শিরোনাম
◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ গাজীপুরের টঙ্গি বাজারে আলুর গুদামে আগুন ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ দুই এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপদাহ আরো তীব্র হতে পারে  ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২০ মে, ২০১৮, ০৬:৪২ সকাল
আপডেট : ২০ মে, ২০১৮, ০৬:৪২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

৪৪ বছরে ১৩ হাজার ৩৭২ কোটি ‘কালো’ টাকা সাদা করা হয়েছে

সোহেল রহমান: দেশে কালো টাকার পরিমাণ কত এর কোন সঠিক ও হাল নাগাদ পরিসংখ্যান নেই। অর্থনীতিবিদের মতে, প্রতিবছর দেশের অর্থনীতিতে ৭০ হাজার কোটি কালো টাকা যুক্ত হচ্ছে।

বেশ আগে একটি বিদেশী সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে কালো টাকার পরিমাণ জিডিপি’র ৩৭ শতাংশ। পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক হিসাব মতে, দেশে কালো টাকার পরিমাণ জিডিপি’র ৪২ শতাংশ থেকে ৮২ শতাংশ। তবে কালো টাকার কোন পরিসংখ্যান না থাকলেও স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি সরকারের আমলেই কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। যদিও এ প্রক্রিয়ায় খুব বেশি সাড়া মেলেনি।

অর্থ বিভাগের এক সূত্রমতে, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত গত ৪৪ বছরে ১৩ হাজার ৩৭২ কোটি ‘কালো’ টাকা সাদা করা হয়েছে। এর বিপরীতে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ১ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা।

তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২-৭৫ সাল পর্যন্ত ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা, ১৯৭৬-৮০ সাল পর্যন্ত ৫০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, ১৯৮১-৯০ সাল পর্যন্ত ৪৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, ১৯৯১-৯৬ সাল পর্যন্ত ১৫০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, ১৯৯৭-২০০০ সাল পর্যন্ত ৯৫০ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত ৮২৭ কোটি ৭৪ লাখ, ২০০৭-০৮ সাল পর্যন্ত ৯ হাজার ৬৮২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, ২০০৯-১৩ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা, ২০১৩-১৬ সাল পর্যন্ত ৮৫৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা সাদা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এক সময় ব্যাংকিং খাতে কালো টাকা জমা রাখার জন্য ‘বিয়ারা সার্টিফিকেট অব ডিপোজিট’ (বিসিডি) নামে এক ধরনের সঞ্চয়ী হিসাব চালু ছিল। এই একাউন্টে টাকা রাখতে আমানতকারীদের নাম-ঠিকানার কোনো প্রয়োজন হতো না। কেবল একটি নম্বরের মাধ্যমে টাকা জমা রাখা এবং মুনাফাসহ আসল টাকা তোলা যেতো। কিন্তু ২০০২ সালে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে ব্যাংকিং খাতে কালো টাকা রাখার আর কোনো সুযোগ নেই। কারণ এখন ব্যাংকে কোনো একাউন্ট খুলতে গেলে বা টাকা জমা রাখতে গেলে টাকার উৎস সম্পর্কে ব্যাংককে অবহিত করতে হয়।

গত ২০১২-১৩ অর্থবছরে জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করার স্থায়ী বিধান তৈরি করা হয়েছে। আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ (ই) ধারা অনুযায়ী, অতীতের যে কোনো বছরের আয় গোপন করা হয়ে থাকলে তা প্রদর্শন করা যাবে। যে বছরে ওই আয় করা হয়েছিল, সেই বছরের বিদ্যমান আয়ের করহার প্রযোজ্য হবে। এর সঙ্গে যোগ করা হবে প্রদত্ত করের ওপর ১০ শতাংশ হারে জরিমানা। সংযোজিত নতুন ধারায় পুরোনো একাধিক বছরের কালোটাকা সাদা করারও সুযোগ রয়েছে। এজন্য বার্ষিক আয়কর বিবরণীর সঙ্গে পৃথক ফরমে নাম, কোন্ খাতের আয় ও পরিমাণ এবং কর ও জরিমানার পরিমাণ ঘোষণা করতে হবে।

তবে তিনটি ক্ষেত্রে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ পাওয়া যাবে না।

প্রথমত- কোনো করদাতার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট করবর্ষের আয় গোপনের অভিযোগে নোটিশ করা হলে বা পুনঃ মামলা উন্মোচন করা হলে ; দ্বিতীয়ত- কোনো করদাতার ব্যাংক হিসাব তল্লাশির জন্য চিঠি দেওয়া হলে এবং তৃতীয়ত- করদাতা নামে আয় গোপনের অভিযোগে কোনো মামলা চলমান থাকলে।

এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মতে, ‘কালো’ টাকা বলে কিছু নেই। যেটা আছে, সেটা হচ্ছে ‘অপ্রদর্শিত আয়’। আর ‘অপ্রদর্শিত আয়’ বলতে করের আওতায় আনা হয়নি, কিন্তু বৈধভাবে অর্জন করা হয়েছে এমন অর্থের কথাই বলা হচ্ছে। অবৈধভাবে (যেমন কালোবাজারি, চোরাচালান, ঘুষ-দুর্নীতি ইত্যাদি) অর্জিত আয় এর আওতায় পড়বে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়