তারেক : শ্রমিকের অধিকার প্রত্যাশা অনুযায়ী সুসংহত হলেই বাংলাদেশের জন্য জিএসপি সুবিধা পুনর্বহালে সর্বশক্তি নিয়োগের অঙ্গীকার করলেন মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং কংগ্রেসনাল ডেমোক্র্যাটিক ককাসের চেয়ারম্যান জোসেফ ক্রাউলি। খবর এনআরবি নিউজের।

ক্রাউলি বললেন, শ্রমিক-অধিকার এবং মানবাধিকার নিয়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারতসহ বহু দেশেই প্রশ্ন রয়েছে। বাংলাদেশকে নিয়ে আমি বেশি ভাবী, কারণ মুসলিম অধ্যুষিত হওয়া সত্ত্বেও এটি উদার এবং গণতান্ত্রিক। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসে পড়ার পরই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করেছে। এরপর প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ১৬টি শর্ত আরোপ করেছিলেন গার্মেন্ট সেক্টরের পরিবেশ ও শ্রমিক অধিকার সমুন্নত করতে। সে সব শর্ত পূরণ হয়েছে দাবি করে বাংলাদেশ সরকার দুই দফা মার্কিন প্রশাসনকে অবহিত করার পরও জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল করেনি বিগত ওবামা এবং বর্তমান ট্রাম্প প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ আমেরিকান শ্রমিকদের জাতীয়ভিত্তিক সংগঠন ‘আসাল’র পক্ষ থেকে কংগ্রেসম্যান যোসেফ ক্রাউলিকে তার পুনঃনির্বাচনে সমর্থন জ্ঞাপন উপলক্ষে ২৬ মে দুপুরে এক অনুষ্ঠানে কংগ্রেসম্যান ক্রাউলি আরও বলেন, আইনের শাসন তথা সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ এশিয়ার আরও অনেক দেশেই। এসব বিষয়ে সবাইকে মনোযোগী হতে হবে।

ক্রাউলি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এবং আইনের প্রয়োগ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বর্ণ-গোত্র-লিঙ্গ বৈষম্য ঘটছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের অবসানে আমি দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করছি। নিউইয়র্কে আমার নির্বাচনী এলাকায় সবচেয়ে বেশি ভাষা ও বর্ণের মানুষের বাস। তাদের অধিকার সুরক্ষায় আমি বদ্ধপরিকর। আর সে কারণেই বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশিয়ানদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ক্রমান্বয়ে গভীর হয়ে উঠেছে।

এ সময় বাংলাদেশি রিপাবলিকান গিয়াস আহমেদ তাকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে আগ্রহী সব বাংলাদেশি’ বললে ক্রাউলি মৃদু হাসি দিয়ে মজা করার জন্য বলেন, সেটি কি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট?’

আসালের জাতীয় প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশি-আমেরিকান মাফ মিসবাহ উদ্দিন ক্রাউলির বিগত দিনের কর্মকাণ্ডের আলোকে বলেন, বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশিয়ানদের কল্যাণে তিনি অনেক কিছু করেছেন। করার চেষ্টা করছেন। আশা করব দশম টার্মের নির্বাচনেও জয়ী হয়ে দক্ষিণ এশিয়ান তথা অভিবাসী সমাজের নাজুক পরিস্থিতি অবসানে আরও জোরদার ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন। এরপরই বিপুল করতালির মধ্যে যোসেফ ক্রাউলিকে নিউইয়র্কের চতুর্দশতম কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট থেকে পুনরায় প্রার্থী হিসেবে সমর্থন ঘোষণা করেন।

এ উপলক্ষে ক্রাউলির প্রশংসা করে আরও বক্তব্য রাখেন ডা. মজিবর রহমান মজুমদার, আসালের জাতীয় সেক্রেটারি করিম চৌধুরী, দিলীপ চৌহান, ডা. চ্যাটার্জি এবং আলী নাজমী। নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও ছিলেন সালেহ আহমেদ, আবদুস সালাম, নাজমুল হক মানিক, আজিজুল হক, মঞ্জুর শেখ প্রমুখ। পুনঃনির্বাচনের প্রচার কার্যালয়ে হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশের এ অনুষ্ঠানে ক্রাউলির স্ত্রী ক্যাসি নিলসন এবং তিন পুত্র লিয়াম ক্রাউলি, কুলেন ক্রাউলি এবং কেনজি ক্রাউলিও ছিলেন উত্ফুল্ল।