সুজন কৈরী : পুরান ঢাকার বংশালের নিমতলীর একটি বাড়িতে নকল মদ তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। কারখানটিতে অভিযান চালিয়ে মো. নাসির মিয়া (২৭) নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। নাসির বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পুরনো মদের বোতলে নকল মদ ভরে তা বাজারজাত করতো।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে নীমতলীর নবাব কাটরার ৯/১ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নাসিরকে আটক করে ডিএনসির রমনা সার্কেল।
রমনা সার্কেলের পরিদর্শক এ কে এম কামরুল ইসলাম বলেন, অভিযানকালে নাসিরের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুটি ঘর থেকে ১শ’ বোতল বিভিন্ন ব্রান্ডের বিলেতি মদ, ৩ হাজার বিদেশি মদের খালি বোতল, বিপুল সংখ্যক নকল স্টিকার, ৩ হাজার বোতলের ছিপ ও ছিপে ছাপ বসানোর ডাইস জব্দ করা হয়েছে।
কামরুল জানান, নাসিরের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের বালিগাঁও গ্রামে। তার বাবার নাম আতাউর রহমান। সে পুরনো জিনিসপত্র কেনাবেচার আড়ালে বিদেশি নকল মদ তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠা করে। দেড়বছর ধরে সে এ ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানিয়েছেন। তার আট দশজন প্রতিনিধির মাধ্যমে এই নকল মদ বিদেশি বলে ঢাকার বাইরে বিক্রি করে। তার সঙ্গে মো. আজিজ নামে পটুয়াখালীর আরো এক ব্যক্তি জড়িত আছে।
জিজ্ঞাসাবাদের নাসির জানিয়েছে, ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে বিদেশি মদের বোতল তারা ২০/৩০ টাকা করে কেনে। এরপর সেগুলো ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে। বিদেশি বিভিন্ন নামি মদের ব্র্যান্ডের এসব কোম্পানির নাম সংবলিত স্টিকার তৈরি করে তা পুনরায় বোতলে লাগিয়ে দেয়। এরপর কর্কের ওপর ডাইস দিয়ে বিশেষ কায়দায় সিল দেয়। তারপর বোতলের ভেতরে ক্যামিক্যাল দিয়ে বানানো নকল মদ ভর্তি করে তার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় পাঠায়।
নাসির আরো জানিয়েছে, অনেকে তার কাছ থেকে কেবল বোতল কিনে নিয়ে যায়। তারা আবার নিজেরাই মদ তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে। একটি মদের বোতল পুনরায় স্টিকার, ছিপ ও ধুয়েমুছে ৬ টাকা করে বিক্রি করে। তার ব্যবসায়িক পার্টনার আজিজ অভিযানের সময় পালিয়ে গেছে। নাসিমের কাছ থেকে নিউমার্কেট এলাকার সাগর, সাভার এলাকার সুইট ও মোহাম্মদপুর এলাকার আলমগীর নামে তিন যুবক নকল এই বিদেশি মদ বাজারজাত করে। তবে তাদের কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কামরুল জানান, মদ বিক্রির জন্য তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোগো সংবলিত শপিং ব্যাগ ব্যবহার করে।
আপনার মতামত লিখুন :