সাঈদা মুনীর: উইন্ডসর প্রাসাদে প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মের্কেলকে স্বামী-স্ত্রী বলে ঘোষণা করলেন যাজক। শনিবার (১৯মে) রানী এলিজাবেথ আর ৬০০ অতিথির সামনে আংটি বদল করে নতুন জীবন শুরুর ঘোষণা দেন তারা।
বিবিসি জানিয়েছে, ব্রিটিশ ডিজাইনার ক্লারা ওয়েইট কেলারের ডিজাইন করা পোশাক পরে সেন্ট জর্জেস গির্জায়প্রিন্স হ্যারির সামনে হাজির হন মেগান। মেগানের শ্বশুর প্রিন্স চার্লস তার হাত ধরে তাকে বিয়ের মঞ্চ পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যান। মেগান তার শপথে স্বামীর প্রতি আজীবন ‘অনুগত’ শব্দটি বাদ দিয়েছেন। আর প্রিন্স হ্যারি রাজকীয় ঐতিহ্য ভেঙ্গে বিয়ের আংটি পরেছিলেন।
গণমাধ্যমের ‘হট টপিক’ এই রাজকীয় বিয়ে। মেগান-হ্যারির বিয়ের নানা খবরের ফাঁকে ফাঁকেই উঠে আসছিল হ্যারির প্রয়াত মা প্রিন্সেস ডায়ানার নাম। ৭১তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে রাজকীয় এই বিয়ে নিয়ে কিছু বলতে বললে ব্রিটিশ মডেল নাওমি ক্যাম্পবেল স্মরণ করলেন ডায়ানাকে। তিনি বলেন, ‘আমি জানি, এ সময় প্রিন্সেস ডায়ানা থাকলে খুব খুশি হতেন। কারণ তার ছেলে যাকে বিয়ে করতে চেয়েছেন, তাকেই বিয়ে করছেন। এছাড়া মেগানকেও তার খুব পছন্দ হতো বলে আমার মনে হয়।’ নাওমির এ মন্তব্যের পেছনে অবশ্য ছোট ইতিহাস আছে।
জানা গেছে, ২০১৬ সাল থেকেই টিচুয়ে প্রেম করছেন হ্যারি ও মেগান। ২০১৭ সালের নভেম্বরে গোপনে তাদের বাগদান হয়। ওই মাসের মাঝামাঝি রাজপরিবার তাদের বাগদানের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। প্রিন্স হ্যারির বাবা প্রিন্স চার্লস বাগদানের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলেন, তিনি তার সন্তানের বিয়ের খবর সবাইকে জানাতে পেরে আনন্দিত। কিন্তু প্রিন্স ও তার পরিবার মেগানকে নিয়ে খুশি হলেও প্রাসাদের বাইরের অনেকে মেগানকে রাজবধূ হিসেবে এখনও মেনে নিতে পারছিলেন না।
মেগান-হ্যারির বাগদানের পরপরই ব্রিটিশ পত্রিকা ‘ডেইলি মেইল’ হবু রাজবধূর পারিবারিক ঐতিহ্যকে বোঝাতে তাদের একটি প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখে ‘ফ্রম স্লেভস টু রয়্যালিটি’, অর্থাৎ দাসত্ব থেকে রাজত্বে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, মেগানের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন তুলাশ্রমিক। সেখান থেকে আজ রাজপরিবারের অংশ হতে চলেছেন তারা।
প্রসঙ্গত, রাজপরিবারের নানা প্রথার বিরুদ্ধে গিয়ে গণমানুষের হতে চেয়েছিলেন প্রিন্সেস ডায়ানা। রাজকুমারী হলেও জাতপাত মানেননি কখনও। তার মতো মানুষ মেগানের বর্ণ নিয়ে কখনোই মাথা ঘামাতেন না, এটা নিশ্চিত। বরং রাজপরিবারের আমেরিকান বধূ মেগানের গায়ে কোনও সমালোচনার আঁচও লাগতে দিতেন না। আর এ কারণেই মেগানকে বউ হিসেবে পেয়ে ডায়ানার খুশি হওয়ার প্রসঙ্গটি তোলেন নাওমি।
নাওমি আরও বলেন, মেগান আর হ্যারির বিয়ে পুরো বিশ্বে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।
সূত্র: বিবিসি
আপনার মতামত লিখুন :