ইসমাঈল হুসাইন ইমু : স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন আশি বছরের এক বৃদ্ধা ও তার পরিবার। এসময় তিনি ও তার সন্তানদের প্রাণহানি, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো এবং বাড়ি দখলের আশঙ্কাও প্রকাশ করেন।
সোমবার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন নারায়ণগঞ্জের ৮৬১, বন্দর উপজেলার বন্দর লেজার্স আসাবিক এলাকার বাসিন্দা হাসিনা বেগম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, তার ছোট ছেলে মো. শওকত মোল্লা ২০ বছর যাবৎ সিঙ্গাপুর প্রবাসী। ২০০৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তার সঙ্গে বন্দর থানার দেওয়ানবাড়ি এলাকার মাসুম দেওয়ানের মেয়ে মাসুমা নাজনীনের বিয়ে হয়। ২০১০ সালে পুত্রবধু মাসুমার মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তণ লক্ষ্য করা যায়।বিষয়টি মাসুমার মাকে জানানো হলে উল্টো শওকতকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। মাসুমার খালু স্থানীয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ২২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুলতান আহাম্মদ। তার সহযোগিতায় মাসুমার আত্মীয় মো. জিন্নাহ, খালাতভাই শুভসহ আত্মীয়রা হাসিনার মারধর করার ভয় দেখায়।
হাসিনা বেগম আরও বলেন, নিরাপত্তা জনিত কারনে বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে গেলে মাসুম ও তার খালু ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান বাঁধা দেয়। তারা বলে দেশে কোন আইন আছে নাকি। মাসুমা যা বলে তাই আইন। তোমরা ওর কথার বাইরে যেতে পারবে না। সুলতান বিভিন্ন সময়ে অকথ্য গালিগালাজ করে এবং হুমকি দেয়। এই অবস্থায় শওকত মারাত্মক হতাশাগ্রস্ত হয়ে ২০১৭ সালের ২ অক্টোবর দেশে এসে নাজনীনকে তালাক দেয়। তালাকের দুই মাস পর মাসুমা বৃদ্ধা হাসিনা, তার তিন ছেলে, দুই নাতনি, মেয়ের জামাইসহ ৮ জনকে আসামী করে একটি মামলা করে। তালাক দেয়ার পর মাসুমা, তার বাবা মাসুম দেওয়ান, মা তাসলিমা, তার খালা রোকসানা, খালু সুলতান আহাম্মদ, নেওয়াজ দেওয়ানসহ কতিপয় ব্যক্তির উপস্থিতিতে শওকতের বাড়িতে গিয়ে ভাড়াটিয়াদেরকে মারধর করে উচ্ছেদ কর দেয়। বাড়ি থেকে আসবাবপত্র, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে। তারা বাড়িতে নিজেদের পছন্দমতো ভাড়াটিয়া এনে রাখে। ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে জোরপূর্বক ভাড়া আদায় করে নেয়।
হাসিনা আরও বলেন, তার ছেলের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী নাজনীন, তার খালু সুলতানসহ তার প্রভাবশালী আত্মীয়রা আমাদের বাড়িঘরে হামলা ও অবৈধ দখলের চেষ্টা করছে। ছেলে মেয়েকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে দিয়ে আমার ছেলের মালিকানধীন তিনটি বাড়ি (গঙ্গাকুল বন্দরে তিন তলা ভবনসহ ৪ শতাংশের বাড়ি, একরামপুরে ৯টি সেমিপাকাঘরসহ ৪ শতাংশের বাড়ি ও দক্ষিণ কৃষ্ণপুরে ৭টি সেমিপাকা ঘরসহ সাড়ে ৩ শতাংশের বাড়ি) দোকানপাট, ঘরসবকিছু দখল করে নেয়ার আশংকা করেন তিনি। মাসুমার আত্মীয়রা তিনটি বাড়ি লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, শওকত বিদেশে থাকার সময় সরল বিশ্বাসে তার আয়ের বড় একটি অংশ তার শ্বশুর মাসুম দেওয়ানের একাউন্টে পাঠায়। ওই টাকার হিসাব চাইলে তাকে নারী নির্যাতন মামলা দেয়ার হুমকি দেয়। দোকানটি তারা ছেড়ে দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করে। সন্ত্রাসী বাহিনীল হুমকির মুখে শওকতের ভাই সেলিম মোল্লা প্রাণে বাঁচার তাগিদে বন্দর থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি করেন। একই সঙ্গে মাসুমা ও তার আত্মীয়দের অত্যাচার নির্যাতনের বিয়টি জেলা পুলিশ সুপার ও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজিকে দেয়া হয়। হাসিনা তার ছেলে, মেয়ে ও পবিারবকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, র্যাবের ডিজি, ঢাকার ডিআইজি ও নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের সদয় দৃষ্টি কামনা করেন।
আপনার মতামত লিখুন :