ডেস্ক রিপোর্ট : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি না এসে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতার ফাঁদ যেন তৈরি না করতে পারে এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সচেতন থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপি না এলেও অন্য দলগুলো আগামী নির্বাচনে আসবে এবং আগামী নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে বলে জানান তিনি।
শনিবার গাজীপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। দুপুরে চন্দ্রায় সড়ক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করা নিয়ে আয়োজিত এক সমন্বিত সভায় বক্তব্য দেন তিনি।
আন্দোলনে থাকা বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন করে। এতে ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। দশম জাতীয় সংসদে অর্ধেকের বেশি প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়া নিয়ে দেশে-বিদেশে আছে নানা সমালোচনা। এটা নিয়ে সরকারেও আছে অস্বস্তি।
আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের জন্য নির্বাচন বসে থাকবে না, গণতন্ত্র বসে থাকবে না। ৫ জানুয়ারিতে নির্বাচন হয়েছে, তারা বয়কট করেছে বলে নির্বাচন বন্ধ থাকেনি। তারা বয়কট করেছে বলে গণতন্ত্র বন্ধ থাকেনি। গণতন্ত্র গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাবে এবং নির্বাচন হবে। নির্বাচনের পর তারা না এলেও সরকার গঠন হবে, পার্লামেন্ট বসবে।’
কাদের বলেন, ‘তবে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফাঁদে ফেলবে সে অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। তাদের সে আশার পুনরাবৃত্তি হবে না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে, বিএনপি এলে আসবে, না এলেও অন্যরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’
খুলনা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের বলব, এসব অযৌক্তিক, অবান্তর অভিযোগ না করে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নিক তারা, সেটা আমরা চাই। তারা যদি নির্বাচনে না আসে, এটা যদি তাদের সিদ্ধান্ত হয় তবে আমাদের কিছু বলার নেই।’
‘যেকোনো মূল্যে রাস্তা সচল রাখতে হবে’
ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করা নিয়ে আয়োজিত সমন্বিত সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, যানজট নিরসন ও ভোগান্তি কমাতে পুলিশ, সড়ক ও জনপথ এবং স্থানীয় প্রশাসন সমন্বিতভাবে কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে দিয়েছেন, রাস্তাকে চলাচল এবং ব্যবহার উপযোগী রাখতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বর্ষাকালে বৃষ্টি হবে তবে বৃষ্টিকে অজুহাত করে রাস্তার মেরামত কাজ সঠিকভাবে হবে না, এটা আমি শুনব না। বৃষ্টি হলে গর্ত হবে, সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো মেরামত করতে হবে। বৃষ্টির সময় যে গর্ত হয়, সেগুলো সঙ্গে সঙ্গে মেরামত করা না হলে গর্ত আরও বড় হবে এবং রাস্তা পাসেবল থাকবে না। আমার কথা হচ্ছে, যেকোনো মূল্যে রাস্তাকে ব্যবহার এবং চলাচল উপযোগী রাখতে হবে। আগামী ৮ তারিখের আগেই শুধু গাজীপুর না সারাদেশের রাস্তা মেরামত করে যেকোনো মূল্যে রাস্তাকে সচল রাখতে হবে।
গার্মেন্টস মালিকদের উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, ঈদের ছুটিটা একটু বিভক্ত করে ভিন্ন ভিন্ন দিনে দেয়া হলে রাস্তার ওপর চাপ কমবে। এতে যানজটের যে তীব্রতা তা সহনীয় মাত্রায় থাকবে। আর ঈদের তিন দিন আগে সড়কে ট্রাক, লরিসহ ভারী যানবাহন চলাচল করবে না। তবে পচনশীল দ্রব্য, ওষুধপত্র এবং গার্মেন্টস মালামাল পরিবহন করা যাবে, এনিয়ে যেন কোনো বিভ্রান্তি না হয়।
এসময় তিনি উপস্থিত বিআরটিএ প্রজেক্টের প্রকল্প কর্মকর্তাকে বর্ষা মওসুমে রাস্তা খোড়াখুড়ি না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এগুলো ছাড়াও বিআরটিএ এর আরও অনেক কাজ রয়েছে।
সভায় মহাসড়ক দিয়ে চলাচল স্বাভাবিক করতে কর্মকর্তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় স্থানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। এছাড়া যানজট নিরসনে গাজীপুরে অতিরিক্ত একশ পুলিশ সদস্য অতিরিক্ত মোতায়েনের সিদ্ধান্তের কথা বলেন তিনি।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সুত্রাপুরে সাসেস এর সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, গাজীপুর,টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক, সড়ক পরিহন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন।
এর আগে মন্ত্রী ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় চারলেনের উন্নীতকরণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। সূত্র : ঢাকটাইমস
আপনার মতামত লিখুন :