শিরোনাম
◈ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কারিকুলাম যুগোপযোগী করার তাগিদ রাষ্ট্রপতির ◈ ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনা, সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন ◈ সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে: মির্জা ফখরুল ◈ বাংলাদেশের রাজনীতির অবনতি দুঃখজনক: পিটার হাস ◈ সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বাড়লো ১০ টাকা  ◈ নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের আহবান শিল্পমন্ত্রীর  ◈ প্রচণ্ড গরম থেকেই ঘটতে পারে মানবদেহের নানা রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি ◈ অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি  ◈ ইসরায়েল পাল্টা হামলা করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান: উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ মিয়ানমারের আরও ১৫ সেনা সদস্য বিজিবির আশ্রয়ে

প্রকাশিত : ১৯ মে, ২০১৮, ০৭:০৮ সকাল
আপডেট : ১৯ মে, ২০১৮, ০৭:০৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রথমবারের মতো গবাদি পশুর বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন

বিল্লাল হোসেন, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) : গবাদি পশুর পাকস্থলীর বর্জ্য ও রক্ত সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সার হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি বায়োগ্যাস উৎপাদনসহ মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহারের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। গবাদি পশুর পাকস্থলীর বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনে প্রথমবারের মত সফল হয়েছেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের চেয়ারম্যান এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্ম পাওয়ার এন্ড মেশিনারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশেদ আল মামুন।

গবেষণালব্ধ ফলাফল থেকে দেখা যায় প্রতি কেজি মুরগির বর্জ্য থেকে ২৭.২০ মি.লি, প্রতি কেজি গরুর বর্জ্য থেকে ২.৫ মি.লি প্রতি কেজি ছাগলের বর্জ্য থেকে ৩৯.০০ মি.লি এবং গরু, ছাগল ও মুরগির সমন্বিত বর্জ্য থেকে ৭৪.১০ মি.লি বায়োগ্যাস বা মিথেন পাওয়া গেছে।

উন্নত দেশের মত বাংলাদেশেও রযেছে প্রচুর গরু এবং হাঁস মুরগির খামার। ইসলামিক ও উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশে রয়েছে অনেক কসাইখানা ও পোল্ট্রির দোকান। যেখানে প্রতি দিন হাজার হাজার গরু, ছাগল, হাঁস ও মুরগি জবাই করা হয়। কিন্তু সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় এসব জবাইকৃত পশুর পাকস্থলীর বর্জ্য এবং রক্ত বেশির ভাগই ফেলা হয় নদী নালা বা খোলা জায়গায়। যা পরিবেশ দূষণ করে এমনকি এটা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। কারণ এই বর্জ্য পঁচে প্রচুর পরিমানে মিথেন গ্যাস নির্গত হয় যা গ্রীণ হা্উজ গ্যাস হিসেবে কার্বন ডাই অক্সাইড এর চেয়ে ২৫ গুন বেশি ক্ষতিকর ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশে বছরে গড়ে প্রতি গরু থেকে ৬.৭৭ কেজি মিথেন, প্রতি মহিষ থেকে ৫.২৪ কেজি মিথেন, প্রতি ছাগল/ভেড়া থেকে ০.২০৩ কেজি মিথেন এবং প্রতি হাঁস/মুরগি থেকে ০.০২৪ কেজি মিথেন নির্গত হয় বলে গবেষণায় দেখা গেছে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানী হিসেবে বায়োগ্যাস উন্নত বিশ্বে এখন বহুল পরিমানে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্জ্য ভেদে ৬০-৬৫% মিথেন গ্যাস পাওয়া যায় বায়োগ্যাস থেকে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে জবাইকৃত পশুর বর্জ্যরে পরিমান ছিল ২.২০ বিলিয়ন কেজির মত যার প্রায় পুরোটাই অব্যবহৃত থাকে। অপর এক জরীপে দেখা যায় ২০১৫ সালে প্রায় ৩০.২১ মিলিয়ন গরু ও মহিষ, ২৫.৬৯ মিলিয়ন ছাগল ও ভেড়া এবং ১৬০.৭০ মিলিয়ন পোল্ট্রি রয়েছে যা থেকে প্রায় ১০ বিলিয়ন কেজির মত বর্জ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হতো। যদি এর ৫০% বর্জ্যও নবায়নযোগ্য জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা যায় তবে তা বিদ্যুৎ ও জ্বালানীতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

এ প্রসঙ্গে গবেষক ড. মুহাম্মদ রাশেদ আল মামুন জানান, প্রতি ১৫ কেজি পাকস্থলীর বর্জ্য থেকে প্রায় ১ ঘনমিটার বায়োগ্যাস উৎপাদন সম্ভব। তিনি বলেন, বর্জ্য থেকে সার উৎপাদনের পাশাপাশি পিলেট আকারে মাছের খাবার হিসেবেও ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বৃহৎ পরিসরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হলে বাংলাদেশে জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, ড. মুহাম্মদ রাশেদ আল মামুন ২০১৬ সালে জাপানের কুমামোতু বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডভান্স টেকনোলজির উপর পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। এছাড়া গবেষণায় সাফল্যের জন্য একই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট পদকসহ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ প্রকাশনা পুরষ্কার লাভ করেন। গত বছর জলবায়ু ব্যবস্থাপনা বিষয়ক গবেষণার জন্য শ্রেষ্ঠ গবেষক হিসেবে ‘কিংডম অব সৌদি এরাবিয়া’ আন্তর্জাতিক পদক অর্জন করেন। তিনি গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের ভাদগাতী গ্রামের মুহাম্মদ বাছেদ ও মাহ্ফুজা বেগম দম্পতির সন্তান। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তিনি কালীগঞ্জ আর.আর.এন পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি এবং কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাস করেন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়