হ্যাপী আক্তার : হেরোইনের প্রভাব এখন তেমন নেই তবে ইয়াবার বিস্তার ঘটেছে। ইয়াবা সমাজে এমনভাবে প্রবেশ করেছে যে বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। চিন্তার বিষয় হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে ছাত্র সমাজ, যুব সমাজের কি হবে?
ঢাকায় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র মুক্তির প্রধান কনসালটেন্ট আলী আসকার কোরেশী বিবিসি বাংলার সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।
এসময় তিনি বিবিসি বাংলাকে আরো বলেন, মাদকদ্রব্য অত্যন্ত বেশি সহজলভ্য হয়ে পড়েছে। আগে হয়তো মাদক কেনার জন্য বিভিন্ন জায়গায় যেতে হতো। বস্তি থেকে শুরু করে অনেক দূর দূরান্তে যেতে হতো। এখন আর সেই সমস্যা নেই। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এখন বাসায় গিয়ে মাদক পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, পরিস্থিতি আসলেই অতন্ত উদ্বেগজনক। লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে দিন যত যাচ্ছে মাদকাসক্তের সংখ্যা ততই বেড়েই চলছে। এতো পরিমাণে বেড়ে চলেছে যে সমাজের ১০-১২ বছরের বাচ্চা থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বয়স্ক ব্যক্তিরাও মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে। সমাজের একেবারে উচ্চ শ্রেণি থেকে শুরু করে নিম্ন শ্রণি পর্যন্ত সর্ব শ্রেণির মানুষ এই মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে।
কোন ধরনের মাদকাসক্তরা বেশি আসে সেবা নিতে?
এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কাছে বর্তমানে ইয়াবাসক্ত যারা তারাই বেশি আসেন। একটি সময় ছিল যে হেরোইনে আসক্ত যারা তারা আসতো। এখন ইয়াবায় বেশি ঝুঁকছে।
মাদকাসক্ত ছেলেরা নাকি মেয়েরা বেশি হচ্ছে? তার সাথে বয়সের অবস্থানটি ঠিক কেমন?
এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছেলেরা মাদকাসক্ত বেশি হচ্ছে। তার সাথে মেয়েরাও হচ্ছে, তবে সংখ্যায় কম। তবে কিশোর ও যুবক শ্রেণিতে সব চেয়ে বেশি আসক্ত হচ্ছে।
এসময় তিনি আরো বলেন, লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে, অল্প কিছু দিন ধরে দেখা যাচ্ছে মাদকাসক্ত যারা আমার সেবা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসছে তাদের ৩৫-৪০ বছর বয়সীরা আসেন। তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করে দেখা গেছে তারা দুই বা তিন বছর আগে থেকে মাদকাসক্ত হয়েছে। বিষয়টি অতন্ত উদ্বেগজনক। যে বয়সে তাদের মাদকাসক্ত হবার কথা ছিল তখন তারা ভালো ছিল। তবে তারা ৩৫-৪০ বছর বয়সে মাদকাসক্ত হলো।
বিবিসি বাংলাকে তিনি আরো বলেন, মাদক দ্রব্য সমাজে এখন আগের চেয়ে অনেক সহজলভ্য হচ্ছে। তার সাথে যে মাদকাসক্ত হচ্ছে তার আশেপাশের বন্ধুদের দেখছে মাদকদ্রব্য গ্রহণ করতে। বন্ধুদের দেখে কৌতুহলে সে নিজেও জিনিসটির স্বাদ নিতে চেষ্টা করে। এক সময় সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। তবে শুরু করাটা যেভাবেই হোক না কেন? একবার শুরু করলে সেখান থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারে না। এটিই হচ্ছে সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার।
আপনার মতামত লিখুন :