তরিকুল ইসলাম সুমন : পিনাক-৬ লঞ্চডুবির ঘটনায় ৪৯টি মরদেহ উদ্ধার এবং ৬১ জন যাত্রী নিখোঁজ থাকার পরে মেরিন কোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হলেও চলমান মামলাটির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানাগেছে। উচ্চ আদালত কতৃর্ক ১৭/১/১৮ তারিখে স্থাগিতাদেশ দেওয়ার কারণে এর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানাগেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রায় ৪ বছর আগে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ঘাটের কাছে পদ্মায় পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবির ঘটনার মামলার চার্জশিট এখন দেয়া হয়নি। লঞ্চ ডুবিতে ৬১ জন ‘নিখোঁজ’ই থেকে গেলেন। এদের মারা যাওয়া সংক্রান্ত এখনও কোন ‘মৃত্যু সনদ’ দেয়া হয়নি। লাশ মেলেনি বলে নিখোঁজদের পরিবার সরকারের কাছ থেকে কোন ক্ষতিপূরণ পায়নি।
অভিযোগ রয়েছে, মন্ত্রণালয় কর্তক গঠিত স্থায়ী (দুর্ঘটনা তদন্ত সংক্রান্ত) কমিটির তদন্তে ফাঁক ফোকর থাকায়র কারছে এত মানুষ মারা গেলেও এর বিচার পাচ্ছেনা খুতোভোগী পরিবারগুলো।
সূত্র আরো জানায়, মামলায় গ্রেফতার লঞ্চর মালিক আবু বক্কর সিদ্দিক কালু ও তার ছেলে ওমর ফারুক লিমন ওই সময় গ্রেফতারের তিন মাস পর জামিনে মুক্তি পান। অন্য আসামিরা আজও গ্রেফতার হয়নি। দুর্ঘটনা রোধে তদন্ত কমিটির ২৫ সুপারিশের একটিও বাস্তবায়ন হয়নি।
২০১৪ সালের ৩ আগস্ট লঞ্চডুবির ঘটনার পরদিন বিআইডব্লিউটিএ’র পরিবহন পরিদর্শক জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া বাদী হয়ে লৌহজং থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আসামীরা হলেন লঞ্চের মালিক আবু বকর সিদ্দিক কালু মিয়া, মালিকের ছেলে ওমর ফারুক লিমন, লঞ্চের পুরনো মালিক মনিরুজ্জামান খোকন, সারেং (মাস্টার) গোলাম নবী, সুখানী (গ্রিজার) ছবদর হোসেন মোল্লা ও কাওড়কান্দি ঘাটের ইজারাদার আব্দুল হাই শিকদার। ঘটনার পর র্যাব লঞ্চের মালিক কালু মিয়া ও ছেলে লিমনকে গ্রেফতার করলেও তিন মাস তারা জামিনের ছাড়া পেয়ে যান।
লঞ্চ ডুবিতে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় ৪৯টি মরদেহ। এদের মধ্যে ২২ জনের মরদেহ অজ্ঞাত হিসাবে দাফন করা হয়। দাফন হওয়া ২২ জনের মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও, এখন পর্যন্ত তাদের পরিচয় শনাক্ত হয়নি।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানা থেকে জানাযায়, লঞ্চ ডুবির ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষ। উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে চার্জশিট তৈরি রয়েছে।
মেরিণ কোর্ট সূত্র আরো জানায়, ২৫/৪/১৮ তারিখে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ঢাকা থেকে মামলা স্থাগিতাদেশ সংক্রান্ত একটি সার্টিফয়েড কপি এসেছে নৌ আদালতে। সেখানে বলা হয়েছে যতদিন পর্যন্ত না জিআর মামলা নং ১৪৬/২০১৪ এবং পিএস মামলা নং ৪/২০১৪ রিপোর্ট না পাওয়া যায় তমদিন স্থগিত থাকবে। আদেশের পরে চার মাস অতিবাহিত হলেও এখনো রিপোর্ট জমা হয়নি।
নৌ আদালতের আইন কর্মকর্তা পারভীন সুলতানা উল্লেখিত বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সরকারের পক্ষে এই মামলাটি নৌ আদালতে আমিই পরিচালনা করি। তবে আমরা চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা যায় সেজন্য প্রয়োজনীয় কাজ করছি।
আপনার মতামত লিখুন :