শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রকাশিত : ২৩ মে, ২০১৮, ১০:৫০ দুপুর
আপডেট : ২৩ মে, ২০১৮, ১০:৫০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

খুলনার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবে আঃলীগ, হার থেকে শিক্ষা নিয়ে কাজ করবে বিএনপি

প্রতিবেদক : খুলনা সিটি করপোরেশনের জয়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে গাজীপুরে জয় চায় আওয়ামী লীগ। এ জন্য কেন্দ্র থেকে তৎপরতা শুরু হয়েছে। অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনৈক্য দূর করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে বলা হচ্ছে। অন্যদিকে খুলনা থেকে শিক্ষা নিয়ে গাজীপুরে এবার ভিন্ন কৌশলে এগোবে তারা। ভোটের আগের রাতেই কেন্দ্র পাহারা দেবে বিএনপি। ভোট ডাকাতি হলে প্রতিরোধ-প্রতিহত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। তাছাড়া ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রের বাইরেও ব্যাপক শোডাউন করা হবে। ভেতরে ভোট ডাকাতি বা কারচুপি হলে তাত্ক্ষণিক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে।

স্থানীয় নেতাদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছেন দলের শীর্ষ নেতারা। নির্বাচনের সার্বিক মনিটরিং করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে তিনি ঐক্যবদ্ধ প্রচারণা ও উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরতে কেন্দ্রীয় ও গাজীপুরের নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। এমপি-মন্ত্রী ও নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—কোনো অজুহাত শুনতে চান না তিনি। খুলনার চেয়ে আরও ভালো ব্যবধানে গাজীপুরে দলীয় প্রার্থী বিজয়ী হবে বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীনরা। গোপালগঞ্জের পর আওয়ামী লীগের শক্তঘাঁটি বলা হয় গাজীপুরকে।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির প্রধান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘খুলনায় যে কৌশলে সরকার ভোট ডাকাতি করেছে, আমরা তা নিয়ে ভাবছি। আমরা পাল্টা রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে কাজ করব। যেকোনো মূল্যে ভোট ডাকাতি বন্ধ করা হবে। মোটামুটি সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি বিপুল ভোটে জয়ী হবে।

সূত্রমতে, খুলনার কৌশল ও ফল গাজীপুর সিটি নির্বাচনের কৌশল প্রণয়ন সহজ করে দিয়েছে। খুলনার নেতাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচারণা ও কৌশল গাজীপুরের নেতাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে বলছে, নির্বাচনে জিততে হলে ঐক্যের বিকল্প নেই। গাজীপুর সিটিতে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু থেকেই অভ্যন্তরীণ সমস্যা ছিল। নির্বাচন স্থগিত হওয়ার কারণে পূর্বের ভুলত্রুটিগুলো সংশোধন করে জয়ের মিশনে মাঠে নামছে ক্ষমতাসীনরা। এই পর্যায়ে গত রবিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ১৩ জন নেতা গাজীপুরে গিয়ে স্থানীয় এমপি জাহিদ আহসান রাসেলের বাসায় বৈঠক করেছেন। বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতারা অনৈক্য দূর করে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ‘ঐক্যবদ্ধ’ হয়ে দলীয় মেয়রপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে বিজয়ী করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলমকে উদার ও নমনীয় হয়ে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে বলেন নেতারা।

এদিকে বিএনপি গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে গত সোমবার  সিনিয়র নেতারা গুলশান কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নিবাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ফজলুল হক মিলন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, গাজীপুর নির্বাচনের বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারসহ গাজীপুরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খুলনা সিটিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ ছিল। সরকারের উন্নয়নগুলো প্রচারণা চালানো হয়েছে। প্রার্থীরও ইমেজ ছিল। সব মিলে আমাদের জয় এসেছে। গাজীপুরের স্থানীয় এমপি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির উদ্দেশে বলেন, এই নির্বাচনে কোনো রকম ঝামেলা যেন না হয়। ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রার্থীকে জয়ী করতে হবে। মনে রাখতে হবে, প্রার্থী কে হলো সেটা বিষয় নয়, নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।  আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক  বলেন, খুলনার বিজয়ে দলীয় প্রচারণায় যে মূলমন্ত্র কাজে লাগানো হয়েছিল তা গাজীপুরের নির্বাচনেও কাজে লাগানো সম্ভব। খুলনায় আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে ছিল। গাজীপুরেও সেই সুযোগ কাজে লাগাব। তিনি বলেন, খুলনার মানুষ বর্তমান বিএনপির মেয়রের দ্বারা যেমন কোনো উন্নয়ন পায়নি, তেমনি গাজীপুরেও বিএনপির মেয়র কোনো উন্নয়ন করেনি। ভোটের মাধ্যমে খুলনার মানুষ যেমন জনপ্রিয় ব্যক্তিকে বিজয়ী করেছেন, ঠিক গাজীপুরেও তাই করবেন। এ প্রসঙ্গে সিটি নির্বাচনের সমন্বয়কের দায়িত্ব পাওয়া এবং ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে এখনো প্রচারণা শুরু হয়নি। তাই এই মুহূর্তে আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আমরা দলকে গুছিয়ে নিচ্ছি। যেখানে ছোটখাটো সমস্যা ছিল সেগুলো নিরসন করছি।’ তিনি বলেন, ‘খুলনা সিটির চেয়ে গাজীপুরে ভোটার অনেক বেশি। তাই আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো প্রচারণা চালাব না। অঞ্চলভিত্তিক প্রচারণায় বেশি গুরুত্ব দেব। এ জন্য সিটিকে আটটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। গাজীপুরের মানুষ নৌকাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন—এমন আশা করতেই পারি।’

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সব নেতাদেরই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এরপরও যদি সরকার গণরায় পাল্টানোর চেষ্টা চালায় তাহলে তা নিয়ে জাতীয় নির্বাচনের আগে মাঠ গরম করা হবে। গাজীপুর থেকেই আন্দোলনের ক্ষেত্র তৈরির চিন্তাভাবনাও রয়েছে দলটির।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘খুলনা আর গাজীপুর এক নয়। গত নির্বাচনে বিএনপি দেড় লাখ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছে। এবার সুষ্ঠু ভোট হলে অন্তত ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষের প্রার্থী জয়লাভ করবে।’

বিএনপি মনে করে, খুলনায় দলীয়ভাবে কিছু ভুলত্রুটি হয়েছিল। সেগুলো গাজীপুরে শুধরানো হবে। এ নিয়ে সোমবার গুলশান কার্যালয়ে  বৈঠকেও বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, ‘গাজীপুরে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হলে সরকারকে তার খেসারত দিতে হবে।’

সূত্র : বাংলাদেশপ্রতিদিন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়