উম্মুল ওয়ারা সুইটি: কলেজছাত্রী শারমীন হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট সিআইডি প্রদত্ত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেছে। গত ১৭ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে আদালত পিবিআইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদন খারিজ করে দিয়ে মামলাটি পুনঃ তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছিল বলে শারমীনের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে।
শারমীনের মা সুফিয়া উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, গলার সিষ্ট অপারেশনের জন্য বিগত ৩ জুন ২০১৫ তারিখে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নাক কান গলা বিভাগে শারমীনকে ভর্তি করা হয়। ওই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ভর্তির আগেই বলেন ‘রোগটা খারাপ এখনই অপারেশন করতে হবে এবং আমিই নিজে অপারেশন করবো’ বলে রোগীকে উনার অধীনে ভর্তি করতে বলেন। কিন্তু পরদিন গলার সিষ্ট ওটি না করে এবং মা-বাবার কোন সম্মতি না নিয়ে তিনি অন্য একজন ডাক্তারকে দিয়ে অপারেশন করান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মেয়েকে অজ্ঞানের ইনজেকশন দিয়ে অপারেশনের বাকি সময় নিজে না থেকে ওটিবয়কে দিয়ে অজ্ঞানের কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়। এর ফলে ওটির রোগির অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। এরপর অপারেশনের শেষ পর্যায়ে এসে রোগীর লাইফ সাপোর্ট খুলে দিয়ে পোষ্ট অপারেটিভ রুমে স্থানান্তর করা হয়। পোষ্ট অপারেটিভ ওর্য়াডে কোন চিকিৎসক ফলোআপ না দেয়ার কারনে শারমীন জিহ্বা উল্টিয়ে শ্বাসনালী বন্ধ হলে হার্ট, ফুসফুস ও মস্তিস্ক বিকল হয়ে যায়। এরপর লাইফ সাপোর্ট দিয়ে হার্ট ও ফুসফুস চালু করতে সক্ষম হলেও মস্তিস্কের কার্যক্রম আর ফিরাতে পারেন নাই। শেষ পর্যন্ত ১৩ জুন ০৯.৪৫ মিনিটে শারমীনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তিতে এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ও বিভাগীয় মামলায় প্রমানিত হয় যে, ডাক্তারের চরম অবহেলার কারনে শারমীনের মৃত্যু হয়েছে। সুফিয়া বেগমের অভিযোগের ফলে তৎকালীন কর্তৃপক্ষ তাদের সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরবর্তীতে দোষী ব্যাক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়ে থানায় মামলা করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
শারমীনের মা বলেন, আমি চাই ন্যায্যা বিচার চাই। আর কিছু চাই না। আমার মতো ডাক্তারদের অবহেলার শিকার হয়ে আর কোনো মা যেনো তার সন্তানকে না হারান।
আপনার মতামত লিখুন :