শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২১ মে, ২০১৮, ০৭:১৭ সকাল
আপডেট : ২১ মে, ২০১৮, ০৭:১৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘আদনান আমার অবাধ্য ছেলে, এতো নষ্ট হবে ভাবিনি’

ডেস্ক রিপোর্ট  : স্কুলছাত্রী তাসপিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি আদনান মির্জাকে নিজের অবাধ্য সন্তান বলে মন্তব্য করেছেন তার বাবা ইস্কান্দার মির্জা। তিনি বলেন, ‘সে এতো নষ্ট হয়ে যাবে আামি ভাবিনি। সে রাজনৈতিক বড় ভাইয়ের নোংরা রাজনীতির শিকার।’

তাসপিয়ার লাশ উদ্ধারের মাত্র চার ঘণ্টা পরই পুলিশের হাতে আটক হন বিদেশ ফেরত ইস্কান্দার মির্জার বড় ছেলে আদনান মির্জা। এরপর পতেঙ্গা থানা হাজত ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে চার দিন কাটিয়ে এখন গাজীপুর কিশোর সংশোধনাগারে তার অবস্থান।

আগামী ৩১ মে আদনানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। তবে এর আগেই শুরু হয়েছে আদনানের বাবা ইস্কান্দার মির্জার নানামুখী তৎপরতা। ইতোমধ্যে তিনি চট্টগ্রামের অভিজ্ঞ বেশ কয়েকজন আইনজীবী ঠিক করেছেন আদালতে রিমান্ড শুনানির বিরোধিতা করার জন্য।

এর আগেও আদনানকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে প্রায় ১৫ আইনজীবীর বিরোধিতায় আদালতের কাছে বিমুখ হয় পুলিশ। সেবার গাজীপুর কিশোর সংশোধনাগারে তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেই ক্ষান্ত থাকতে হয়েছে পুলিশকে। তবে প্রেমের শুরু থেকে এক মাসের উৎসবে মিলিত হওয়ার সময়কার মুখরোচক গল্প ছাড়া তার কাছ থেকে আর কিছুই জানতে পারেনি পুলিশ।

এদিকে, মামলার মূল ছয় আসামির মধ্যে বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশের ভূমিকাও রহস্যজনক। ময়নাতদন্তের ১৮ দিনেও আসেনি ঢাকার মহাখালী থেকে ভিসেরা ও সিআইডি প্রতিবেদন। ফলে অন্ধকার গলিতে অজানা পথে হাঁটছে তাসপিয়া হত্যা মামলার তদন্ত।

ইস্কান্দার মির্জার কাছে আদনানের বিষয়ে কোনো কিছু জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদনান আমার অবাধ্য ছেলে। বন্ধুদের সাথে মিশে অবাধ্য হয়ে গেছে আমার। ছেলেটি এতো নষ্ট হয়ে যাবে আামি ভাবিনি। তার বন্ধু সোহেলের সাথে মেলামেশার কারণেই আজকে আদনানকে কারাগারে যেতে হয়েছে। এছাড়া সে রাজনৈতিক বড় ভাইয়ের নোংরা রাজনীতির শিকার।

ইস্কান্দার মির্জা বলেন, তাসপিয়া নিখোঁজের দিন আদনানকে বাসায় বন্দি করে রেখেছিল তাসপিয়ার বাবা-চাচারা। তাদের থেকে আদনানকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে এক রাজনৈতিক বড় ভাই। এতো ঘটনা হয়ে যাওয়ার পরও আমাকে কিছুই জানানো হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, আমি আদনানকে টেলিফোন করি, তবে আদনান আমাকে জানায় গাড়ি নষ্ট হয়েছে, ঠিক করা হচ্ছে তাই সময় লাগছে। পর দিন দেখি আদনান পুলিশের হাতে গ্রেফতার।

ইস্কান্দার মির্জা বলেন, আদনান আমার ছেলে হলেও তাকে নিয়ন্ত্রণ করছে অন্য কেউ। ভুল পথে পা দিয়েই আজ তাকে বিপদে পড়তে হলো তাকে ।

আদনানের বাবা ইস্কান্দার মির্জার স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি সৌদি প্রবাসী। সেখানে মক্কায় পারিবারিক দোকান আর্টিফিশিয়াল জুয়েলারির দেখাশোনা করতেন। ২০১৬ সালে বিদেশ থেকে একেবারেই দেশে ফিরে আসেন। সেই থেকে নগরীর পশ্চিম খুলশী জালালাবাদ হাউজিং সোসাইটির নিজস্ব ভবন রয়েল পার্কে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।

তাসপিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিনের দাবি, তাসপিয়াকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ২ মে সকালে তাসপিয়ার লাশ উদ্ধারের পর পরই আদনানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পরই বিভিন্ন মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে মামলাটি ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লেগেছেন ইস্কান্দার মর্জিা।

মোহাম্মদ আমিন বলেন, এক আসামি ধরেই ক্ষান্ত কেন পুলিশ? আরও বাকি ৫ আসামি রয়েছে। ওরা কোথায়? পুলিশ কি কিছুই জানে না! পুলিশ চাইলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সবাইকে গ্রেফতার করে মূল রহস্য উদঘাটন করতে পারে। কিন্তু গ্রেফতার করছে না।

তাসপিয়া হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নগরীর পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন বলেন, আদনানের বাবা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছেন ছেলেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য। তাসপিয়া হত্যায় তার সংশ্লিষ্টতায় ইতোমধ্যে তার কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। আরো কিছু জানার জন্য রিমান্ডের আবেদন করেছি।

এসআই মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ভিকটিম তাসপিয়ার পরনে থাকা পোশাকগুলো ডিএনএ ম্যাচ (রাসায়নিক পরীক্ষা) করানোর জন্য ১৪ মে (রোববার) আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত সিআইডি ল্যাবে পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন। পরে তা পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২ মে স্থানীয়রা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে একটি লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ সৈকত এলাকার ১৮ নম্বর ব্রিজের উত্তর পাশে পাথরের ওপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকা অজ্ঞাত লাশটি উদ্ধার করে। পরে স্বজনরা লাশটি তাসপিয়ার বলে শনাক্ত করেন।

সুরতহাল রিপের্টে মরদেহের এক চোখ উপড়ে ফেলা, অপর চোখ নষ্ট করে দেয়া ছাড়াও নাক-মুখ থেঁতলানো, পিঠ, বুক এবং নিতম্বে নির্যাতনের ছাপ পেয়েছে পুলিশ। তার বুকের মাঝেও নখের দাগ রয়েছে।

এর আগে গত ১ মে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ ছিল স্কুলছাত্রী তাসপিয়া আমিন।

এ ঘটনায় ৩ মে তাসপিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিন পতেঙ্গা থানায় তাসপিয়ার বন্ধু আদনান মির্জাকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আদনান মির্জা মামলার আসামি ফিরোজের পরিচালিত ‘রিচ কিডস’ নামের গ্যাংস্টারের (এডমিন) প্রধান। আর বাকি চার আসামি সেই গ্যাংস্টারের সদস্য- শওকত মিরাজ, আসিফ মিজান, ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম ও সোহায়েল প্রকাশ সোহেল।তাসপিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিন আসামিদের বিরুদ্ধে তার মেয়েকে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনেছেন। পরিবর্তন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়