মাওলানা এসএম আরিফুল কাদের: প্রথম মানব ও নবি হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে শেষ নবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত সকল নবি-রাসুল (আ.) আনীত শিক্ষাই মূলত ইসলামি তথা দ্বীনি শিক্ষা। যতদিন পর্যন্ত এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে ততদিন পর্যন্ত মহাপ্রলয় বা কিয়ামত সংঘটিত হবে না। যে শিক্ষার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তা‘য়ালার সাথে তাঁর বান্দার সম্পর্ক তৈরি হয়, বস্তুত: সেটাই ইসলামি তথা দ্বীনি শিক্ষা। আর এ শিক্ষার পূর্ণতা বিধান করেছেন আমাদের নবী হযরত রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এতে যেমন পরলৌকিক জীবনে মুক্তির পথ রয়েছে, ঠিক তেমনি ইহলৌকিক জীবনের সকল কর্মকাণ্ড আল্লাহ পাকের রেজামন্দি অনুযায়ী সুষ্ঠু ও সুচারু রূপে আঞ্জাম দেওয়ার এবং সুন্দর জীবন গড়ে তোলার সুষ্পষ্ট নীতিমালাও রয়েছে। এজন্য এ শিক্ষাকে সার্বজনীন শিক্ষা হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। অতএব এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা যে কত বেশি তা সহজেই অনুমেয়।
দ্বীনি শিক্ষার প্রতি জোর তাগিদ দিয়ে মহান আল্লাহ তা‘য়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘তাদের দলের একটি অংশ কেন বের হলো না; যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্ব-জাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে। [সূরা তাওবা : ১২২] উল্লেখিত আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহপাক প্রত্যেককে কোন না কোনভাবে দ্বীন শিক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন। একদল শিক্ষার জন্য বের হবে এবং ফিরে এসে অপর দলকে শিখাবে। এভাবে সকলেই এর অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে। ইমাম কুরতুবী রাহ্. এ আয়াত সম্পর্কে বলেন, আয়াতটি দ্বীনি শিক্ষা লাভ করার মৌলিক দলিল।
হাদীসের দৃষ্টিতে দ্বীনি শিক্ষার জন্য সাহাবায়ে কেরাম রা. এর বড় একটি দল পার্থিব আয় উন্নতির ও ব্যবসা বানিজ্য ছেড়ে সর্বদা রাসুলুল্লাহ (সা.) এর দরবারে পড়ে থাকতেন। কেননা, তিনি (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর কখন কী বিধান আসে; আর তা জেনে আমলে পরিণত করার জন্য সাহাবায়ে কেরাম রা. সর্বদা প্রস্তুত থাকতেন। যেহেতু দ্বীনি ইলম আল্লাহ প্রদত্ত, সেহেতু আল্লাহর পছন্দনীয় ব্যক্তিই পাবে এর পরশ। হাদিসের ভাষায় রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, আল্লাহ পাক যার কল্যাণ চান; তাকে দ্বীনের বুঝ দান করেন। [সহিহ বুখারী, সহিহ মুসলিম, মিশকাত ও কানযুল উম্মাহ] এমনকি এই ইলম সর্বস্তরের জনগণের জন্য ফরজও করা হয়েছে। যা হাদীসের ভাষায় ইরশাদ হয়েছে, ইলমে দ্বীন অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ওপর ফরজ। [সহিহ ইবনে মাজাহ]
আপনার মতামত লিখুন :