আদম মালেক : বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কারখানায় লাইন সুপারভাইজার পর্যায়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারীকর্মীদের অংশগ্রহণ উৎপাদন প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে বলে আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) গবেষণায় বের হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘কাটিং থ্রু দ্য ক্লথ সিলিং’ শীর্ষক আইএফসির ওই গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে আইএফসি বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়েন্ডি ওয়ার্নার বলেন, নারীদের প্রশিক্ষণ উৎপাদনশীলতা বাড়িয়েছে। আরও নতুন নতুন কারখানা এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যুক্ত হলে দেশের পোশাকখাতে নারীদের ক্যারিয়ারের অগ্রগতি হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নারী সুইং অপারেটরদের প্রশিক্ষণ বাংলাদেশে তৈরি পোশাকখাতে পণ্যের উৎপাদন তত্ত¡াবধায়নের ক্ষেত্রে (সুপারভাইজার পদ) নারীদের ভূমিকা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে, যা এখাতে নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে নারীদের অনুপস্থিতি কমিয়ে আনার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ সুইং লাইনের উৎপাদনশীলতা বাড়াবে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আরএমজি প্রকল্পের পরিচালক আনিসে উইলিয়ামের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণা করা হয়।
যেসব কারখানায় প্রশিক্ষণপ্রপ্ত নারী সুপারভাইজার রয়েছে সেসব কারখানার গড় উৎপাদনশীলতা ৫ শতাংশ বেড়েছে এবং পাশাপাশি প্রডাকশন লাইনে অনুপস্থিতির সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে বলে এই গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশে গড়ে ২০টি স্যুইং লাইনের মধ্যে ১৯টিতে কাজ করছে পুরুষ কর্মী, যদিও এই খাতের প্রোডাকশান লাইন কর্মীদের ৮০ শতাংশই নারী।
২০১৬ সাল থেকে ২৮টি পোশাক কারখানার ১৪৪ জন নারীকর্মীকে সুপারভাইজার পদে উন্নতির জন্য ‘কাজের উন্নতি ও উপাদনশীলতা’ (ওয়ার্ক প্রগ্রেশন অ্যান্ড প্রডাক্টিভিটি টুলকিট) শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে আইএফসি।
এই কর্মসূচির মধ্যে ছিল দক্ষ সুপারভাইজার হয়ে গড়ে উঠতে প্রয়োজনীয় নেতৃত্বগুণ ও যোগাযোগ দক্ষতা নিয়ে চার দিনের কর্মসূচি ‘সফট স্কিল ট্রেইনিং’। কারিগরি দক্ষতা নিয়ে ছিল ৫ দিনের প্রশক্ষণ। এরপর প্রশিক্ষণার্থীরা ৮ সপ্তাহ ধরে হাতে কলমে একজন অভিজ্ঞ সুপার ভাইজারের তত্ত্বাবধায়নে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবহারিক প্রয়োগ ঘটান। কীভাবে উপযুক্ত ও দক্ষ নারী লাইনম্যানকে সুপারভাইজার হিসাবে নিয়োগ দেওয়া যায় সে বিষয়ে উচ্চ ও মাঝারি পর্যায়ের ব্যবস্থাপকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। নারীকর্মী ও সংশ্লিষ্ট কারখানার উৎপাদনে এধরনের প্রশিক্ষণের ফলাফল জানতে চালানো হয় দুই বছর মেয়াদী গবেষণা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতির উত্তরণে আইএফসির ডবিøউপিটি প্রশিক্ষণ সুইং লাইনে লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ১৪৪ জন নারী এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিল যাদের ৯২ জনই প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হয় যেখানে তাদের মজুরিও বেড়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :