নিজস্ব প্রতিবেদক : এক বছর আগে শীর্ষ ১৪ মাদক ব্যবসায়ীকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যশোর জেলা পুলিশ। গত এক বছরে সেই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক ও প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় অধিকাংশ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বহাল তবিয়াতে রয়েছে। গত তিন রাতে যশোরের সাত মাদক ব্যবসায়ী ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। তবে তাদের কেউ ধরিয়ে দিতে পুলিশের পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নয়। পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে বরাবরই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
যশোর অঞ্চলের মাদকের ডিলার হিসেবে পরিচিত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের অধিকাংশ গা ঢাকা দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা পলাতক রয়েছে। তাদের সন্ধানে রয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৪ মে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে যশোরের শীর্ষ ১৪ মাদক ব্যবসায়ীকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান। ১০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
জেলা পুলিশ পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ ১৪ মাদক ব্যবসায়ী হলেন- শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া এলাকার মৃত ওলিয়ার রহমানের মেয়ে বেবি খাতুন, একই এলাকার মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী রুমা বেগম, শংকরপুর এলাকার মৃত পিয়ারু কাজীর ছেলে তারেক কাজী, চৌগাছার বড় কাবিলপুর গ্রামের সোনাই মন্ডলের ছেলে শফি মেম্বর, অভয়নগর উপজেলার গুয়াখোলা গ্রামের আবদুল গণির ছেলে কামরুল ও বুইকারা গ্রামের মৃত হাশেম আলীর মেয়ে লিপি বেগম, বেনাপোল পোর্ট থানার ভবের বেড় গ্রামের কলুপাড়া এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম, বারোপোতা গ্রামের মোনতাজ আলীর ছেলে রিয়াজুল ইসলাম।
চৌগাছার ফুলসারা গ্রামের মৃত আবদুল হকের ছেলে আশরাফুল আলম, শার্শার কোটা পশ্চিমপাড়ার শের আলী দফাদারের ছেলে আনোয়ার হোসেন আনা, চৌগাছার বড়কাবিলপুর গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে ইসরাইল হোসেন নুনু, শার্শার কাশিপুর-গোপীনাথপুর গ্রামের মৃত জয়নালের ছেলে আশাদুল ইসলাম আশা, বেনাপোল পোর্টথানার নারায়ণপুর গ্রামের মৃত কেরামত মল্লিকের ছেলে বাদশা মল্লিক ও রঘুনাথপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে জাহাঙ্গীর। গত এক বছরেও ধরা পড়েনি শীর্ষক মাদক ব্যবসায়ীরা। শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা তৎপর থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নাগালে পায়নি।
সর্বশেষ গত তিনদিনে যশোর সদর ও অভয়নগরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সাতজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলো- ২১ মে ভোরে যশোরে চৌগাছা উপজেলার বড় আন্দুলিয়া গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩৫), শার্শা উপজেলার মহিষাখোলা গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে মুক্তাজুর রহমান (৩০) ও শার্শার টেংরা উত্তরপাড়া জামতলা এলাকার আবদুর রহমান গাজীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম গাজী (৪৭), ২০ মে ভোরে যশোরে শহরের শংকরপুর এলাকার সোহরাব হোসেনের ছেলে ডালিম হোসেন ও ১৯ মে ভোরে অভয়নগরে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অভয়নগর উপজেলার চার নম্বর মডেল ওয়ার্ড এলাকার আব্দুল বারেক শেখের ছেলে হাবিবুর রহমান ওরফে হাবি শেখ (৩৮), নাদের আলী মোড়লের ছেলে আবুল কালাম (৪৭) ও সাত্তার কাশারির ছেলে মিলন কাশারি (৪০) নিহত হন।
নিহতদের প্রত্যেকেই এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। যদিও নিহতের পরিবারের সদস্যদের দাবি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তাদের তুলে নিয়ে ক্রসফায়ার দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে কোতায়ালি থানার ওসি একেএম আজমল হুদা বলেন, পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা পলাতক রয়েছে। মাদক বিরোধী অভিযানে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে তৎপর আছে পুলিশ।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দিন শিকদার বলেন, পুরস্কার ঘোষিত বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীকে ধরা হয়েছিল। তবে এই মুহূর্তে তাদের নাম বলতে পারছি না। সূত্র : পরিবর্তন.কম
আপনার মতামত লিখুন :