শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ২৯ মে, ২০১৮, ০৩:২৭ রাত
আপডেট : ২৯ মে, ২০১৮, ০৩:২৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পিতৃপরিচয়েই আটকে সমাজ

লিমা: সন্তানের পরিচয়ের ক্ষেত্রে, বাবা, অথবা মা, যে কোনও একজনের পরিচয়ই গ্রহণযোগ্য। এই স্বীকৃতি আইনের। তবু নানাবিধ জটিলতায় দীর্ণ সমাজ।

কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ও মেয়রের স্ত্রী রতœা চট্টোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের দাম্পত্য সমস্যার জেরে বিচ্ছেদের আইনি প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু কলকাতার বেসরকারী স্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়া তাদের মেয়ের জার্মানি যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। ভিসার আবেদনপত্রে প্রয়োজন বাবা-মা দুজনেরই স্বাক্ষর। কিন্তু সই করতে রাজি নন মেয়র, কারণ, তাতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে।

এই ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই পুরনো বিতর্ক ফের খুঁচিয়ে তুলেছে যে, কেন আইনের নির্দেশ মেনে বাবা বা মা, কোনও একজনের সম্মতি, স্বাক্ষর যথেষ্ট বলে বিবেচিত হবে না। সেই সূত্রে জানা গেছে, শুধু দম্পতিদের ক্ষেত্রে নয়, যে একা মা কৃত্রিম উপায়ে গর্ভধারণের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, অর্থাৎ বাস্তবজীবনে যে সন্তানের বাবার কোনও অস্তিত্ব নেই, তাদের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা বারবার হয়েছে। আজকের দিনে অনেক স্বাধীনচেতা মহিলা এইভাবে মা হচ্ছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই নিজেদের কর্মজীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং পেশার সূত্রেই নিয়মিত বিদেশ যান। তাঁদের সন্তানদের ক্ষেত্রে পিতৃপরিচয় না থাকার এই সমস্যা বারবার অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এক বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী যেমন স্কলারশিপ পেয়ে অ্যামেরিকায় গিয়েছিলেন, কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও নিজের নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে যেতে পারেননি, যেহেতু মেয়েটির বাবা, অর্থাৎ ওই নৃত্যশিল্পীর স্বামীর কোনও খোঁজ ছিল না। বিবাহ বিচ্ছেদের পর দু'জনেই যে যার পথে চলে যান এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিন্তু ভিসার আবেদনপত্রে সেই ভদ্রলোকের সম্মতিসূচক স্বাক্ষর জরুরি, যেহেতু নাবালিকা মেয়েটির পাসপোর্টে বাবা হিসেবে তাঁর নাম আছে।

সমস্যা আসলে ওখানেই, জানালেন বিশিষ্ট চিত্রকর ঈলিনা বণিক, যিনি নিজে কৃত্রিম পদ্ধতিতে গর্ভসঞ্চার ঘটিয়ে এক কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন। ডয়চে ভেলেকে দেওয়া দীর্ঘ এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বোঝালেন, যেহেতু পাসপোর্টে পিতৃপরিচয় আছে, সেহেতু নিয়ম অনুযায়ী অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের ক্ষেত্রে ভিসা ফর্মে বাবা-মা, দুজনেরই সই লাগবে। ঈলিনা নানাজনের অভিজ্ঞতা থেকে এ ব্যাপারে সচেতন ছিলেন বলেই শিশুকন্যার পাসপোর্টে কেবল মা হিসেবে নিজের নামই রেখেছিলেন, জৈবিক পিতার নাম সীমাবদ্ধ কেবল মেয়ের বার্থ সার্টিফিকেটে। এবং তিনি একাই যে মেয়ের অভিভাবক, এই মর্মে আদালতে একটি হলফনামাও দিয়েছিলেন ঈলিনা, যা জোরে তিনি বিভিন্ন জায়গায় একা মা হিসেবে কন্যার অভিভাবকত্ব নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু তার পরেও খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর, যা ঈলিনা অকপটে জানিয়েছেন ডয়চে ভেলেকে। যেমন মেয়ের পাসপোর্ট করাতে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে সবার সামনে হেঁকে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে মেয়ের পিতৃপরিচয় কী কারণে নেই? যদিও সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করেছেন ঈলিনা, কিন্তু তাঁর অভিজ্ঞতা এই পিতৃতান্ত্রিক, আগাগোড়া পুরুষশাসিত সমাজের একপেশে দৃষ্টিভঙ্গিকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। ডয়েচে ভেলে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়