রাশিদ রিয়াজ : ভারতে পথদুর্ঘটনাগ্রস্ত এক ব্যক্তিকে বাঁচাতে ঈদের ঠিক একদিন আগে রোজা ভেঙে রক্ত দিলেন এক চিকিত্সক। টানা একমাস ধরে ধর্মীয় এই আচার পালন করে আসছিলেন অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিত্সক ডা. গোলাম মহম্মদ মইনুদ্দিন। ঈদের ঠিক আগের দিন রোজা ভাঙার পর ৩৭ বছরের ডাক্তারবাবু বললেন, 'এর চেয়ে পবিত্র কিছু আর হয় না।'
জীবনকে আদর করে যায় ঈদের আকাশ। ফের এক নিদারুণ মানবতার নজির। এর আগে, এমন খবর ছিল দুটি। ভারতের বিহার ও উত্তরপ্রদেশে দুই ব্যক্তি শিশুকে বাঁচাতে রমজানের উপোস ভেঙে রক্ত দিয়েছিলেন। এ বার মানবতার সাক্ষী খাস কলকাতা। যদি শুক্রবারই ঈদ ঘোষণা হয়ে যায়, তাহলে এদিনই সম্ভবত শেষ রোজা। টানা একমাস ধরে ধর্মীয় এই আচার পালন করে আসছিলেন অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিত্সক ডা. গোলাম মহম্মদ মইনুদ্দিন। বৃহস্পতিবার ফুলবাগানে দুর্ঘটনাগ্রস্ত এক ব্যক্তির জন্য এবি পজিটিভ রক্তের প্রয়োজন পড়ে।
মইনুদ্দিনেরও একই ব্লাড গ্রুপ । তিনি আর বিষয়টি দু বার ভাবেননি। রোগীকে বাঁচাতে এক লহমায় ভেঙে ফেলেন টানা একমাস ধরে করে আসা রমজানের উপোস। নিয়ম মেনে খাওয়া দাওয়া করে রক্তদান করেন তিনি।
ঈদের ঠিক আগের দিন রোজা ভাঙতে হল বলে অবশ্য এতটুকু আক্ষেপ নেই ৩৭ বছরের ডাক্তারবাবুর। বরং বললেন, 'এর চেয়ে পবিত্র কিছু আর হয় না।'
দিন কয়েক আগেই এক অদ্ভুত নিদর্শন দেখেছিল কলকাতা। মরণাপন্ন রোগীর জন্য সবার কাছে রক্তের আবেদন করেছে এক পরিবার। সাড়াও মিলেছে। তবে গ্রহীতার পরিবার আগে রক্তদাতার নাম জানতে চেয়েছে। হিন্দু শরীরে তারা মুসলিমের রক্ত চায় না। মানুষের জীবনের আগেও তাদের কাছে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে ধর্ম। সেই কলকাতাতেই আজ এমন এক নজির তৈরি হল, যেখানে মানবধর্মকেই সবার আগে রাখলেন এই মুসলিম চিকিত্সক।
মানবতার পাশাপাশি এই ঘটনা আশার আলো দেখাবে ডাক্তার-রোগীর সম্পর্কের ক্ষেত্রেও। যা এখন অবিশ্বাস ও ক্ষোভের সম্পর্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় রোজই রোগীর পরিবারের হাতে ডাক্তারদের মার খাওয়ার খবর আসছে। অনেক ক্ষেত্রে ডাক্তাররাও হয়ে উঠেছেন ব্যবসায়ী। তাই বেড়েছে তিক্ততা। ডাক্তার ও রোগীর প্রকৃত সম্পর্কটা ঠিক কী, তা-ও দেখিয়ে দিল এই ঘটনা। এই সময়
আপনার মতামত লিখুন :