লিহান লিমা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে করা পারমাণবিক চুক্তি প্রত্যাহার করে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশটির ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। যার প্রভাব পড়েছে ইরান-আফগানিস্তান দুই প্রতিবেশী দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কে। আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক প্রকল্পে চীনের সাহায্যের বিষয়টি এখন দোদুল্যমান হয়ে পড়েছে।
ইরানের চবাহার বন্দর আফগানিস্তানকে পাকিস্তান নির্ভর বাণিজ্য থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে। এই বন্দরের মাধ্যমে আয় করা লাখ লাখ ডলারের বাণিজ্য আফগানিস্তানের আর্থিক উন্নতি ছাড়াও কাবুলকে বৈদেশিক অনুদান ও অবৈধ আফিম বাণিজ্যের ওপর নির্ভরতা কমাতে উৎসাহ যুগিয়েছে। অবৈধ এই পণ্যটি তালেবানের প্রধান আর্থিক উৎস।
কিন্তু ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত তেহরানের বাণিজ্যসহ চবাহার বন্দরের সঙ্গে জড়িত দেশগুলোকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। এক জ্যেষ্ঠ ভারতীয় কূটনৈতিক বলেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত চবাহার বন্দর ব্যবহারবিধি নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবাচ্ছে। এটি এমন একটি রুট যা ভারত-ইরান-আফগানিস্তান, ত্রিদেশিয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন আনতে পারে কিন্তু এখন সব কিছুই অনির্দিষ্ট হয়ে পড়েছে।
২০১৬ সালে শুরু হ্ওয়া ভারত-ইরান-আফগানিস্তান ত্রিদেশিয় বাণিজ্যিক কার্যক্রম ইতোমধ্যেই ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। তবে চবাহার বন্দর ব্যবহার করে অতিশীঘ্রই ভারত সরকারের আফগানিস্তানকে দান করা গমের একটি চালান এসে পৌঁছবে। এর পাশাপাশি আফগানিস্তান থেকেও কিছু শুকনো ফলের চালান এই বন্দর ব্যবহার করে ভারতে রপ্তানি হওয়ার কথা রয়েছে। এই সমস্ত বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হলে চবাহার বন্দরে ব্যস্ততা বৃদ্ধি পাবে ।
এছাড়া বন্দরের উন্নয়নে ভারতের সঙ্গে সঙ্গে চীন ও পাকিস্তানকেও যুক্ত করতে চাইছে ইরান। তবে ইতোমধ্যে ত্রিদেশিয় এই সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পও ঝুলে আছে। দুইটি চীনা কোম্পানি এবং একটি ফিনিশ গ্রুপ কোন রকম কার্যক্রম শুরুর আগে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে স্পষ্টতার অপেক্ষায় আছে।
অন্যদিকে আফগান ব্যবসায়ীরা বিকল্প পথ হিসেবে করাচী বন্দর ব্যবহারের আশা করছে। এর আগে গত বছর ৫০ দিনের বিতর্কিত অবস্থা কাটিয়ে চবাহারের সঙ্গে আফগান সংযোগ দেশটির জন্য ভারত ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতার পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং জাতিসংঘ ও মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাবেক পরামর্শক বার্নেট রুবিন বলেন, চবাহার আফগান অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে আরো বেশি করে সংযুক্ত হওয়ার জন্য ভারতের একমাত্র পথ ছিল। রুবিন জানান, মার্কিন ইরান নীতি আফগানিস্তানের জন্য পুরোপুরি ধ্বংসাত্মক।
আপনার মতামত লিখুন :