শিরোনাম
◈ ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বিলে জো বাইডেনের সাক্ষর  ◈ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর ◈ বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে ইথানল নিতে পারে, যা তেলের চেয়ে অনেক সস্তা: রাষ্ট্রদূত ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের  ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগ সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা  ◈ হিট স্ট্রোকে রাজধানীতে রিকশা চালকের মৃত্যু

প্রকাশিত : ১০ জুন, ২০১৮, ০৪:১৮ সকাল
আপডেট : ১০ জুন, ২০১৮, ০৪:১৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মাদকের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে

সুলতানা কামাল : প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী বন্দুক যুদ্ধে মারা গেলেন । অপরাধী যেই হোক না কেন, তার আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার আছে। আপাত দৃষ্টিতে যুক্তিসঙ্গত। তবে বর্তমান সমাজে মাদকের ভয়াবহ বিস্তারকে বাস্তবতার নিরিখে দেখতে হবে। আমরা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি, প্রচলিত আইন ও আদালত দিয়ে ভয়ংকর মাদক মাফিয়া চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তার ওপর পুলিশের একটা বিরাট অংশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অনেক রাজনৈতিক কর্মী মাদক পাচার ও ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছে। যাদের দিয়ে সরকার মাদক নিয়ন্ত্রণ করবে, তারাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছেন মাদক মাফিয়াদের দ্বারা অর্থাৎ সর্ষের ভেতর ভূত।

প্রচলিত আদালতে প্রচলিত আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা সম্ভব হয় নাই। তাই বঙ্গবন্ধুর সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস আইন ১৯৭৩ প্রণয়ন করেছিলেন। সংবিধানে সাধারণ নাগরিকদের জন্য যেসব মৌলিক অধিকার সংরক্ষিত আছে, এই আইনে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের সেসব অধিকার খর্ব করা হয়েছিল। মাদক পাচারকারী ও ব্যবসায়ীদের প্রচলিত আইনে বিচার করার সম্ভব নয়। কারণ, তারা সাধারণ নাগরিক নয়। এরা অত্যন্ত ভয়ংকর দস্যু। এদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে আসবে এমন দুঃসাহসী মানুষ পাওয়া যাবে না, যার ঘাড়ের ওপর দুটি মুন্ডু আছে।

তাই মাদক ব্যবসায়ীদেরকে রুখতে হলে যুদ্ধাপরাধীদের মত বিশেষ আইনের অধীনে বিশেষ আদালতে বিচার করতে হবে। আমরা তো যুদ্ধের মধ্যে নেই। সেই জায়গায় এমনিভাবে দিনে ৫/৬ জন যদি বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়, সেখানে উদ্বিগ্ন হওয়ার কথা। আমরা যুদ্ধের ভিতর নাই আবার আছি। মায়ানমার তো অঘোষিতভাবে আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে। তারা প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভিতর বলপূর্বক ঢুকিয়ে দিয়েছে, যারা প্রতিদিন আমাদের এই ক্ষুদ্র ভূখন্ডে শতাধিক শিশুর জন্ম দিচ্ছে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস করার জন্য মায়ানমার সীমান্ত এলাকায় শত শত ইয়াবা কারখানা তৈরী করে চোরাই পথে বাংলাদেশে পাচার করছে।

আমাদের যুবসমাজ যদি মাদক আসক্ত হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তাহলে আগামী দুই দশকের মধ্যে আমরা যে সম্ভাবনাময়ী বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার স্বপ্ন দেখছি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে জঙ্গিবাদ এবং পেট্রোল বোমা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছিল। মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হলেও জিরো টলারেন্স দরকার। সরকার সেই নীতিই গ্রহণ করেছে। তবে ক্রসফায়ার কিংবা বন্দুক যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে না।

তাই জিরো টলারেন্স পদ্ধতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে মাদক মাফিয়াদের বিচারের আওতায় এনে বিচারকার্য দ্রুত সম্পন্ন করা দরকার। তবে এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ যেন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আমি সরকারের ক্রসফায়ার ও বন্দুক যুদ্ধে অপরাধী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে সোচ্চার । কেবল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সমাজকে মাদকমুক্ত করা সম্ভব নয়। আমাদের তরুণ সমাজকে রক্ষা করার জন্য মাদকের বিরুদ্ধে গণজাগরণ গড়ে তুলতে হবে। এই লক্ষ্যে সচেতন নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে।

পরিচিতি : মানবাধিকার কর্মী/ মতামত গ্রহণ : নৌশিন আহম্মেদ মনিরা/ সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়