সাইদুর রহমান : রোজার উদ্দেশ্য শুধু বাহ্যিক পানাহার এবং কামাচার থেকে বিরত থাকা নয় বরং সর্বাঙ্গের সংযম অবলম্বন করা। এজন্য রোযাদারের উচিৎ যেন তার জিভও রোযা রাখে।
অর্থাৎ, প্রত্যেক নোংরা কথা, পরচর্চা বা গীবত, চুগলখোরী, অশ্লীল ও মিথ্যা কথা থেকে বিরত থাকা। এ বিষয়ে হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি রোযা রেখে নোংরা কথা ও তার উপর আমল ত্যাগ করতে পারল না, সে ব্যক্তির পানাহার ত্যাগ করার মাঝে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।’’ (বুখারী ৬০৫৭, ইবনে মাজাহ ১৬৮৯, আহমাদ, মুসনাদ ২/৪৫২, ৫০৫, )
রোযাদারের উচিৎ, অশ্লীলতা, হৈ-হট্টগোল ও গালাগালি করা থেকে দূরে থাকা এবং ভদ্রতা, আদব ও গাম্ভির্য অবলম্বন করা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের কারো রোযার দিন হলে সে যেন অশ্লীল না বকে ও ঝগড়া-হৈচৈ না করে; পরন্তু যদি তাকে কেউ গালাগালি করে অথবা তার সাথে লড়তে চায়, তাহলে সে যেন বলে, ‘আমি রোযা রেখেছি, আমার রোযা আছে।’’ (বুখারী ১৯০৪, মুসলিম ১১৫১নং)
তিনি আরো বলেন, ‘‘পানাহার থেকে বিরত থাকার নাম রোযা নয়। আসলে রোযা হল, অসার ও অশ্লীল কথা ও কর্ম থেকে বিরত থাকার নাম। অতএব যদি তোমাকে কেউ গালাগালি করে অথবা তোমার সাথে কেউ মুর্খামি করে, তাহলে তুমি তাকে বল, ‘আমি রোযা রেখেছি, আমার রোযা আছে।’’ (ইবনে খুযাইমাহ, সহীহ, ইবনে হিববান, সহীহ, হাকেম, মুস্তাদ্রাক, সহীহ তারগীব, আলবানী ১০৬৮, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ৫৩৭৬নং)
কেউ গালি দিলে করণীয় সর্ম্পকে হাদীসে এসেছে, ‘‘রোযা রেখে তুমি কাউকে গালাগালি করো না। কিন্তু যদি তোমাকে কেউ গালাগালি করে, তাহলে তুমি তাকে বল, ‘আমি রোযা রেখেছি। আর সে সময় যদি তুমি দাঁড়িয়ে থাক, তাহলে বসে যাও।’’[৬] [৬] (ইবনে খুযাইমাহ, সহীহ ১৯৯৪, ইবনে হিববান, সহীহ, মাওয়ারিদ ৮৯৭, সহীহ তারগীব, আলবানী ১০৬৮নং)
কারণ, ক্রোধান্বিত অবস্থায় বসে গেলে ক্রোধ প্রশমিত হয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের কেউ যখন দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ক্রোধান্বিত হয়, তখন সে যেন বসে যায়। তাতে তার ক্রোধ প্রশমিত হলে ভাল, না হলে সে যেন শুয়ে যায়।’’ (আহমাদ, মুসনাদ ৫/১৫২, আবূ দাঊদ, ইবনে হিব্বান)
আপনার মতামত লিখুন :