়া হয়। সে সময় আমার হাত রাসূলুল্লাহ (সা.) এর উভয় হাতের মধ্যে ছিল। (বোখারি: ৬২৬৫)

তো এই বিশুদ্ধ বর্ণনায় স্পষ্টভাবে বিবৃত হয়েছে, ইবনে মাসউদ (রা.) এর হাত নবীজি (সা.) এর উভয় হাতের মধ্যখানে ছিল। তাছাড়া এটা সুদূরপরাহত চিন্তা যে, নবীজি দুহাত বাড়াবেন আর ইবনে মাসউদ একহাত এগিয়েই ক্ষান্ত হবেন। ইবনে মাসউদ একহাত বাড়িয়েছিলেন- কথাটি যদি কিছুসময়ের জন্য মেনেও নেয়া হয় তবে এটা তো অনস্বীকার্য যে, এক্ষেত্রে নবীজির আমল (দুহাত বাড়িয়ে দেয়া) অনুকরণের অধিক উপযুক্ত।

এখন যদি কেউ প্রশ্ন করেন, কোন পদ্ধতিটি প্রণিধানযোগ্য? তাহলে বলা যাবে, উভয় পদ্ধতিই বৈধ। একটি (দুহাত দ্বারা মোসাফাহা) প্রমাণিত হয় 'হাদিসে ফি'লি' বা নবীজি (সা.) এর কর্মময় হাদিস দ্বারা আর অন্যটি (একহাত দ্বারা মোসাফাহা) প্রমাণিত হয়ে ' হাদিসে তাকরিরি' বা ইবনে মাসউদ (রা.) এর কর্মের ব্যাপারে নবীজি (সা.) এর মৌন সমর্থন দ্বারা। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, মোসাফাহা যে পদ্ধতিতে নবীজি (সা.) এর দ্বারা সম্পাদিত হয়েছে সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা আমাদের জন্য উচিত। উপর্যুক্ত হাদিসটি মোসাফাহা বিষয়ক নয়- এমনটা বলা অজ্ঞতা। স্বয়ং ইমাম বোখারি (রহ.) [মৃ. ২৫৬ হি.]

এ হাদিসকে মোসাফাহা বিষয়ক একটি দলিল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি এই হাদিসটি বর্ণনার আগে শিরোনাম দিয়েছেন এভাবে, ‘দুহাত ধরে মোসাফাহার অধ্যায়: হাম্মাদ ইবন জায়দ (রহ.) আবদুল্লাহ ইবনুল মোবারক (রহ.) এর সঙ্গে দুহাত দ্বারা মোসাফাহা করেছেন।" (বোখারি: ৬২৬৫) তারপর ইমাম বোখারি (রহ.) এই শিরোনামের অধীনে ইবনে মাসউদ (রা.) এর সূত্রে বর্ণিত উপরিউক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়