মতিনুজ্জামান মিটু : এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ির অতি মুনাফার লোভে উৎপাদন ভাল হলেও ঝুঁকিতে পড়েছে চলতি মৌসুমের আমের বাজার, ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা চাষিদের। রোজার শুরুতে বাড়তি লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ি রাসায়নিকের সাহায্যে অপরিপক্ক আম পাকিয়ে কারওয়ানবাজার, যাত্রাবাড়ি ও মিরপুরসহ ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন বাজারের আড়তে তোলে। খবর পেয়ে র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত একের পর এক অভিযান চালিয়ে কয়েক হাজার মণ আম নষ্ট ও জব্দ করে। এতে আম চাষি মহলে আতংক ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেবে গত ২০১৬-২০১৭ মৌসুমে দেশে এক লাখ ৭৪ হাজার ২০৮ হেক্টর জমির আম গাছে ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৪৩ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। চলতি ২০১৭-১৮ মৌসুমে দেশে আমের উৎপাদন ২২ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট(বারি) এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বাবুল চন্দ্র দাস বলেন, উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কবলে না পড়ায় চলতি মৌসুমে আমের ফলন বিগত বছরের চেয়েও ভাল হবে। তবে পাকানো এবং সরক্ষণের জন্য কেমিকেলের ব্যবহার ঝুঁকির মুখে পড়েছে আম। গত কয়েক দিনে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহারে পাকানোর অভিযোগে ঢাকায় বেশ কিছু আম ধ্বংস করা হয়েছে। আম পাকা শুরু হয়নি। এখন বাজারে যে আম উঠেছে তা অপরিপক্ক। ক্যালসিয়াম কারবাইটসহ বিভিন্ন ধরণের কেমিকেল দিয়ে পাকানো হয়েছে। তবে বতি বা পরিপক্ক আম পাকানোর জন্যেও রাসায়নিকের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গাছ থেকে সাধারণত পাকা আম পাড়া হয়না। বাণিজ্যিক বিবেচনায় কাঁচা আম গাছ থেকে পেড়ে রাসায়নিকের ব্যবহারসহ বিভিন্ন কায়দায় পাকানো হয়। পাকানো ছাড়াও উজ্জ্বল রং ও সংরক্ষণের জন্যে আমে রাসায়নিকের ব্যবহার হয়ে থাকে। অতিমাত্রার রাসায়নিক মানবদেহের ক্ষতি করতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, মৌসুম শুরু না হতেই ঢাকার অভিযানের খবরে আমের বাজারে বিরাজ করতে পারে অনভিপ্রেত অস্থিরতা ও মন্দা দশা। এই অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে কৌশলী ব্যবসায়িরা চাষিদের কাছ থেকে কম দামে আম কিনে বাড়তি ফায়দা তুলতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :