শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ২১ মে, ২০১৮, ০৪:৪৭ সকাল
আপডেট : ২১ মে, ২০১৮, ০৪:৪৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জাহাঙ্গীরকে নিয়ে সেলফি আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল!

সাইদুর রহমান : খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিজয়ের পর এবার গাজীপুরের নির্বাচনেও মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বিজয় সুনিশ্চিত করতে চায় আওয়ামী লীগ। এজন্য দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে শরিকদলসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে একযোগে নির্বাচনী মাঠে নামতে চাচ্ছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

এ ব্যাপারে হাইকমান্ডের নির্দেশে রোববার আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দলের প্রায় ডজন খানেক কেন্দ্রীয় নেতা কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঘরোয়া বৈঠক করেছেন। বৈঠকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রতীক নৌকার বিজয়কে সুনিশ্চিত করতে ও গাজীপুরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন সাংগঠনিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে গাজীপুর মহানগর এলাকার তিনজন সংসদ সদস্য এবং জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে এ ঘরোয়া বৈঠক নিয়ে বিএনপিসহ অন্য দলের প্রতিদ্বন্দ্বী অপর প্রার্থীদের ভাবিয়ে তুলছে। এ নিয়ে এলাকায় নানা জল্পনা কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, রোববার গাজীপুরে টঙ্গীর নোয়াগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেলের বাসভবনে ঘরোয়াভাবে ওই সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, ফারুক খান এমপি, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, ডা. দিপু মনি এমপি ও জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী এমপি, জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মো. মুহিবুল হাসান নওফেল ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান এবং সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বৈঠকস্থলের আশেপাশে উপস্থিত থাকলেও তাদেরকে সভাস্থলে প্রবেশ করতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। বৈঠকে মেয়র পদে জাহাঙ্গীর আলমের বিজয়কে সুনিশ্চিত করতে ও গাজীপুরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন সাংগঠনিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা এবং সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে না নিয়ে দলীয় মেয়র প্রার্থীর গণসংযোগের বিষয়টিও স্থান পায়। এ সময় নেতৃবৃন্দ বিষয়গুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য মেয়র প্রার্থীকে পরামর্শ দেন।

গাজীপুর-২ আসনের সাংসদ আলহাজ মো. জাহিদ আহসান রাসেল জানান, রোববার দুপুরে তাঁর টঙ্গীর বাসভবনে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুসারে আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকার বিজয়কে সুনিশ্চিত করতে ও গাজীপুরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন সাংগঠনিক কৌশল নিয়ে এই ঘরোয়া বৈঠকে আলোচনা করা হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা স্থায়ী এ বৈঠকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও মনিটরিংয়ের জন্য দলীয় কার্যালয়ে একটি অস্থায়ী অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়।

ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান জানান, টঙ্গীতে দলের স্থানীয় সংসদ সদস্যের বাসভবনের ওই ঘরোয়া বৈঠকে গাজীপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ছাড়া অন্য কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তিনি জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও সাংগঠনিক বিভিন্ন দিক ও কৌশল নিয়ে বৈঠকে আলোকপাত করা হয়।

হাসান সরকারের দাবি, বৈঠক আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল

এদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট মেয়র প্রার্থী (ধানের শীষ প্রতীক) হাসান উদ্দিন সরকার আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আবারো আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত নয়া তফসিল অনুযায়ী বর্তমানে কোনো প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে কারোর নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সুযোগ নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও তাদের দলীয় প্রার্থী সেই আচরণবিধির কোনো তোয়াক্কা না করে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যেই নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এসব ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালার ২২ নম্বর বিধি অনুযায়ী কোনো মন্ত্রী বা এমপি বা সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তি কোনো প্রার্থীর পক্ষে কোনো ধরনের প্রচারণা চালাতে পারেন না। কিন্তু সেই আচরণবিধিরও কোনো তোয়াক্কা করছে না আওয়ামী লীগ। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী এলাকায় মন্ত্রী-এমপিদের গোপন বৈঠক আচরণবিধি লঙ্ঘন বলেও তিনি দাবি করেন।

হাসান উদ্দিন সরকার রোববার বিকেলে কাশিমপুরে একটি জানাজায় শরিক হন। এছাড়া তিনি টঙ্গীর নিজ বাসভবনেই দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নির্বাচনী ঘরোয়া আলোচনা করেন।

আগামী ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে মোট সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে ছয়জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনীত এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। তবে মেয়র পদে মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সমর্থিত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম (নৌকা) ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের (ধানের শীষ) মধ্যে। এছাড়াও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন প্রার্থী এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনে একটি ওয়ার্ডে সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে একজন প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

-এনটিভি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়