মাছুম বিল্লাহ: রমজানের পবিত্রতায় ১০ বছর থেকে নিজেকে শরিক করেছেন প্রবাসী সর্বানী ঘোষাল। ১০টি বছর রোজা রেখে আসছেন তিনি। হিন্দু বাড়ির মেয়ে তিনি। বিয়েও হিন্দু পরিবারেই। কোনকালেই ভাবেননি, তিনিও আর পাঁচটা মুসলিমের মত সারা মাস রোজা রাখবেন। গোটা ঘটনাটি ঘটে অনেকটা অলৌকিক ভাবেই।
ঘটনা ২০০৮ সালের। দুবাইয়ে স্বামী পুত্র নিয়ে দিন কাটছিল সর্বানীর। এর মাঝেই একটা ছোট সমস্যা বেঁধেছিল। কাগজপত্রের ঝামেলায় তার স্বামীর নামে বুক করে রাখা দু বেডরুমের ফ্ল্যাটটি পেতে সমস্যা হচ্ছিল। এই সমস্যা কিভাবে কাটবে বুঝে উঠতে পারছিলেন না দুজনেই। ভারাক্রান্ত মনে এক সন্ধ্যায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন সর্বানী। সেই সময় মাগরিবের আজান ভেসে আসে মহিলার কানে। বহুবার কানে এসেছে আজান। কিন্তু এযেন এক ভিন্ন স্বর্গীয় সুর। যে সুর ওলট পালট করে দেয় মন। তখনই জেগে উঠে তার অন্তরাত্মা। সর্বানী নিজের অজান্তেই বলে ওঠেন, “থাকার জায়গার ব্যবস্থা পাকা হলে গোটা মাস রোজা রাখবো।” সেই নেক ইরাদা নিয়েই বাড়িমুখো হন সর্বানী।
তখনো বাড়িতে ঢোকেননি। দেখা হয় এক প্রতিবেশীর সাথে। সর্বানীর কথায়, “ঐ প্রতিবেশী আমাকে জানান যে, আমাদের নামে ফ্ল্যাটটি ইস্যু হয়ে গেছে এবং আমদের সেখানে যেতে আর কোন বাধা নেই। এটা শুনে নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। মুখ থেকে বেরিয়েছিল যে, এটা চমৎকার ছাড়া কিছুই না।”
এই অলৌকিক ঘটনার পর অবশ্য নিজের ওয়াদা রেখেছেন সর্বানী। তারপর থেকেই রোজা রাখতে শুরু করেন তিনি। ধীরে ধীরে জীবনের ছন্দটাই পাল্টে যায় ঘোষাল পরিবারে। শান্তির জীবন কাটাতে শুরু করেন তারা। বেড়ে যায় ধৈর্যও। উপরওয়ালার অসীম রহমতেই ইসলামী জীবন পেয়েছেন তিনি। রোজা দিয়ে ইসলামী জীবনাচরণ শুরু করেছেন সর্বানী ঘোষাল। মহান আল্লাহর আদর্শ মেনে নেন তিনি। রমজানে রোজা না রাখা এখন ভাবতেই পারেন না তিনি।
সর্বানী বলেন, “সেহেরি দিয়েই দিন শুরু হয় ভোর সাড়ে তিনটায়। ইফতার করি দুধ পাউরুটি দিয়ে।” ইসলামের ইতিবাচক প্রভাব সর্বানীর মনে প্রশান্তির হাওয়া বইয়ে দিয়েছিল। সেদিনের মাগরিবের আজান তার গোটা জীবনটা বদলে দেয়। সেই থেকেই মহান আল্লাহকে মেনে চলা শুরু করেন তিনি। আজীবন প্রতিশ্রুতির ভঙ্গ করতে পারবেন না বলেও জানান আলোর পথের যাত্রী সর্বানী ঘোষাল।
আপনার মতামত লিখুন :