শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ১১ জুন, ২০১৮, ০৮:৪৯ সকাল
আপডেট : ১১ জুন, ২০১৮, ০৮:৪৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঈদযাত্রায় ভোগাতে পারে মেঘনা-গোমতী সেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক: এবার ঈদযাত্রায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ, মেঘনা ও গোমতী সেতু, সীতাকুন্ড ও দেবীদ্বারে ভোগান্তির শিকার হতে পারেন ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ। ঈদযাত্রায় যানবাহনের চাপ বেশি হবে এবং যানজটের ভোগান্তিতে যাত্রীদের পড়তে হবে ধরে নিয়েই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কে খানাখন্দ খুব একটা নেই। রাজধানী থেকে বের হওয়ার পথে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড ও শিমরাইলসহ বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত সহনীয়ই আছে। ফেনীর মহিপালেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের অবস্থা খুবই বিপন্ন।

সড়ক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা-চট্টগ্রামমহাসড়ক চার লেনের হলেও এখনো যানজটের প্রধান কারণ দুই লেনের মেঘনা ও গোমতী সেতু। চার লেনের গাড়ি দুই লেনের সেতু দিয়ে পার হতে গিয়ে গতি এমনিতেই কমে যায়। ঈদের মৌসুমে কয়েকগুণ বেশি যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করবে। সেতু দুটির পাশে যানজটও সৃষ্টি হবে।

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর ও খাতুনগঞ্জের পণ্যবাহী গাড়ি টোল রোড দিয়ে চলাচলে বাধ্য করায় সীতাকু-ে যাত্রীবাহী বাসের স্বাভাবিক গতি কমে যায়। এ ছাড়া সীতাকুন্ড এলাকায় ভারী শিল্প কারখানাগুলোর গাড়িগুলো সড়কের পাশেই পার্কিং করা হয়।

হাইওয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের এএসপি মোহাম্মদ ফরিদ আমাদের সময়কে বলেন, ফেনীতে ওভারপাস নির্মাণ কাজের কারণে যানজট তৈরি হয়েছিল। ওভারপাস দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। ফলে এখন আর আগের মতো সমস্যা নেই। তিনি বলেন, আশা করছি এবার যানজট হবে না। এরপরও আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করেছি।চট্টগ্রাম নগরীর যানজট কমাতে বন্দর ও খাতুনগঞ্জমুখী পণ্যবাহী গাড়ি বন্দর সংযোগ সড়কে দিয়ে চলতে বাধ্য করে পুলিশ। এ সময় ফৌজদারহাট পোর্ট কানেক্টিং সড়ক অংশে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় দিকের গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এতে যানজট সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকু- ও মিরসরাই অংশে কবির স্টিল রি-রোলিং মিলস (কেএসআরএম), বিএসআরএমসহ বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের নিজস্ব পরিবহনগুলো মহাসড়কে পার্কিং করা থাকে। এটিও যানজটের অন্যতম কারণ।

ঈদের তিন দিন আগে ও পরে পণ্যবাহী গাড়ির চাপ কম থাকে জানিয়ে আন্তঃজেলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি হাজি মুনির আহমদ আমাদের সময়কে বলেন, ঈদের আগে-পরে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল অর্ধেকে নেমে আসে। এ সময় যাত্রীবাহী বাসচালকদের বেপরোয়া গতির কারণে যানজট সৃষ্টি হয়।সিদ্ধিরগঞ্জ : রাজধানী সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের বেশ কয়টি পয়েন্টে যানজটের কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার থেকে কাঁচপুর ব্রিজ পর্যন্ত মহাসড়ক আট লেনের হওয়ায় দ্রুত গাড়িগুলো চলে আসে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে। শিমরাইলে বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার রয়েছে। সেখানে এলোমেলোভাবে যাত্রীবাহী বাস পার্কিং করে যাত্রী ওঠানামা করায় সৃষ্টি হয় যানজট। এ ছাড়া সাইনবোর্ড, শিমরাইল ডাচ্-বাংলা ব্যাংক সংলগ্ন ইউটার্নগুলোতে গাড়ি ঘুরানোর সময় যানজট সৃষ্টি হয়।

শিমরাইল মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পরিদর্শক শরীফ জানান, যানজট সৃষ্টির কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম ইউটার্নগুলো দিয়ে উল্টোপথে গাড়ি চলাচল, প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালনা ও রাস্তার মাঝে গাড়ি বিকল হয়ে যাওয়া। এ ছাড়াও অনেক সময় রাতে সিগনালগুলোতে চালকরা গাড়ি থামিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। তখনই মূলত বেশি যানজট সৃষ্টি হয়।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, যাত্রাবাড়ী থেকে মেঘনা ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা ভালো। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে ভোগান্তি ছাড়াই যাত্রীরা এবারের ঈদযাত্রা করতে পারে। গতকাল রবিবার সকালে শিমরাইল মোড়ে কথা হয় বাসচালক ইসমাইলের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে এই সড়কে যানজট তেমন নেই। এখন সামনের দিনগুলোতে কী হয় বলা যাচ্ছে না।

