নাজমুল ইসলাম : মাদক নির্মূল করতে হলে গডফাদারদের টার্গেট করতে হবে বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও রাজনীতি মে. জে. (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বীরপ্রতীক। আমাদের নতুন সময়ের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বন্দুকযুদ্ধের মাধ্যমে কোনোদিনই মাদক নির্মূল সম্ভব না। কারণ সমাজে মাদকের যে বিস্তার ঘটেছে তা অকল্পনীয়, বন্দুকযুদ্ধের মাধ্যমে রোধ করা প্রায় অসম্ভব। মাদক নির্মূল করতে হলে অবশ্যই গডফাদারদের টার্গেট করতে হবে। কিন্তু সেটা করতে রাজনৈতিক সরকার রাজি নয়। কারণ গডফাদারদের যে আর্থিক শক্তি তার সঙ্গে ক্ষমতার শক্তির সম্পর্ক রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান অবশ্যই চাই। স্বচ্ছতাও চাই। একইসঙ্গে মাদক ব্যবসার পরিকল্পনাকারী ও যাদের গডফাদার বলা হয়, নিয়ন্ত্রণকারী তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান চাই। মাদক সমাজকে শেষ করে দিয়েছে, এই অভিযান অনেক আগে শুরু করা উচিত ছিল, সেটা সরকার করেনি, এখন করছে। তবে আমাদের সন্দেহ হয়, এই অভিযানের মূল লক্ষ্য কী মাদক নির্মূল, নাকি অভিযানের নামে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, দমনপীড়ন চালানো।
এক প্রশ্নের জবাবে মে. জে. (অব.) সৈয়দ মুহাম্মাদ ইবরাহিম বলেন, আমরা সকলেই অবহিত আছি এবং ভালোমতোই জানি গ্রেপ্তার বাণিজ্য শব্দ দুটি কতটা প্রভাব বিস্তার করে আমাদের এখানে। নাগরিক সমাজ, সাধারণ গ্রাম-বাংলার মানুষ, শহরের মানুষের কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভীতিকর সংবাদ নিয়ে যায়। তাদের গিয়ে বলে, তোমাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আছে, তোমাদেরকে গ্রেফতার করা হবে! অথবা তোমার নাম অমুক মামলায় আছে। এখন মামলাগুলো এমনভাবে দেওয়া হয় সেখানে নাম ঢুকানো খুব সহজ। তুমি যদি আমাদের সাথে আর্থিক দফারফা না করো তাহলে তোমার খবর আছে। এই কঠোর বাক্যবিনিময়গুলো আরও একধাপ উপরে গেলে বলা হয়, তোমাকে ক্রসফায়ার দেওয়া হবে। এই নিয়মে অতীতে অনেক ব্যক্তি ক্রসফায়ারে পড়েছে, অনেক ব্যক্তি হাত-পা হারিয়ে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। কেউ কেউ হয়তো ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছে।
তিনি বলেন, এখন মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। সেখানে বলা হচ্ছে, তোমাকে বন্দুকযুদ্ধে ফেলা হবে, তুমি ক্রসফারে পড়ে যাবা, তুমি মাদকের ব্যবসা করো এমন ভীতি দেখিয়ে আরেকবার গ্রেপ্তার বাণিজ্য শুরু হয়েছে। আমরা চাই স্বচ্ছতার ভিত্তিতে, সৎ নিয়তে সমাজকে কলুষমুক্ত করার উদ্দেশ্য নিয়েই মাদকবিরোধী অভিযান চালানো হোক।
আপনার মতামত লিখুন :