শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ২৭ মে, ২০১৮, ০৬:৪৭ সকাল
আপডেট : ২৭ মে, ২০১৮, ০৬:৪৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিভিন্ন অনিয়মের বেড়াজালে বন্দি ধামরাই উপজেলা শিক্ষা অফিস!

মো. আল মামুন খান, ধামরাই: ঢাকার ধামরাই শিক্ষা অফিসের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম এবং দূর্ণিতির অভিযোগ এসেছে। এক্ষেত্রে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধেই বেশী যা বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিতও হয়েছে।

উপজেলার বিদ্যালয়গুলিতে নিয়োগ বানিজ্য, শিক্ষকদের বেতন করনের কাগজ ছাড়করণ, টাইম স্কেল, বিএড স্কেল, শিক্ষার্থীদের নাম উপবৃত্তিতে অন্তর্ভূক্তিকরন, স্কুল ম্যানেজিং কমিটি গঠন, ভবন নির্মান, স্যানিটেশন সুবিধা, শিক্ষক প্রশিক্ষনে প্রেরনসহ শিক্ষা দপ্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে ঘুষ ছাড়া কোন কাজ সম্পাদন করার সুযোগ নেই এই শিক্ষা অফিসের বর্তমান কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য। অবস্থাদৃষ্টে এটাই প্রতীয়মান হয়েছে যে, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের চেয়ারটিতে যিনিই আসেন, রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যান তিনি!

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমান শিক্ষা অফিসার নায়ার সুলতানার আগে এই পদে ছিলেন মোঃ জাকির হোসেন। ধামরাইয়ে থাকাকালীন তার বিভিন্ন অনিয়ম এবং দূর্ণিতির কারণে এক পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে ধামরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম করার অভিযোগে তার অপসারনের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করতে হয়েছিলো ধামরাইয়ের বিদ্যালয়গুলির অভিবাবক ও স্থানীয়দের (সূত্রঃ নতুন বার্তা.কম এবং প্রিয়.কম, তারিখঃ রবিবার, ২০ মার্চ, ২০১৬ ইং)। শেষ পর্যন্ত এই শিক্ষা অফিসারকে বাধ্য হয়ে অন্যত্র বদলী করে কর্তৃপক্ষ।

বর্তমান মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নায়ার সুলতানার বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পত্রিকায় এসেছে। ৩০ জানুয়ারি, ২০১৮ ইং তারিখে 'দৈনিক এশিয়ায়' প্রকাশিত প্রতিবেদনটির কথা প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যেতে পারে। সেখানে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে উপজেলা কলেজ পর্যায়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নায়ার সুলতান যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক ইউএনও কে না জানিয়েই গোপনে শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,অধ্যক্ষ, স্কাউট দল, স্কাউট শিক্ষক ও শিক্ষার্থী নির্বাচিত করেছিলেন। এই নিয়ে ২৫ জানুয়ারি, ২০১৮ তারিখে দৈনিক এশিয়ায় 'ধামরাই উপজেলার শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ শরীফবাগ আফাজ উদ্দিন স্কুল ও কলেজের তোফাজ্জল হোসেন টিপু' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালামের নজরে আসে। এরপরেই তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নায়ার সুলতানাকে 'শো-কজ' করেন।

এইসকল অভিযোগের বিষয়ে নায়ার সুলতানার মুঠোফোনে কল করে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমার সম্পর্কে যে সব অভিযোগ এসেছে এগুলি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি সম্পূর্ণ সৎ একজন অফিসার, তাই আমার বিরুদ্ধে নিউজ করতে চাইলে করতে পারেন, আমি ভয় পাই না।

এরপর দৈনিক এশিয়ায় প্রকাশিত নিউজের উল্লেখ করলে সেই অভিযোগের ব্যাপারে তিনি জানান, আমি কেবল যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষকের নামটি উপস্থাপন করেছিলাম। এখানে দূর্ণিতিটা হয়েছে কোথায়? আর আমাকে প্রথম আলোর সাংবাদিক পারভেজ সাহেব খুব ভালোভাবেই চিনেন, আপনি আমার সম্পর্কে তার কাছে জিজ্ঞেস করে জানুন আমি কেমন অফিসার। আমি আগে সোনারগাঁওয়ে ছিলাম সেখানেও অত্যন্ত সৎ অফিসার হিসেবে আমার সুনাম রয়েছে।

এসময় তাকে শো-কজ করা হলো কেন জানতে চাইলে তিনি রেগে যান এবং বলেন, `আমি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আপনার বিরুদ্ধে কমপ্লেইন করবো, আমাকে এই সময়ে কেন ফোন করেছেন। আপনার নামটা বলেন এবং আপনি কোথায় থাকেন?' এই বলে তিনি কলটি কেটে দেন।

আবারও তাকে কল করা হলে তিনি বলেন, 'লাইনটা কেটে গেলো। আসলে আমার মা খুব অসুস্থ, তাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত আমি। নাহলে আমি সাধারণত কারো সাথে এভাবে রিয়্যাক্ট করি না। আপনি কাল অফিসে আসুন, সেখানে বিস্তারিত আলাপ করবো।'

এজন্যই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তার মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে, উপজেলার বিদ্যালয়গুলিতে নিয়োগ বানিজ্য, শিক্ষকদের বেতন করনের কাগজ ছাড়করণ, টাইম স্কেল, বিএড স্কেল, শিক্ষার্থীদের নাম উপবৃত্তিতে অন্তর্ভূক্তিকরন, স্কুল ম্যানেজিং কমিটি গঠন, ভবন নির্মান, স্যানিটেশন সুবিধা, শিক্ষক প্রশিক্ষনে প্রেরণ ইত্যকার বিষয়ে বিদ্যমান অভিযোগের ব্যাপারে আর জিজ্ঞেস করা যায়নি। তবে এই বীষয়গুলি নিয়ে আরো একটি ফলো-আপ প্রতিবেদন করা হবে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার (প্রাথমিক) হিসেবে বর্তমানে আছেন কাজী রাশেদ মাহমুদ। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও রয়েছে নানান অভিযোগ। এর ভিতরে উপবৃত্তি থেকে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের নাম অন্তভুক্তি করা সহ সরকারি নীতিমালা লংঘন করে 'ব্যাক ডেটে' পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেবারও অভিযোগ রয়েছে। বিধি বহির্ভূত এসব নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে বাছাই, নিয়োগ বোর্ড, এমপিও’র জন্য পেপারস প্রেরণসহ নিরাপদে বেতন উত্তোলন করার সকল দায়িত্ব মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে শিক্ষা অফিসের এই কর্মকর্তার সহায়তায় একটি দূর্ণীতিবাজ চক্রের সম্পন্ন করার ভয়াবহ তথ্য পাওয়া গেছে।

এই অভিযোগের ব্যাপারে তার মুঠোফোনে কয়েকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায় নাই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়