শিরোনাম
◈ ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বিলে জো বাইডেনের সাক্ষর  ◈ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর ◈ বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে ইথানল নিতে পারে, যা তেলের চেয়ে অনেক সস্তা: রাষ্ট্রদূত ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের  ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগ সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা  ◈ হিট স্ট্রোকে রাজধানীতে রিকশা চালকের মৃত্যু

প্রকাশিত : ১৫ জুন, ২০১৮, ০৭:৪৩ সকাল
আপডেট : ১৫ জুন, ২০১৮, ০৭:৪৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বোটার গোড়া পঁচে গেছে, বন্ধ ইউরোপে আম রপ্তানী

মতিনুজ্জামান মিটু : বোটার গোড়ায় পঁচে যাওয়ায় আমদানীকারকরা আম নিচ্ছেনা। এতে বন্ধ হয়ে গেছে ইউরোপের দেশগুলোতে আম রপ্তানী। সাতক্ষীরা থেকে মাত্র তিন চালান আম পাঠানোর পর গত ১০ জুন থেকে ইউরোপে আম পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়।

গত ১৯ মে ইতালিতে সাতক্ষিরার এক মেট্রিক টন হিমসাগর দিয়ে শুরু হয়েছে চলতি মৌসুমের আম রপ্তানী। আমের এ চালানটি পাঠায় রাজধানী ঢাকার ঢাকার এন আর এন্টারপ্রাইজ। আম রপ্তানী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের কৃষিবিদদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, রপ্তানী করা আম অপরিপক্ক থাকায় বোটার গোড়ার কাছে পঁচে যায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাতক্ষীরা সদরের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ইউরোপে পাঠানো আম পঁচে গেছে। এজন্য আমদানিকারকরা নেয়নি। গত ১৯ মে থেকে গত ৯জুন পর্যন্ত সাতক্ষিরা থেকে মোট ২৫. ১৩৩ মেট্রিক টন আম পাঠানো হয়। ১৯ মে প্রথম চালানে পাঠানো হয় ১৯.৫৫ মেট্রিক টন আম। ৫জুন দ্বিতীয় এবং ৯জুন তৃতীয় চালানের আম রপ্তানী করা হয়। ৯ জুন সাতক্ষীরা থেকে মোট ২৬৮৮৩ কেজি হিম সাগর, ৫৫০ কেজি ল্যাংড়া ও ৪০ কেজি আম্রপালি আম ইউরোপে রপ্তানীর জন্য পাঠানো হয়। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদরের ১৪৭১৫ কেজি, কলারোয়ার ৫৫৯১ কেজি, শার্শার ১৭০০ কেজি, তালার ৪৬০ কেজি ও আশাশুনি উপজেলার ৫১০৭ কেজি আম ছিল। এসময় সাতক্ষীরা থেকে রাজধানীর আগোরা চেইন শপে বিক্রির জন্য পাঠানো হয় ৫৬০৭০ কেজি আম।

আমজাদ হোসেন বলেন, চুক্তি অনুযায়ী সাতক্ষীরার চাষিদের কাছ থেকে আম্রপালি আম নেয়ার কথা ছিল। এখানকার চাষিরা সে মোতাবেক চুক্তির দায়িত্বে নিয়োজিত সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফোন করে জেনেছেন, তারা এখন চাপাইনবাবগঞ্জে রয়েছেন। আম্রপালি নেয়ার কথা থাকলেও এবছর আর তারা তা শেষ পর্যন্ত নেবে বলে মনে হয়না। এতে স্থানীয় চুক্তিবদ্ধ আম চাষিরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।

এদিকে এবিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের চাপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’২০১৭ প্রাপ্ত কৃষিবিদ ড. মো. শরফ উদ্দিন বলেন, আমি জেনেছি এ বছর রপ্তানী শুরুর পর প্রথম পর্যায়ের কয়েকটি চালানের আম বোটার গোড়া দিকে পঁচা পাওয়া যায়। এজন্য আমদানীকারকরা এখন আর আম নিচ্ছেনা। চুক্তিবদ্ধ চাষিদের আম নেয়ার জন্য সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া’র কর্মকর্তারা চাপাইনবাবগঞ্জে অবস্থান করছেন কিনা জানতে চাইলে শরফ উদ্দিন বলেন, না ওরা এখনও আমাদের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেন নি। ঈদের ব্যস্ততা ও ছুটি শুরু হয়ে গেছে। যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে তাতে শেষ পর্যন্ত এখানকার আম রপ্তানী নিয়ে কি হবে তা বলা যাচ্ছেনা।

অপরিপক্ক থাকলে আম বোটার গোড়া থেকে পঁচে যায়। সাতক্ষীরা, যশোর ও মেহেরপুরের পর রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জের আম রপ্তানীর কথা ছিল। বোটা পঁচার ঘটনায় সৃষ্ট অচলাবস্থার কারণে এ বছর আমের পুরো বাজারই নষ্ট হয়ে গেছে। এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মেহেরপুরের উপ পরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, গত বছর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উৎপাদিত আমের ৮০ ভাগ না নেয়ায় চলতি মৌসুমে মেহেরপুরের চাষিরা রপ্তানীতে উৎসাহী হননি। যথাযথ উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে যদি আম রপ্তানী করা হয় তবে তা পঁচে যাওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারেনা।

চলতি মৌসুমে আম রপ্তানীর লক্ষ্যমাত্রা এক হাজার মেট্রিক টন। এ যাবত রপ্তানী হয়েছে মাত্র ৭৮ মেট্রিক টন আম। ইউরোপ আর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পাঠানো হয়েছে এসব আম। এর মধ্যে ইউরোপিয় ইউনিয়নের শর্ত ও পরামর্শে নির্মিত রাজধানী ঢাকার শ্যামপুরের কেন্দ্রীয় প্যাকেজিং এর মাধ্যমে ৩০ মেট্রিক টন ইউরোপে এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ স্টেশনের মাধ্যমে ৪৮ মেট্র্রিক টন আম মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পাঠানো হয়।

উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. আজহার আলী পিএইচডি বলেন, গত ১১ জুন পর্যন্ত ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ৭৮ মেট্রিক টন আম এবং ১৬৬ মেট্রিক টন কাঁঠাল রপ্তানী হয়েছে। এর মধ্যে ইউরোপে ৩০ মেট্রিক টন আম ও ৫০ মেট্রিক টন কাঁঠাল পাঠানো হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে গেছে ৪৮ মেট্রিক টন আম ও ১১৬ মেট্রিক টন কাঁঠাল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়