রবিন আকরাম : খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক নিউরো সার্জন অধ্যাপক সৈয়দ ওয়াহিদুর রহমান বলেছেন, খালেদা জিয়ার প্রস্রাবে বার বার ইনফেকশন হওয়ায় কিডনি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার আগে থেকেই কিছু ক্রনিক্যাল ডিজিজে ভুগছেন। তার আর্থারাইটিসের (বাত) সমস্যা আছে অনেক আগে থেকেই। তার সারা শরীরে ব্যথা। তার দীর্ঘকালের ডায়াবেটিস এবং ব্লাড প্রেসার আছে। তার প্রস্রাবের ইনফেকশন আছে। এবং বার বার ইনফেকশন হওয়ায় কিডনি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। ওনার রাতে রাতে একটু একটু করে জ্বর হচ্ছে। ওনার উঠতে বসতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। এবং আগে দুই চোখেই অপারেশন হওয়ায় চোখ দু'টি লাল হয়ে আছে।
ওয়াহিদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে আরো বলেন, সর্বশেষ ৫ তারিখ তিনি মাথা ঘুড়ে পরে যান। তার সাথে থাকা এটেনডেন্ট মেয়েটি তাকে তোলে। এই যে ৫ থেকে ৭ মিনিটে তিনি পড়ে গেলেন এবং তাঁকে তোলা হল- এই সময়ের ঘটনা তিনি মনে করতে পারছেন না। উনি বসে থাকতে পারছেন। কিন্তু হাঁটলে বা দাঁড়ালে যেকোনো একদিকে হেলে যাচ্ছেন।
‘‘এখন যেটা হয়েছে তাকে আমরা বলি ব্রেইনে ট্রানজিয়েন্ট স্কিমিক অ্যাটাক। এর ফলে মস্তিস্কে রক্ত চলাচল স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয়। এখন উনি স্বাভাবিক আছেন। কিন্তু ভয়ের ব্যাপার হল আগে যে তার রোগ এবং বর্তমান যে অবস্থা এবং যা বয়স তাতে তিন মাসের মধ্যে স্ট্রোকে টার্ন করতে পারে। এখনো হয়নি। তবে আশঙ্কা আছে।
এদিকে খালেদা জিয়া যে ৫ জুন মাথা ঘুড়ে পরে গিয়েছিলেন সে খবর কারা কর্তৃপক্ষের কাছে ছিল না বলে শনিবার জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। খালেদা জিয়াকে কখন হাসপাতালে নেওয়া হবে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা দুপুরের পর নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু ঠিক কখন খালেদা জিয়াকে পরীক্ষার জন্য নেওয়া হবে তা নির্ধারণ করবেন আইজি প্রিজন্স। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) বড় বড় চিকিৎসক ও গবেষকরা রয়েছেন৷ আর খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকেরা তো আছেনই। সুতরাং সেখানেই তাঁর চিকিৎসা হবে।
তবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আজ সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেয়া হতে পারে। রোববারই তাকে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে নেয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানতে রবিবার কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য জানা যায়নি৷ তবে নাম প্রকাশ না করে কারাগারের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘‘খালেদা জিয়া ৫ জুন মাথা ঘুড়ে পরে গিয়েছিলেন সত্য৷ তবে এটা রোজা রাখার কারণে হয়েছিল বলে আমরা মনে করি৷''
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত৷ ওই দিনই তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়৷
আপনার মতামত লিখুন :