মাওলানা আমিনুল ইসলাম: ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। বৃষ্টি বা অতি বৃষ্টির সময় একজন মুসলিমের করণীয় কী- ইসলাম সে বিষয়েও দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছেন। বলে দিয়েছেন অতি বৃষ্টিকালীন কিছু আমল-দোআ। সবচেয়ে সুখকর বিষয় হলো, বৃষ্টির সময় মনে কষ্ট না নিয়ে বরং এই সময়টিকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে আল্লাহ মহানের দরবারে দোয়া করা উচিত। কারণ সহিহ হাদিসে এসেছে যে, বৃষ্টি চলাকালীন সময় মুসলিম বান্দার দোয়া আল্লাহ মহানের দরবারে কবুল হয়। বৃষ্টি বা অতি বৃষ্টির সময় রাসুল (সা.) বিভিন্ন দোয়া করতেন।
রহমতের বৃষ্টি দেখে দোয়া পড়া সুন্নাত। রাসূল (সা.) এমনটা করতেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সা.) বৃষ্টি বর্ষণ হতে দেখলে বলতেন, 'আল্লাহুম্মা ছাইয়িবান নাফিয়া'। (অর্থাৎ- হে আল্লাহ, এমন বৃষ্টি আমাদের ওপর বর্ষণ করুন যাতে ঢল, ধস বা আজাবের মতো কোনো অমঙ্গল নিহিত নেই।) [বোখারি : ১০৩২]। সুতরাং বৃষ্টি বা অতিবৃষ্টিকে ভয় না পেয়ে প্রত্যেক মুসলিমের উচিত এই দোয়া পড়া।
যখনই বৃষ্টি শুরু হয় তখনই দোয়া করা উচিত। কারণ বৃষ্টি চলাকালীন সময়ে দোয়া কবুল হয়। এই সময় দোয়া করাও সুন্নত। বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ আবু দাউদ শরিফের ২৫৪০ নং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত সাহল বিন সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, দুই সময়ের দোয়া কখনো ফেরত দেওয়া হয় না। কিংবা তিনি এভাবে বলেছেন যে, দুটি সময় রয়েছে, যখন দোয়া করলে তা খুব কমই ফেরত দেওয়া হয়- এক. আজানের সময় যে দোয়া করা হয়। দুই. বৃষ্টি চলাকালীন সময়ে যে দোয়া করা হয় । অন্য বর্ণনায় এসেছে, রণাঙ্গণে শত্রুর মুখোমুখি হওয়াকালের দোয়া। [আবু দাউদ : ২৫৪০]
সুতরাং একজন খাঁটি মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত যখনই বৃষ্টি নামবে তখন কোনো প্রকারের হা-হুতাশ না করে দোয়া করা। আশা করা যায় মহান আল্লাহ এই দোয়া কবুল করবেন।
এছাড়া রাসুল (সা.) বৃষ্টির পানিকে খুব পছন্দ করতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা একবার রাসূলের [সা.]সঙ্গে থাকাকালে একবার বৃষ্টি নামল। তখন তিনি পরিধেয় প্রসারিত করলেন, যাতে পানি তার শরীর স্পর্শ করে। আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কেন এমন করলেন? রাসূল (সা.) বললেন, কারণ এটা তার রবের কাছ থেকে মাত্রই এসেছে। [মুসলিম : ৮৯৮]
আপনার মতামত লিখুন :