শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ২৫ মে, ২০১৮, ০২:১৫ রাত
আপডেট : ২৫ মে, ২০১৮, ০২:১৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

“উঠেছে নতুন এক হাওয়া, পরে এসে আগে চলে যাওয়া”

আর রাজি : আমার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট তাজিন, অভিনেত্রী তাজিন। তাঁর মৃত্যুর খবর পড়ামাত্র আমার মনে কবিতার এই দুই চরণ বেজে ওঠে। আমি প্রথম আলোতে যখন কাজ করতাম তখন উনাকে দেখেছি। কথাও হয়ে থাকবে দু একবার। মনটা খারাপ হয়। কারণ, তারকাদের ভুলে যাওয়া কঠিন। আমি তাঁর সাথে আমার আর কোনো স্মৃতি আছে কি না ভাবার চেষ্টা করি। না। নাই। কিন্তু আমি কষ্ট পেতে থাকি। নানান কথা মনে হয়।

এতো অল্প বয়সে একটা মানুষ চলে গেলেন, কেন গেলেন? একটা অনিশ্চয়তা আমার মনে খেলে যায়। এমনও ভাবনা চলে আসে, আমি কী ওভাবে মরে যেতে পারি? হঠাৎ! কাছের মানুষদের গল্প করে শুনাই, কেমন দেখেছি তাঁকে। আমার এই কষ্ট বা অনিশ্চয়তার কথা ফেসবুকে লিখতে ইচ্ছে করে। আলস্য কিংবা অন্য ব্যস্ততায় সময় গড়িয়ে যায়।

তবে ফেসবুকে তাজিনের কাছের মানুষদের পোস্টগুলো আসতে থাকে। তাদের ভালবাসার কথা, তাদের অক্ষমতার কথা, তাজিনের জীবন-সংগ্রামের কথা, সমাজ-বাস্তবতার কথা আলোচিত হতে থাকে। আমি নিজেকে মেলাই। আমি কী ওভাবে হুট করে চলে যেতে পারি? যেতে তো পারিই কিন্তু স্বস্তি পাই, আমি তাজিনের মতো "কঠিন" পরিস্থিতিতে নাই ভেবে।

এরই মধ্যে আমার কাছের মানুষদের অন্য রকম লিখাও দেখি। তাঁদের মোদ্দা কথা এই যে: জীবন-সংগ্রামে বিপর্যস্ত অতিপরিচিত একজনকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে এলো না, অথচ মৃত্যুর পরে এই আহাজারির অর্থ কী? সখ্যতার, ভালবাসার বা ভাললাগার স্মৃতিচারণ করে তাজিনের বন্দনাকে ভন্ডামো বলেও রায় দিলেন কেউ কেউ। অনেকেই বিরক্ত- "জীবনে যারে তুমি দাওনি মালা/ মরণে কেন তারে দিতে এলে ফুল"?

সেদিন আমিও প্রায় লিখেই ফেলেছিলাম "তাজিনের জন্য কষ্টগুলো" শিরনামে। এ যাত্রায় বাঁচা গেল যে তা লিখে ফেলিনি। নইলে, ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ করার দায়েও আমাকে নিন্দামন্দ শুনতে হতো। নিশ্চয়ই কেউ কেউ আমাকেও ভন্ড বলতেন! হয়তো সে অনেকটা সত্যিও।

আমার মা দীর্ঘদিন রোগশয্যায়। আমি তার কোনো কাজেই আসি না। যা করার সব করেন আমার ছোটভাই, আমার বাবা। কিন্তু আমি জানি, এই মা যখন মারা যাবেন- তখন আমি ছুটে যাব। হয়তো আমার ছোটভাইয়ের চেয়েও বেশি কান্না পাবে আমার। অক্ষমতাই আমাকে কাঁদাবে বেশি। আমি হয়তো ফেসবুকে আমার হারানোর কথা লিখবো। তখন কি তা ভন্ডামো হবে আত্মীয়-স্বজন-প্রতিবেশিদের চোখে?

আমার মন বিদ্রোহী হয়ে ওঠে! যার জন্য আমি কিছুই করিনি, করতে পারিনি, তার জন্য চোখের দু-ফোটা জল ফেলে তার কথা স্মরণ করতেও পারবো না? যদি কোনো কষ্ট বুকে বাজে সে কথা উল্লেখ করাও পাপ হবে আমার? আমি আমার প্রিয় বা পরিচিত মানুষটির কোনো উপকারে আসিনি বলে ব্যক্তিগত শোক প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে হবে আমাকে? কিছু করতে পারা না পারার নিক্তিতে মেপে দুঃখ-শোক প্রকাশ করতে হবে? সমাজে সবাই, সব সময়, সবার জন্য করতে পারে? এটা সম্ভব? কারো জন্য কিছুই করতে পারি না আমি, তাই বলে স্মৃতি বা শোকও প্রকাশ করতে পারবো না? কিছু করতে পারিনি বলে শোকের সময়েও আমাকে ভন্ডো বলা হবে?

এত্তো প্রশ্ন আমার! এবার হাসি এলো। আমরা দারুন এক সমাজে বাস করি। প্রশ্নহীনভাবে কিছুই পার পেয়ে যায় না এ সমাজে। শোক বা ভালবাসার স্মৃতি চারণও এদেশে প্রশ্নহীন নয়। জানি, যে কারো জন্য কিছু করতে পারেনি, করতে পারে না, তার চুপ থাকাই শ্রেয়। কিন্তু মন যে সে কথা মানতে চায় না। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়