সোনারগাঁও : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে মেঘনা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এখন ভালো আছে। তবে এতসব আয়োজনের মধ্যেও ফিটনেসবিহীন পুরনো যানবাহন ও অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল বন্ধ না করতে পারলে দুর্ঘটনায় পড়ে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হতে পারে। মহাসড়কে যানজটের মূলে রয়েছে অতিরিক্ত ওজনবাহী পুরনো যানবাহন এবং দুই লেনবিশিষ্ট মেঘনা সেতু। নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের ভিটিকান্দি উপ-বিভাগের প্রকৌশলী সাহরিয়ার আলম বলেন, মহাসড়কের মেঘনা সেতু দিয়ে গড়ে প্রতি ৩ সেকেন্ডে একটি যানবাহন পার হয়। উভয় দিকে চার লেনের মহাসড়কের যানবাহন দুই লেনের সেতুতে ওঠার সময় গতি ধীর হয়ে যায়। এতে পিক আওয়ারে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন হয়ে যায়। আর প্রায়ই পুরনো যানবাহন সেতুর ওপরে বিকল হয়ে পড়ে। বিকল হওয়া যানটি সরানোর সময়টুকুর মধ্যেই দীর্ঘ যানজট হয়ে যায়। ঈদকে সামনে রেখে বিকল্প এবং অতিরিক্ত ব্যবস্থা হিসেবে আমরা দুটি ফেরি চালুর ব্যবস্থা করছি। মঙ্গলবার সেটি সেতুমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন।

গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) : গত ২২ মে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সার্বিক অবস্থা পরিদর্শনে আসেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় আসন্ন ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। তখন মহাসড়কের ভাঙা অংশ মেরামতের জন সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ৮ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন মন্ত্রী। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে মহাসড়কের গজারিয়া অংশের ১৩ কিলোমিটারের বিভিন্ন পয়েন্টে সৃষ্ট খানাখন্দ মেরামত করা হয়নি।

ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আলগীর হোসেন জানান, মহাসড়কের বেশ কয়েকটি স্পটে খানাখন্দ রয়েছে। সেগুলো কেন সংস্কার করা হয়নি, তা তার জানা নেই।কুমিল্লা : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত ৯৭ কিলোমিটার অংশ মোটামুটি চলাচল উপযোগী। এ এলাকায় কোথাও ভাঙা বা গর্ত নেই। তবে যানজটের মূল কারণ মেঘনা সেতুর টোল প্লাজা। এখানে পণ্যবাহী গাড়ির ওজন মাপা হয়। এতে সময় বিলম্ব এবং চালকের সঙ্গে টাকা নিয়ে বাগবিত-ার কারণে গাড়ি থেকে গিয়ে যানজট সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া দাউদকান্দির গৌরীপুর চৌমুহনীতে এবং ইলিয়টগঞ্জে এলোপাতাড়ি গাড়ি রেখে যাত্রী ওঠা-নামা করানোর কারণে যানজট লাগে।

দেবীদ্বার (কুমিল্লা) : ঈদযাত্রায় ভোগান্তি ও দুর্ভোগের কারণ হতে পারে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের সফুরা থেকে কোম্পানীগঞ্জ গোমতী ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার সড়ক। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে দায়সারা সংস্কারকাজ বছর না যেতেই ফিরেছে পুরনো চেহারায়। টানা বৃষ্টিতে দিন দিন পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটে চলাও দায়। দেবীদ্বার পৌরসভার ভিরাল্লা, বারেরা, নিউমার্কেট বাসস্ট্যান্ড, পোস্ট অফিস সংলগ্ন, রেয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, দেবীদ্বার থানা সংলগ্ন ও মহিলা কলেজ হয়ে ভিংলাবাড়ি মির্জানগর পর্যন্ত এখন মরণফাঁদ। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ দেবীদ্বার রেয়াজ উদ্দিন মডেল স্কুলের প্রধান ফটকের সামনের অংশটি। বেশিরভাগ স্থানেই কার্পেটিং উঠে গেছে। কোথাও কোথায়ও ইট উঠে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুদ্দিন জানান, দেবীদ্বার অঞ্চলের সড়কটি সংস্কারের জন্য বারবার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু বৃষ্টির কারণে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।ফেনী : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী ফতেহপুর রেলওয়ে ওভারপাসটি ঈদের আগে চালু হচ্ছে না। তবে দুই লেন চালু থাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর ২৭ কিলোমিটার অংশেও নেই কোনো খানাখন্দ। ফতেহপুর রেল ওভারপাসের দ্বিতীয় লেনটি চালু হওয়ার পর থেকে গত ১৫ দিন ধরে স্বাভাবিক নিয়মে গাড়ি চলছে। সূত্র: আমাদেরসময়

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়